সাকিবের ঝড়ো ফিফটির পর প্রিটোরিয়াসের তোপে প্লে অফে রংপুর

Shakib Al Hasan & Shak Mahedi Hasan
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

শুরুর সঙ্গে শেষের কী তফাৎ! ক্রিজে গিয়ে পেসারদের বল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন সাকিব আল হাসান। থিতু হয়ে সেই তিনি নাগালের মধ্যে পাওয়া ডেলিভারিগুলো কাজে লাগালেন দারুণভাবে, ডানা মেলে পরে করে ফেললেন ঝড়ো ফিফটি। কার্যকর দুই ঝড়ো ইনিংস এলো শেখ মেহেদী হাসান আর শামীম পাটোয়ারির ব্যাটে। চাপ সামলে বড় পুঁজি গড়া রংপুরকে জবাব দিতে পারল না চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। চ্যালেঞ্জার্সকে শুরুতেই ব্যাকফুটে ঠেলে বড় অবদান প্রোটিয়া পেসার ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের।

শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্বাগতিক দলকে ১৮  রানে হারাল রংপুর। প্রথম দল হিসেবে নিশ্চিত করল বিপিএলের এবারের আসরের প্লে অফ। টুর্নামেন্টের এক পর্যায়ে উপরের দিকে থাকা চট্টগ্রাম এখন বিদায়ের শঙ্কায়।

আগে ব্যাট করে সাকিবের ৩৯ বলে ৬২ রানে ভর করে ১৮৭ রান করে রংপুর। জবাবে ছয়ে নামা রোমারিও শেফার্ডের ৩০ বলে ৬৬ রানে ১৬৯ পর্যন্ত যেতে পারে চট্টগ্রাম। তাদের ইনিংসের শুরুতেই আগুন ঝরানো স্পেলে ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ব্যবধান গড়ে দেন প্রিটোরিয়াস।

বড় রান তাড়ায় শুরু থেকে উইকেট হারিয়ে কখনই ম্যাচে থাকেনি চট্টগ্রাম। অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার জশ ব্রাউন এক চার মেরেই প্রিটোরিয়াসের স্লোয়ারে চমকে তার হাতেই দেন ক্যাচ। সৈকত আলি আগের দিনের মতন বিস্ফোরক ভূমিকা নিতে পারেননি। ডানা মেলা শুরু করার আগে তার স্টাম্পও উড়িয়ে দেন প্রিটোরিয়াস।

তানজিদ হাসান তামিমের দিকে আশা ছিল চট্টগ্রামের। এই তরুণ দলের ভীষণ প্রয়োজনে করেছেন হতাশ। ১৬ বল লাগিয়ে ৩ চারে তিনি থামেন ১৬ রান করে। দলের বিপর্যয়ে পাঁচে নেমে অধিনায়ক শুভাগত হোম কিছুক্ষণ ক্রিজে ছিলেন। ৩ চারে ২১ করার পর ছক্কার চেষ্টায় ক্যাচ তুলে বিদায় নেন তিনি।

টম ব্রুস ওভারপ্রতি ১১ রানের বেশি করে নেওয়ার পরিস্থিতিতে যে কার্যকর নন, সেই ছাপ রেখেছেন নিজের খেলায়। ২৪ বলে ২৪ রান করে তিনিও থামেন ছক্কার চেষ্টায়। বাকি সময়ে অনুমিত হয়ে পড়া ম্যাচে আক্ষেপ বাড়িয়েছেন শেফার্ড। একের পর এক ছক্কায় দেখিয়েছেন এই উইকেটে রানটা তাড়া করার মতই ছিলো। শেষ ২ ওভারে দরকার ছিলো ৫১ রান, সেটা শেষ ওভারে ২৯ রানে নামিয়ে এনেছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত কঠিন সমীকরণ আর মেলানো হয়নি।

টস জিতে ব্যাটিং বেছে রংপুরের ২০ ওভারের ধরন দুই রকম। প্রথম ১০ ওভারে স্রেফ ৬৭ তুলেছিল তারা, পরের ১০ ওভারে নিয়ে নেয় ১২০।  রনি তালুকদারের সৌজন্য জুতসই শুরু অবশ্য মিলেছিলো । আরেক প্রান্তে রেজা হেনড্রিকস ধুঁকছিলেন। উদ্বোধনী জুটি একাই টেনে নেন রনি। পঞ্চম ওভারে শহিদুল ইসলামের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১৯ বলে ২৫ রান করেন ডানহাতি ওপেনার।

পরের ওভারে ধুঁকতে থাকা রেজাকে এলবিডব্লিউ করে ছাঁটেন রোমারিও শেফার্ড। সাকিব এসেই তার বলে বিদায় নিতে পারতেন, যদি স্লিপে থাকত কোন ফিল্ডার। হকচকিয়ে যাওয়া সাকিব সৌভাগ্যের জোরে বাউন্ডারিতে রানের খাতার খোলার পরও বেশ কিছুটা সময় ছিলেন অস্বস্তিতে। বিশেষ করে পেসারদের বল একদম সামলাতে পারছিলেন না তিনি। এক পর্যায়ে তার রান ছিলো ১৪ বলে ১১। তবে সময়ের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেন।

থিতু হয়ে নিজের জোনে বল পেতে থাকেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। ব্র্যান্ডন কিং, নুরুল হাসান সোহান না পারলেও শেখ মেহেদী হাসানকে নিয়ে দলকে মোড় ঘোরানো জুটি এনে দেন তিনি। পঞ্চম উইকেটে ৩৪ বলে ৬৮ রানের জুটিতে দুজনেই ছিলেন উত্তাল।

ওই সময় সাকিব যোগ করেন ১৭ বলে ৩২, মেহেদী ১৭ বলে ৩৪। বিলাল খানের বলে মেহেদী ফেরার পর জিমি নিশামও টেকেননি। ৩২ বলে ফিফটি করে পরে সাকিব ৬২ করে আউট হন বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে। শেষ দিকে শামীম হোসেনের ৯ বলে ১৭ আর হাসান মাহমুদ ২ বলে ৮ করে দলকে নিয়ে যান ১৯০ রানের কাছে। ওই পুঁজিই বেশ যথেষ্ট হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Police, Bida launch special security measures for foreign investors

Held meeting with officials of foreign companies, introduced dedicated emergency contact line

1h ago