হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই বিচার করা হবে: প্রধানমন্ত্রী

হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই বিচার করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার অবশ্যই করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ শনিবার সকালে গণভবনে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই আশ্বাস দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমার সাথে যদি বসতে চায়, তাহলে আমি বসতে রাজি। তারা যদি এখন আসতে চায়, কথা বলতে চায়, আমি তাদের সাথে কথা বলতে চাই। তাদের কথা শুনতে চাই। তাদের দাবি কী কী বাকি আছে, আমি সেটা শুনতে চাই এবং যেটা আমাদের সাধ্য মতো সেটা আমি পূরণ করতে চাই। আমি এই সংঘাত চাই না।'

তিনি আরও বলেন, 'তারা যদি বসতে চায় আমার সঙ্গে এই কোটা আন্দোলনকারীরা, আমি তাদের সাথে বসব, তাদের কথা শুনব, তাদের দাবি-দাওয়া এ পর্যন্ত যা মেনে নিয়েছি, আরও কিছু আছে কি না সেটা হয়তো শুনতে হবে।'

'আপনাদের সামনে আমি বলতে চাচ্ছি, দেশবাসীরও জানা উচিত, আমি কখনোই আমার দরজা বন্ধ করিনি। গণভবনের দরজা খোলা। যখনই এই আন্দোলনকারীরা কথা বলতে চায়, আলোচনা করে সমাধান করতে চায়, আমি তাদের সাথে নিজেই বসতে রাজি,' বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'আমি আবারও বলছি, আন্দোলনকারীরা যদি আলোচনা করতে চায়, আমি এখনো রাজি। যে কোনো সময় তারা আসতে পারে, আলোচনা করতে পারে। দরকার হলে তাদের গার্ডিয়ানদের নিয়েও আসতে পারে।'

তিনি বলেন, 'বিচার বিভাগীয় যে তদন্ত কমিটি আমি করেছিলাম, আমি কিন্তু কারও দাবির অপেক্ষা রাখিনি। কারণ আমি চাই, যারা এর সঙ্গে জড়িত, সে যেই হোক—পুলিশই হোক বা অন্য যে কেউ হোক, যারা অস্ত্রধারী, যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটায়, তাদের সকলের তদন্ত হোক, বিচার হোক।

'এই যে সমস্ত জিনিস জ্বালাও-পোড়াও, সবগুলো, শুধু ঢাকা না, যে কয়টা জায়গায় এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ হয়েছে, সেগুলোর তদন্ত করে যথাযথ বিচার হবে। তার জন্য আমি যে জুডিশিয়াল কমিটি করে দিয়েছিলাম, সেখানে আরও দুইজন জজ নিয়োগ দিয়ে এটাকে তিন সদস্য বিশিষ্ট করে, তাদের কর্মপরিধিটাও বাড়ালাম। সময়টাও বাড়িয়ে দিলাম, যাতে যথাযথভাবে এটার তদন্ত হয়। আমি চাই, এ ধরনের অন্যায় বা হত্যাকাণ্ড যারাই ঘটাক; (হত্যার শিকার ব্যক্তি) তারা তো আমার দেশের নাগরিক—সে পুলিশ হোক, একটা শিশু হোক, একটা মানুষ হোক, সে সন্ত্রাসী হোক, ডাকাত হোক বা ছাত্র হোক, যাই হোক, এ দেশের নাগরিক। এর যথাযথ তদন্ত করে বিচার হবে, আমি সেটাই চাই। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই বিচার করা হবে। আমি এটা স্পষ্ট বলি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত সে যেই হোক, অবশ্যই তাদের বিচার করা হবে। যারা জড়িত, তদন্ত করেই তা বের করা হবে,' বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'যারা অস্ত্রধারী; যেমন রংপুরে একটা ঘটনা ঘটেছে, যে পুলিশ দায়ী, সেই পুলিশকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে এবং তার বিচার হবে। ইতোমধ্যে কিন্তু সেই পুলিশ...রংপুরে যে হত্যাকাণ্ডটা...তাকে আমরা সাসপেন্ড করে দিয়েছি। অ্যারেস্ট যাদের করা হয়েছে, তাদের মধ্যে যারা ছাত্র ছিল, পরীক্ষার্থী, তাদের সবাইকে কিন্তু জামিন দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সাথে সাথে আমি এটাও নির্দেশ দিয়েছি, এর ভেতরে যারা নিরীহ আছে, তাদের সবাইকে এবং ছাত্র যারা—একেবারে খুনের সাথে জড়িত না বা এসব ধ্বংসাত্মক কাজের সাথে জড়িত না, তাদেরকে মুক্তি দেওয়া শুরু করবে। সেটা শুরু হয়ে যাচ্ছে। যারা যারা দোষী, ঠিক তাদেরকে চিহ্নিত করে, তারা থাকবে। বাকিরা যাতে মুক্তি পায় সেই ব্যবস্থাটা কিন্তু আমরা করে দিয়েছি।'

সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এটা ২০০৮ এ আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল যে, আমরা এটা করব। আমরা বহু সময় নিয়ে, অনেক চিন্তা-ভাবনা করে সর্বজনীন পেনশন স্কিমটা চালু করেছি। সেখানে কিন্তু বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জন্য আমরা বিভিন্ন রকমের সুবিধা দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং প্রজাতন্ত্রের সকল বেতনভুক্ত কর্মচারীদের ক্ষেত্রে সর্বজনীন পেনশনে অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা বাতিল করে দিয়েছি। একেবারে বাতিলই করে দিয়েছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

24m ago