দেশীয় উৎপাদন আরও কমছে, শিগগির গ্যাস সংকট কাটছে না

দেশীয় উৎপাদন আরও কমছে, শিগগির গ্যাস সংকট কাটছে না
বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র | ফাইল ছবি

সরকারের পক্ষ থেকে রমজান মাস ও সেচ মৌসুমে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হলেও শিগগিরই গ্যাস সংকট কাটছে না।

দুটি এফএসআরইউয়ের (ভাসমান টার্মিনাল) মধ্যে একটির রক্ষণাবেক্ষণ চলছে, মার্চের প্রথম সপ্তাহে যার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে এপ্রিলের আগে রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শেষ হচ্ছে না।

পাশাপাশি, দেশীয় গ্যাসের উৎপাদনও কমেছে। ফলে গ্যাসের সংকট চলছে আবাসিক, শিল্প-কারখানা, সার ও বিদ্যুৎ খাতে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল বুধবার বলেছেন, ৩০ মার্চের আগে সামিট পরিচালিত এফএসআরইউটির কার্যক্রম শুরুর সম্ভাবনা নেই।

গ্যাস ও জ্বালানি সরবরাহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের গ্যাস সরবরাহের ৩০ শতাংশ আমদানি করি। এফএসআরইউ না থাকায় আমাদের গ্যাসের ১০ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া আমাদের স্থানীয় গ্যাস উৎপাদনও কমে যাচ্ছে।'

দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানা থেকে স্থানীয় গ্যাসের ৫০ শতাংশের বেশি উৎপাদন করে শেভরন। গ্যাসক্ষেত্রটির ২৬টি কূপের উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক এক হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে দৈনিক এক হাজার থেকে এক হাজার ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।

অথচ, ২০২২ সালে যখন গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দেয়, তখন সক্ষমতার চেয়েও বেশি উৎপাদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে, সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা আজিজ খান এক ফেসবুক পোস্টে গতকাল লিখেছেন, 'সিঙ্গাপুরের সিট্রিয়াম বেনয় ইয়ার্ডে সামিটের প্রথম এফএসআরইউর ড্রাই ডকিং প্রক্রিয়া দেখে আমরা আনন্দিত। এক লাখ ৩৬ হাজার ঘনমিটার ধারণ-ক্ষমতা এবং ৫০০ এমএমসিএফডি রিগ্যাসিফিকেশন ক্ষমতাসহ এই এফএসআরইউকে মেরামত করা হচ্ছে এবং একেবারে নতুন অবস্থায় পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে। এপ্রিলের মধ্যে এটি মহেশখালীতে পৌঁছাবে।'

গতকাল তিন হাজার ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে মোট গ্যাস সরবরাহ ছিল দুই হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাস সংকটের কারণে ছয়টি সার কারখানার মধ্যে তিনটি বন্ধ ছিল। বিদ্যুৎ খাতে গ্যাসের এক হাজার ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছে ৮৮০ মিলিয়ন ঘনফুট।

ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৫০০ মেগাওয়াটের মতো ঘাটতি ছিল।

রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা গ্যাসের সংকটে সেহরি রান্না করতে পারছেন না। ইফতারের আগেও গ্যাসের চাপ থাকছে না চুলায়।

খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা সাদেকুন নাহার দিলরুবা বলেন, 'গ্যাস সংকট জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনের বেলায় গ্যাসের চাপ খুব কম থাকে। রমজানের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন রাত ১টার পর গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক হয়। আবার ভোর ৪টার আগেই কমে যায়।'

তিনি বলেন, 'প্রতি মাসে গ্যাসের জন্য এক হাজার ৮০ টাকা বিল দিচ্ছি কিন্তু সেহরি ও ইফতার রান্না করতে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে।'

দিলরুবার মতো যারা গ্যাসের স্বল্পচাপ পাচ্ছেন, তাদের বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলপিজি ব্যবহার করতে বলছেন প্রতিমন্ত্রী।

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন Gas crisis till April at least

Comments

The Daily Star  | English

Admin getting even heavier at the top

After the interim government took over, the number of officials in the upper echelon of the civil administration has become over three times the posts.

7h ago