জিকের সব পাম্প বন্ধ, বোরো রোপণে সেচ সংকট

ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার করে ধান রোপণে কৃষকদের ব্যয় বাড়বে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ছবি: আনিস মণ্ডল

চলতি বোরো মৌসুমে পানি সংকটে জিকে সেচ প্রকল্পের আওতাধীন কৃষকরা। নষ্ট হয়ে বন্ধ প্রকল্পের তিনটি পাম্পই। এদিকে ক্যানেলের পানির অপেক্ষায় দেরি হচ্ছে চলতি মৌসুমের বোরো রোপণ। কবে নাগাদ পানি পৌঁছাবে মাঠে সে তথ্যও দিতে পারছে না প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) প্রকল্পের পাম্প ইনচার্জ মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, দুইটি পাম্প আগে থেকেই নষ্ট। তৃতীয় পাম্প দিয়ে ৩১ জানুয়ারি ক্যানেলে পানি সরবরাহ শুরু হয়। কারিগরি ত্রুটির মুখে ১৯ ফেব্রুয়ারি ওই পাম্পটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

মিজানুর রহমান বলেন, পাম্পটি সচল করার চেষ্টা চলছে। কবে নাগাদ সেচ কার্যক্রম চালু করা যাবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ বলেন, জিকের পানি আসতে বেশ কিছুদিন সময় লাগতে পারে। আমি ঢাকায় জানিয়েছি। বিভিন্ন মাধ্যমে কৃষকদেরও খবর পৌঁছেছি বোরো ধান রোপণ করার জন্য।

ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার করে ধান রোপণে কৃষকদের ব্যয় বাড়বে বলে জানান হায়াত মাহমুদ। তিনি বলেন, এতে কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। তবে ধান রোপণের কিছুদিন পর পানি এলেও কিছুটা সুফল মিলবে কৃষকদের।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের কৃষক আক্কাস বলেন, প্রতিবছর এই সময়ে আমাদের ধান রোপণ করা হয়ে যায়। ক্যানেলের পানির আশায় অনেক দেরি হয়ে গেল। এখন শুনছি পানি আসবে না। আজকালের মধ্যে বোরিংয়ের পানি দিয়েই জমি পাকানো শুরু করব।

তিনি বলেন, এতে আমাদের ধান চাষের খরচ অনেক বেড়ে যাবে।

জিকে কৃষক সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন বলেন, এ বছর আমরা এখনো পানি পাইনি। কবে পানি নাগাদ পানি পাব তাও জিকের লোকজন বলতে পারছে না। আমরা এখন স্যালো মেশিনের পানি দিয়ে ধান রোপণ করছি।

আলাউদ্দিন বলেন, ভূগর্ভস্থ পানি দিয়ে এক বিঘা জমি চাষ করতে অন্তত ৪০ লিটার তেল লাগবে। এ ছাড়া মেশিন ভাড়াসহ বিঘাতে কমপক্ষে ৬ হাজার টাকা বেশি ব্যয় হবে। এতে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের উৎপাদন ব্যয় অনেক বাড়বে।

কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা ও মাগুরার ১ লাখ ৯৭ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের লক্ষ্যে যাত্রা শুরু জিকে সেচ প্রকল্পের। বর্তমানে প্রকল্পের আওতায় ৯৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব। দুটি মেশিন আগে থেকে নষ্ট থাকায় চলতি বোরো মৌসুমে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার সক্ষমতা ছিল প্রকল্পের। শেষ পাম্পটি নষ্ট হওয়ায় এবার সেই লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হলো না।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুষ্টিয়ার পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, চারটি জেলার সর্বমোট ১৩টি উপজেলায় জিকের সেচ কার্যক্রম বিস্তৃত। প্রকল্পের প্রধান তিনটি খাল, ৪৯টি শাখা খাল ও ৪৪৪টি উপশাখা খাল রয়েছে। প্রধান খালের দৈর্ঘ্য ১৯৩ কিলোমিটার। শাখা খালগুলোর দৈর্ঘ্য ৪৬৭ কিলোমিটার ও উপশাখা খালের দৈর্ঘ্য হাজার কিলোমিটার। ১৯৫১ সালে পরিচালিত প্রাথমিক জরিপের পর ১৯৫৪ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার প্রকল্পটি অনুমোদন করে।

Comments

The Daily Star  | English

Decision on AL’s registration after receiving govt ban order: CEC

The decision to ban was made at a special meeting of the council following three days of demonstrations demanding a ban on the party

29m ago