২৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরও দ. কোরিয়ায় কম জন্মহারে নতুন রেকর্ড

প্রতীকী ছবি | রয়টার্স

দম্পতিদের অধিক সন্তান নিতে উৎসাহিত করতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করেও কম জন্মহারে নতুন রেকর্ড করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।

গত বুধবার প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশটিতে ২০২৩ সালে জন্মহার আরও আট শতাংশ কমে শূন্য দশমিক ৭২-এ দাঁড়িয়েছে।

এ নিয়ে টানা চারবার দক্ষিণ কোরিয়ার মোট জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

একজন নারী কত সংখ্যক সন্তান নিতে চান, জন্মহার সেই বিষয়টি নির্দেশ করে। দক্ষিণ কোরিয়ার ৫১ মিলিয়ন জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখতে এ হার দুই দশমিক এক হওয়া উচিত।

২০১৮ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়াই দ্য অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) একমাত্র সদস্য রাষ্ট্র, যাদের জন্মহার হার এক শতাংশের নিচে। এমনকি দেশটিতে নারীদের প্রথম সন্তান জন্মদানের গড় বয়স ৩৩ দশমিক ছয় বছর, যা ওইসিডি সদস্যদের মধ্যে সর্বোচ্চ।

যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন অনুসারে, এশিয়ার পঞ্চম-বৃহৎ অর্থনীতির দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মহারের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২১০০ সাল মধ্যে জনসংখ্যা প্রায় অর্ধেক হয়ে ২৬ দশমিক আট মিলিয়নে নেমে আসতে পারে।

দেশটির জনসংখ্যা শুমারি বিভাগের প্রধান লিম ইয়ং-ইল বলেন, '২০২৩ সালে নবজাতকের সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৩০ হাজার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৯ হাজার ২০০ কম, হ্রাস পেয়েছে সাত দশমিক সাত শতাংশ।'

২০০৬ সাল থেকে দম্পতিদের অধিক সন্তান ধারণে উৎসাহিত করতে নগদ ভর্তুকি, বেবিসিটিং পরিষেবা ও বন্ধ্যত্ব চিকিৎসা সহায়তাসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ২৭০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার।

প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের নেতৃত্বাধীন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রশাসন কম জন্মহারের রেকর্ডটিকে উল্টে দিতে বিষয়টিকে জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে নেওয়ার কথা জানিয়েছে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ডিসেম্বরে 'অনন্য ব্যবস্থা' নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

কিন্তু আর্থিক এবং অন্যান্য প্রলোভনও দম্পতিদের বোঝাতে ব্যর্থ হচ্ছে, যারা শিশু লালন-পালন ও সম্পত্তির আকাশ ছোঁয়া ব্যয়, ভালো বেতনের চাকরির অভাব এবং দেশের গলাকাটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে বড় পরিবার গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন।

এ ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক কারণকেও দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। নারীদের ঘর-বাহির দুটোই সামলাতে হয় বলে তাদের মধ্যে সন্তান জন্মদানে অনাগ্রহ বাড়ছে।

'জাতীয় বিলুপ্তির' শঙ্কা কমানোর আশায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোও এপ্রিলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পাবলিক হাউসিং এবং আরও সহজ শর্তে ঋণসহ বিভিন্ন পলিসি গ্রহণের ঘোষণা দিচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় বিয়েকে সন্তান জন্মদানের পূর্বশর্ত হিসেবে দেখা হয়। তবে উদ্বেগের বিষয়, সেখানে বিয়ের প্রবণতাও কমেছে। এ ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার ব্যয়কেই প্রধান অন্তরায় হিসেবে ধরা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh lost over Tk 226,000cr for tax evasion: CPD

CPD estimated that around 50 percent of this amount has been lost to corporate tax evasion.

1h ago