শীতের পোশাকে ছাড়, ব্রান্ডের আউটলেটে উপচে পড়া ভিড়

শীতের পোশাকে ছাড়, ব্রান্ডের আউটলেটে উপচে পড়া ভিড়
শীতের পোশাকে ছাড় থাকায় রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমলে দেশীয় পোশাকের আউটলেটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। ছবিটি গতকাল ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের জেন্টল পার্কের আউটলেট থেকে তোলা। ছবি: পলাশ খান

বিদায়ের আগে শেষ সময়ে এসে দেশব্যাপী শীতের দাপট যেন বেড়েছে। কনকনে শীতে কাঁপছে রাজধানীসহ দেশের নানা অঞ্চল। খুব শিগগির প্রকৃতি থেকে বিদায় নেবে শীত। তারপর আগমন হবে ঋতুরাজ বসন্তের। ঠিক এমন সময়ে বিভিন্ন ব্রান্ডের শীতের পোশাকে চলছে ছাড়ের ছড়াছড়ি। আর তাতে এসব ব্রান্ডের আউটলেটে বেড়েছে ক্রেতা সমাগম।

সাধারণত শীতের শেষের দিকে শীতের পোশাক কিনতে আগ্রহ দেখান না ক্রেতারা। কিন্তু এ বছর যেন আগ্রহ বেড়েছে। ব্রান্ডগুলো শীতের পোশাক বিক্রি করতে ১০ শতাংশ থেকে শুরু করে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বিরাট ছাড় দিয়ে ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়িয়েছে।

গতকাল রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের জেন্টল পার্ক থেকে ব্লেজার কিনছিলেন উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সতের হাজার টাকায় চারটি শার্ট, দুটি প্যান্ট ও দুটি ব্লেজার কিনেছি ১৭ হাজার টাকায়। আমি আরও কিছু কিনব।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি এখন যেগুলো কিনছি সেগুলো শুধু এ বছরের জন্য কাজে লাগবে না, আগামী বছরও ব্যবহার করতে পারবে।'

হাসতে হাসতে তিনি বলেন, 'আমি ব্র্যান্ডের পণ্যগুলো মূল দামের প্রায় অর্ধেক দামে কিনতে পেরেছি। আমি এগুলো পরের বছরের শীতের ব্যবহার করতে চাই।'

জেন্টল পার্কের শাখা ব্যবস্থাপক আল আমিন খানের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক। কিন্তু, প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টা করেও তিনি পারেননি। কারণ, সেখানে ছিল উপচে পড়া ভিড়। তাই একসঙ্গে অনেক ক্রেতার সঙ্গে কথা বলতে ও লেনদের করতে হচ্ছিল তাকে। পরে তিনি মাত্র পাঁচ মিনিট সময় দিতে পেরেছিলেন প্রতিবেদককে।

আল আমিন খানে বলেন, 'আমার সব পণ্যে ফ্ল্যাট ৩০ শতাংশ ও কিছু বিশেষ পণ্যে ৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি। তাই সাধারণ শীতের সময়ের তুলনায় আমাদের বিক্রি প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।'

তাদের অনেক শীতকালীন পোশাক এখনো স্টকে আছে বলে জানান তিনি।

একই শপিংমলের নিচতলায় ইয়েলোর একটি আউটলেট ঘুরে দেখা যায়, সেখানে শত শত ক্রেতার ভিড় লেগে আছে। ইয়েলো তাদের শীতের পোশাকে ফ্ল্যাট ৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে।

সেখানে নববর্ষ বা শীতকালীন ছাড় দেওয়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আউটলেটেও একই দৃশ্য দেখা গেছে। কেউ ১ জানুয়ারি থেকে মাসব্যাপী অফার চালু করেছে, আবার কেউ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছাড় দিচ্ছে।

ফ্যাশন ব্রান্ড রিচম্যানের একটি আউটলেটের ম্যানেজার নুরুল ইসলাম জানান, তারা জানুয়ারি মাসের জন্য ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছেন। এতে তারা ক্রেতাদের থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছেন। ফলে, তাদের বিক্রি প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে।

বিভিন্ন ব্র্যান্ড থেকে ছয়টি পোশাকে কিনেছে আলতাফ আহমেদ। এই তরুণ বলেন, 'ছাড়ের কিছু কেনার আনন্দই আলাদা। বলতে গেছে আমি এই ছাড়ের জন্য অপেক্ষা করি।'

আরেক ক্রেতা আলমগীর হোসেন জানান, তিনি ব্র্যান্ডেড পোশাক পরতে পছন্দ করেন। কিন্তু নন-ব্র্যান্ডেড পোশাকের চেয়ে দাম অনেক বেশি হওয়ায় তা কিনতে পারেন না।

তিনি বলেন, 'তাই আমি বিভিন্ন ব্রান্ডের ছাড়ের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে শীত শেষ হয়ে গেলেও কিছু যায় আসে না। আগামী শীতে এগুলো ব্যবহার করব।'

ইনফিনিটির একটি আউটলেটের শাখা ব্যবস্থাপক আবু রায়হান রাইয়ান বলেন, তারা শিশুদের পোশাকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছেন। এতে মৌসুমের শেষের দিকেও শীতের পোশাকের বিক্রি বেড়েছে।

ইজি ফ্যাশনের একটি আউটলেটের ব্যবস্থাপক মো. পারভেজ হোসেন জানান, শীতের পোশাকের মোট মজুতের ৬০ শতাংশ বিক্রি হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, 'এখন আমরা শীতের বাকি পোশাক বিক্রির জন্য ১০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি। ইতোমধ্যে ছাড়ের ৮০ শতাংশ পণ্য বিক্রি হয়ে গেছে।'

অন্যান্য দেশীয় ব্র্যান্ডের মধ্যে সেইলর ৫০ শতাংশ, এমব্রেলা ৫০ শতাংশ, রাইজ ৫০ শতাংশ, এক্সট্যাসি ৩০ শতাংশ, ওয়েস্টিন ৩০ শতাংশ, বেবি শপ ২০ শতাংশ, বিট ৬০ শতাংশ এবং আর্টিসান ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে।

ফ্যাশন প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফ্যাশন উদ্যোক্তা সমিতির ২০১২ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের ফ্যাশন হাউসগুলো সারা বছর প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার পোশাক বিক্রি করে।

Comments

The Daily Star  | English

Gaza civil defence says Israeli forces kill 23

Among the casualties were three children who were killed in an air strike on a home in Jabalia, northern Gaza

1h ago