পশ্চিমকে পুতিনের হুশিয়ারি: রাশিয়া পারমাণবিক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত

রাশিয়ার সোচিতে আয়োজিত বিশ্ব তারুণ্য উৎসবে অংশ নিচ্ছে ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: রয়টার্স (৬ মার্চ, ২০২৪)
রাশিয়ার সোচিতে আয়োজিত বিশ্ব তারুণ্য উৎসবে অংশ নিচ্ছে ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: রয়টার্স (৬ মার্চ, ২০২৪)

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমকে হুশিয়ারি দিয়ে জানান, দেশটি কারিগরি দিক দিয়ে পারমাণবিক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

পুতিন আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনে সেনা পাঠায়, তাহলে তিনি ধরে নেবেন যুদ্ধের মাত্রা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।

১৫-১৭ মার্চ রাশিয়ায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে দেওয়া বক্তব্যে পুতিন জানান, এ মুহূর্তে পারমাণবিক যুদ্ধ নিয়ে 'তাড়াহুড়া' করার কিছু নেই এবং তিনি মনে করেন না ইউক্রেনে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন আছে।

এই নির্বাচনে জয়লাভ করলে আরও অন্তত ছয় বছর ক্ষমতায় থাকবেন পুতিন।

রাশিয়া পারমাণবিক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত কী না, এ প্রশ্নের জবাবে রোসিয়া ওয়ান টিভি ও রিয়া সংবাদসংস্থাকে পুতিন (৭১) বলেন, 'সামরিক ও কারিগরি দিক দিয়ে, অবশ্যই আমরা প্রস্তুত।'

রাশিয়ার সারমাত আন্ত:মহাদেশীয় ব্যালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্র । ফাইল ছবি: রয়টার্স
রাশিয়ার সারমাত আন্ত:মহাদেশীয় ব্যালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্র । ফাইল ছবি: রয়টার্স

পুতিন মত প্রকাশ করেন, যুক্তরাষ্ট্র খুব ভালো করেই জানে যে তারা যদি রুশ ভূখণ্ড বা ইউক্রেনে মার্কিন সেনা মোতায়েন করে, তাহলে রাশিয়া এ বিষয়টিকে 'হস্তক্ষেপ' হিসেবে বিবেচনা করবে।

'(যুক্তরাষ্ট্রে) রুশ-মার্কিন সম্পর্ক ও কৌশল নিয়ে যথেষ্ট পরিমাণ বিশেষজ্ঞ রয়েছে', যোগ করেন পুতিন। 

পুতিন আরও বলেন, 'সুতরাং, আমার মনে হয় না চলমান ঘটনাপ্রবাহ আমাদেরকে দ্রুত সেদিকে (পারমাণবিক যুদ্ধ) ঠেলে দিচ্ছে। তবে আমরা প্রস্তুত আছি।'

বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর ফলে ১৯৬২ সালের কিউবান মিসাইল সংকটের পর পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কে সবচেয়ে বড় আকারের ফাটল ধরেছে।

পুতিন বেশ কয়েকবার সতর্ক করেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো সেনা পাঠালে তা পারমাণবিক যুদ্ধ শুরুর উসকানি হিসেবে বিবেচিত হবে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুতিনের নির্দেশে দশ হাজারেরও বেশি রুশ সেনা ইউক্রেনে ঢুকে পড়লে এই যুদ্ধ শুরু হয়।

পশ্চিমা নেতারা রাশিয়াকে পরাজিত করার অঙ্গীকার করলেও, পরাজয় তো দূরে থাক, বরং দুই বছরের যুদ্ধ শেষে রাশিয়ার দখলে ইউক্রেনের ২০ শতাংশ ভূখণ্ড চলে গেছে।

পুতিন আবারও জানান, ক্রেমলিনের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে বিশেষ নীতিমালা রয়েছে। এই নীতিমালায় সুস্পষ্টভাবে বলা আছে কোন পরিস্থিতিতে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে।

'অস্ত্র তৈরি করা হয় ব্যবহারের জন্যই', বলেন পুতিন।

তিনি আরও বলেন, 'তবে এ বিষয়ে আমাদের নিজস্ব মূলনীতি রয়েছে।'

একটি সামরিক পাইলট প্রশিক্ষণকেন্দ্র সফর করছেন পুতিন। ফাইল ছবি: রয়টার্স
একটি সামরিক পাইলট প্রশিক্ষণকেন্দ্র সফর করছেন পুতিন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

বিশ্বের ৯০ শতাংশ পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া।

পুতিন জানান, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত।

পুতিন বলেন, 'রাশিয়া, ইউক্রেনের সঙ্গে দরকষাকষির জন্য প্রস্তুত, কিন্তু এ ধরনের আলোচনা হতে হবে বাস্তবতার ভিত্তিতে—মাদকদ্রব্য গ্রহণের পর মনের ইচ্ছা পূরণের জন্য নয়।'

যুক্তরাষ্ট্র যদি পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়, তাহলে রাশিয়াও তা করতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন পুতিন।

'এ মুহূর্তে তা জরুরি নয়—কিন্তু আমরা বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করব। এবং আমি এ ধরনের পরীক্ষার বিষয়টিকে উড়িয়ে দিচ্ছি না', যোগ করেন পুতিন।

সিএনএন শনিবার জানায়, ২০২২ সালে বাইডেন প্রশাসনের উদ্বেগের কারণ ছিল পুতিন হয়তো ইউক্রেনে কৌশলগত বা ছোট পাল্লার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন।

তবে পুতিন জানান, ইউক্রেনে কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন বোধ করেনি রাশিয়া।

'কেন আমরা গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করব? (ইউক্রেনে) এরকম কোনো অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা কখনোই ছিল না', যোগ করেন পুতিন।

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

1h ago