কারখানায় হাত হারানো শিশু নাহিদকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

ভৈরবের 'নূর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ' এ কাজ করার সময় তিন বছর আগে দুর্ঘটনায় ডান হাত হারানো শিশুশ্রমিক নিয়ামল হোসেন নাহিদকে (১৪) দুই কিস্তিতে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দিতে ওয়ার্কশপের মালিককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ওয়ার্কশপের মালিক ইয়াকুব হোসেনকে চলতি বছরের এপ্রিল ও ডিসেম্বরে আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের যাত্রাবাড়ী শাখায় তার অ্যাকাউন্টে দুটি পৃথক স্থায়ী আমানতের রশিদের (এফডিআর) মাধ্যমে টাকা জমা দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া, একই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পাস না হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নাহিদকে সাত হাজার টাকা করে দিতে ইয়াকুব হোসেনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও কাজী জিন্নাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, নাহিদ প্রতি মাসে ব্যাংক হিসাব থেকে পড়াশোনার খরচের টাকা তুলতে পারবেন এবং ১০ বছর পর সুদসহ এফডিআর তুলতে পারবেন।

নাহিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে ইতোপূর্বে জারি করা রুলের শুনানি শেষে বেঞ্চ আজ এই রায় দেন।

ইয়াকুব হোসেন ও নাহিদের পরিবারকে প্রতি তিন মাসে হাইকোর্টে কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

আজ রায় ঘোষণার সময় ভুক্তভোগী নাহিদ ও তার বাবা-মা হাইকোর্টের এজলাসে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত রায় ঘোষণার পর আদালত কক্ষের ভেতরে ও বাইরে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

রায় ঘোষণার পর হাইকোর্টের বিচারপতিরা নাহিদকে চকলেট দেন।

নাহিদের বাবা আনোয়ার হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের আড়াইসিধা গ্রামের জুতা ব্যবসায়ী। ২০২০ সালে করোনার সময় তিনি কাজ হারান।

নাহিদ, তার বাবা ও মা মনোয়ারা ভৈরবে ইয়াকুব হোসেনের মালিকানাধীন একটি ওয়ার্কশপে 'নূর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ'-এ কাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে নাহিদের ডান হাত মেশিনে ঢুকে পড়ে এবং সে মারাত্মক দুর্ঘটনাযর শিকার হয়।

অস্ত্রোপচারে তার ডান হাত কেটে ফেলতে হয়।

এ ঘটনায় দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর নাহিদের বাবা তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ওয়ার্কশপের মালিককে কেন নাহিদের হাত হারানোর জন্য তার পরিবারকে ২ কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।

নাহিদের পরিবার অভিযোগ করেছে যে ওয়ার্কশপের মালিক নাহিদকে একটি ড্রিল মেশিনে কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন যার জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটে।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী আনেক আর হক ও বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া এবং ইয়াকুবের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম।

Comments

The Daily Star  | English

At least one woman raped nearly every 9hrs

Marium (not her real name) was only 10 years old when she was subjected to the horrors of sexual violence in 2018..A middle-aged man raped her in the slum she lives in..The child narrated the incident to her grandmother and a group of women, including a community activist..Her

1h ago