কিশোর গ্যাং বন্ধে গোড়া থেকে ধরতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
কিশোর গ্যাং বন্ধে জেলা প্রশাসক ও কমিশনারদের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।
কিশোর গ্যাং প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'যখন ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যাবে, পড়াশোনা করবে, সেই সময় কিশোর গ্যাং; বিশেষ করে কোভিড অতিমারির সময় কিন্তু এই জিনিসটা সব থেকে বেশি সামনে এসেছে। আমার মনে হয়, প্রত্যেকটা এলাকাভিত্তিক ছেলে-মেয়ে যারা শিক্ষাগ্রহণ করবে, তারা কেন এ ধরনের গ্যাং হবে এবং অসামাজিক কাজে বা ছিনতাই, খুন, ডাকাতি, এসবে লিপ্ত হবে। সে বিষয়টা নজরদারি করা একান্তভাবে জরুরি।
'আমি মনে করি, আমাদের কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা একেবারে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত যত স্কুল, কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে সেখানে ছেলে-মেয়েরা যায় কি না, অভিভাবকদের নজর দেওয়া তারা কী কী কাজ করছে। কেউ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক অথবা এই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে যুক্ত হচ্ছে কি না, সেদিকে একটু নজরদারি বাড়াতে হবে। আমার মনে হয়, পরিবারকে একটু সচেতন করতে পারলে এই জিনিসগুলো...শুধু গ্রেপ্তার করে, ধরে লাভ নেই। কারণ গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠালে আবার এর থেকে আরও বেশি; যেগুলো গ্যাং থাকে বা যারা বেশি আইন-শৃঙ্খলার ভঙ্গ করল অথবা খুন করে বা কোনো অপরাধ করে অপরাধী, তাদের সঙ্গে মিশে এরা আরও বেশি খারাপ হয়ে যাবে,' যোগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, 'সেই কারণে গোড়া থেকে আমাদের ধরতে হবে। পরিবার থেকে শুরু করতে হবে বা স্কুল-কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই শুরু করতে হবে। ছেলে-মেয়েরা যেন এই ধরনের পথে কখনো না যেতে পারে।'
এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে যেন শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি থাকে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
অন্য কোনো দেশের সাহায্য ছাড়া পার্বত্য শান্তি চুক্তি করা হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'তারা আমার দেশের নাগরিক। আমি ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর থেকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলাম। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা একটা বিশেষ কমিটি করে দিয়েছিলাম। যার মাধ্যমে ওই অঞ্চলের কী সমস্যা, কেন এই অবস্থার সৃষ্টি হলো; এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৭৬ সালের পর থেকে। সেগুলো জেনে আমরা দীর্ঘ দিন কাজ করেছি। যারা বিক্ষুব্ধ ছিল, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা ১৯৯৬ সালে সরকারে এসেছি, তখন আমরা পার্লামেন্ট কমিটি করেছি। পাশাপাশি আমি নিজে এর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রেখে আমরা একটা শান্তি চুক্তি করতে সক্ষম হয়েছি।'
তিনি বলেন, 'সেখানে যারা অস্ত্রধারী ছিল, এক হাজার ৮০০ অস্ত্রধারী আমার হাতে, প্রকাশ্যে অস্ত্র জমা দিয়েছিল। পৃথিবীর বহু দেশে বহু শান্তি চুক্তি হয়েছে কিন্তু আমাদেরটা ছিল অনন্য ঘটনা। কারণ এ ধরনের ঘটনা খুব কমই ঘটে। পার্বত্য চট্টগ্রামে এখন ব্যাপক উন্নয়নের কাজ চলছে। আর্থ-সামাজিক, অবকাঠামোগত উন্নয়ন আমরা করে যাচ্ছি এবং আমাদের বর্ডার লাইনগুলোতে আগে বর্ডার পোস্ট ছিল না, আমরা নতুন করে বর্ডার পোস্ট তৈরি করা শুরু করে দিয়েছি।
'পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো কিছু কিছু দুর্ঘটনা ঘটে, এই বিষয়ের দিকেও সবাইকে একটু নজর দিতে হবে, সেখানে কোনো রকম যেন অশান্ত পরিবেশ আবার ফিরে না আসে। সেখানে শান্তি-সৌহার্দপূর্ণ পরিস্থিতি যেন বিরাজমান হয়,' যোগ করেন তিনি।
খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী সমন্বিত কৃষির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগ তুলে ধরেন।
এছাড়া, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দেন শেখ হাসিনা।
Comments