পাইলট নিয়োগে বোর্ডকে উপেক্ষা বিমানের
২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিমানের ২৬৯তম বোর্ড সভার কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজের জন্য তিন জন ক্যাপ্টেন নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে বোর্ড। তবে বিমান নিয়োগ দিয়েছে আট জনকে।
বিমানের সাবেক সিইও আবু সালেহ মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত বোর্ডে উপস্থাপন করা বিশদ কাগজপত্রেও বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এর জন্য তিন জন স্ট্যান্ডবাই ক্যাপ্টেন নিয়োগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত নথি ও সভার কার্যবিবরণী দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে।
নিয়োগ করা আট ক্যাপ্টেনের মধ্যে দুই জনকে এর আগে বরখাস্ত করেছিল বিমান। তারা হলেন- ইরফানুল হক এবং শাহ নাসিমুল আউয়াল। তারা নির্ধারিত এক বছরের মধ্যেও তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করতে না পারাই ছিল কারণ।
তারা তাদের প্রাথমিক রুট চেকিং সম্পন্ন করতেও ব্যর্থ হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল।
২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিমানের এক নথি অনুযায়ী, নিরাপত্তাজনিত কারণে আরেকজনের প্রশিক্ষণ বন্ধ রাখতে হয়।
বিমান ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১৪ জন পাইলট - ক্যাপ্টেন এবং ফার্স্ট অফিসার নিয়োগ করে। তবে তাদের মধ্যে কেবল পাঁচ জন এক বছর পরে আকাশে উড়তে পেরেছিলেন। বাকিরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারা, জাল কাগজপত্রের জন্য চাকরিচ্যুত হওয়াসহ নানা কারণে পাইলট হতে পারেননি।
গত বছরের ১ মার্চ 'অযোগ্য পাইলট নিয়োগের মাশুল দিচ্ছে বিমান' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ডেইলি স্টার।
পত্রিকাটি দেখতে পায় যে দুজন ফার্স্ট অফিসার তাদের শিক্ষাগত সার্টিফিকেট জাল করেছেন।
এ নিয়ে বিমান নিজেই তদন্ত শুরু করে।
তানভীর আহমেদের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের আগস্টে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ পাইলট নিয়োগে অসঙ্গতির অভিযোগ অনুসন্ধানে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও বিমানের একজন করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সমন্বয়ে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তদন্ত কমিটির সদস্য বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ফ্লাইট সেফটি রেগুলেশনের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মুকীত-উল-আলম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি, তবে বৈঠকের কার্যবিবরণী খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন।
Comments