সাংবাদিক বোনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাকের, 'প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করব'

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের মাঠে ক্রিকেটীয় আলাপ ছাপিয়ে যদিও সেখানে ফুটে ওঠে ভাই-বোনের চিরায়ত মধুর সম্পর্ক দিকটি।
ছবি: সংগৃহীত

জাকের আলী অনিক সাক্ষাৎকার দিলেন তার বোন পেশাদার সাংবাদিক শাকিলা ববিকে। এরপর জাকের নিজেই বুম মাইক্রোফোন হাতে প্রশ্নকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। সবশেষে পরম ভালোবাসায় এক অপরকে জড়িয়ে ধরলেন।

শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিসিবির স্বীকৃত পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে যেখানে শাকিলা ও জাকের পরস্পরের প্রশ্নের জবাব দেন। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের মাঠে ক্রিকেটীয় আলাপ ছাপিয়ে যদিও সেখানে ফুটে ওঠে ভাই-বোনের চিরায়ত মধুর সম্পর্ক দিকটি।

ভিডিওর শুরুতেই আয়োজনের নতুনত্বের বিষয়টি সামনে আনেন বিসিবির মিডিয়া বিভাগের সহকারী ম্যানেজার জাহিদ চৌধুরী। এরপর শাকিলার প্রথম প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের ব্যাটার জাকের বলেন, 'অনুভূতিটা অনেক ভালো। সবারই স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলের হয়ে খেলার। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল, জাতীয় দলের হয়ে খেলব, ম্যাচ জেতাব। তো সবকিছু মিলিয়ে ভালো লাগছে।'

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে জাতীয় দলের ড্রেসিং রুমে জাকেরকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের অন্য খেলোয়াড়রা। সেই অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেন তিনি, 'জাতীয় দলের আবহটা আমার খুব ভালো লেগেছে। বিশেষ করে, প্রথম দিনই সবাই আমাকে যেভাবে বরণ করেছে, এই জিনিসটা আমার কাছে খুব স্পেশাল ছিল। আমার কাছে মনে হয়েছে যে, আমি স্পেশাল কেউ।'

গত বছর তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন জাকের। সেগুলো ছিল দ্বিতীয় সারির বাংলাদেশ দলের হয়ে চীনে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে। এই সিরিজ দিয়েই তাই 'আসল' অভিষেক হয়েছে তার। গত সোমবার দেশের মাটিতে প্রথম ম্যাচেই ৩৪ বলে ৬৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। দল হারলেও জাকেরের ঝড়ো পারফরম্যান্স সেদিন কুড়িয়েছিল প্রশংসা। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ভাইয়ের খেলা মাঠে বসে উপভোগ করেছিলেন শাকিলা। পরের ম্যাচ বাংলাদেশের অনায়াস জয়ের দিনে অবশ্য ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি জাকেরকে।

প্রয়াত বাবা দেখে যেতে পারেননি জাকেরের সাফল্য। জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন পূরণের পথে ভূমিকা রাখায় বাবা ও ভাইয়ের পাশাপাশি বোনকে কৃতিত্ব দেন জাকের। সেই সঙ্গে নিজের দায়িত্ব তুলে ধরেন, 'সবারই ভূমিকা ছিল। বাবার ভূমিকা ছিল, ভাইয়ের ভূমিকা ছিল, আপনারও ভূমিকা ছিল। আপনি অনেক কষ্ট করেছেন, আমাকে অনুশীলনে নিয়ে গেছেন। আসলে কারও ভূমিকা ছাড়ার মতো উপায় নাই। সবারই স্বপ্ন ছিল আমাকে এই জায়গাতে দেখার। এখন আমার দায়িত্ব কীভাবে আমি আরও সামনের দিকে এটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, নিজের দেশকে জেতাতে পারি। আমার মনে হয়, কাজটা আরও বেড়েছে। আমি ওই প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করব।'

সাক্ষাৎকার দেওয়া শেষ করে তাকে জাতীয় দলে দেখে শাকিলার কী অনুভূতি হচ্ছে তা জানতে চান জাকের। জবাব আসে, 'এই অনুভূতি আসলেই ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। অনেক যাবতও চেয়েছিলাম, সেই ছোটবেলা থেকেই। এটা অনেক ভালো লাগার মুহূর্ত। আপনিও ভালো বুঝবেন। কারণ আপনি জানেন, আমাদের ইচ্ছা কতটা প্রকট ছিল। প্রেসবক্সে বসে চোখে পানি চলে আসছিল। বারবার মুছছিলাম। বাসার সবাই কান্না করছিল আপনাকে টিভিতে খেলতে দেখে।'

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে চলছে ১-১ ব্যবধানে সমতা। আগামীকাল শনিবার সিরিজ নির্ধারণী লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে দুই দল। ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেলে জাকেরের ব্যাট ফের উত্তাল হয়ে উঠবে, এই প্রত্যাশা থাকবে দেশের ভক্ত-সমর্থকদের।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi-Americans eager to help build new Bangladesh

July uprising and some thoughts of Bangladeshi-Americans

NRBs gathered in New Jersey showed eagerness to assist in the journey of the new Bangladesh forward.

7h ago