ফুরিয়ে আসছে গোলাবারুদ, ড্রোনেই ভরসা ইউক্রেনের
সংখ্যার দিক দিয়ে ইউক্রেনের তুলনায় রাশিয়ার সেনাবাহিনী অনেক এগিয়ে। এ ক্ষেত্রে দুই পক্ষের ব্যবধান কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে ড্রোন। এ ছাড়া, ইউক্রেনের গোলাবারুদের মজুতও কমে আসছে। তাই আগামীতে ড্রোনেই ভরসা রাখতে হতে পারে দেশটিকে।
আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
সহকারী সেনাপ্রধান ভাদিম সুখারেভস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর এমনটাই বলেছেন ইউক্রেনের সেনাপ্রধান ওলেকসান্দর সিরস্কি।
টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করে তিনি বলেন, 'মনুষ্যবিহীন সিস্টেমের (ড্রোন) উন্নয়ন আমার জন্য প্রাধান্যের বিষয়। আমরা সংখ্যাগত দিক দিয়ে এগিয়ে থাকা এই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সুবিধা আদায়ের জন্য নতুন নতুন সমাধান খুঁজছি।'
ইউক্রেনের হাতে থাকা প্রথাগত অস্ত্র, গোলাবারুদ ও কামানের গোলার মজুত ফুরিয়ে আসছে। যার ফলে, ড্রোন ওপর নির্ভর করা ছাড়া আপাতত কিয়েভের হাতে তেমন কোনো বিকল্প নেই । সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এতে প্রযুক্তিগত সুবিধাও পেতে পারে ইউক্রেন।
সাম্প্রতিক সময়ে, উভয় পক্ষ ড্রোনের ওপর নির্ভরতা বাড়িয়েছে। যার ফলে, যুদ্ধক্ষেত্রে একে অপরের বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলার পরিবর্তে এখন এক পক্ষ অপর পক্ষের সামরিক, জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে গোলাবারুদ ও সেনার সংখ্যার দিক দিয়ে রাশিয়ার চেয়ে অনেক পিছিয়ে। যার ফলে, মস্কো যুদ্ধক্ষেত্রে চাপ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
রোববার আরও ছয় বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন জানান, ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে মস্কোর বাহিনী এগিয়ে আছে এবং তিনি তার সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখে এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে আগ্রহী।
ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনীতে সংস্কার করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি শুধু ড্রোনের ওপর নজর দিতে সামরিক বাহিনীর আলাদা একটি বিভাগ তৈরি করেন এবং এর দায়ভার দেন সুখারেভস্কিকে। এই বিভাগটি নতুন ড্রোন তৈরি ও সেনাদের এর ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেবে।
তবে রাশিয়াও বসে নেই। রুশ ড্রোন শিল্পও এগিয়ে চলে দুর্বার গতিতে।
গত কয়েক মাসে ইউক্রেন আকারে ছোট, আরও বেশি মারাত্মক ও দ্রুত চলতে সক্ষম ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়ার বেশ কিছু তেল পরিশোধনাগারে হামলা চালিয়েছে। যার ফলে, বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে রাশিয়ার তেল উৎপাদন সক্ষমতার প্রায় সাত শতাংশ ধ্বংস হয়েছে।
এ ছাড়া, ক্রিমিয়ায় ইউক্রেন আকাশ ও নৌ-ড্রোন ব্যবহার করে কৃষ্ণ সাগরে মোতায়েন করা রুশ জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় কম-বেশি সাফল্যও পেয়েছে কিয়েভ। এই প্রেক্ষাপটে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহান্তে ভবিষ্যৎ হামলা থেকে এই নৌযানগুলোকে সুরক্ষিত রাখার জন্য বিশেষ প্রতিরক্ষা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।
দুই বছরেরও বেশি সময় আগে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এই যুদ্ধে উভয় পক্ষের হাজারো মানুষ নিহত হয়েছেন এবং লাখো ইউক্রেনীয় নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
Comments