‘ফ্লাইটে যাত্রীর মৃত্যু’: জরুরি অবতরণ না করে ৯ ঘণ্টা ধরে চললো বিমান

বিমানের ফ্লাইট
ছবি: সংগৃহীত

গত সোমবার সিলেট থেকে লন্ডনগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই অসুস্থ হয়ে মারা যান এক যাত্রী।

পাইলট-ইন-কমান্ড ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই যাত্রীকে মৃত বলে ধরে নেওয়ার পর, পার্সার তার মরদেহটি নিয়ে একটি খালি সিটের সারিতে শুইয়ে দেয়।'

দ্য ডেইলি স্টারের হাতে আসা ফ্লাইট লগ অনুসারে, ব্রিটিশ নাগরিক শুয়াইবুর রহমান চৌধুরী প্রথমে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে মারা যান।

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের ১১ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট পর ফ্লাইটটি হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছায়।

নিয়ম অনুসারে, যখনই ফ্লাইটের কোনো যাত্রীর মেডিকেল জরুরি অবস্থা হয়, তখনই উড়োজাহাজ থেকে মেডিকেল জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে একটি এসওএস পাঠাতে হয় এবং সবচেয়ে নিকটতম বিমানবন্দরে অবতরণের জন্য প্রস্তুত হতে হয়।

বিমান সূত্র জানায়, প্রতিটি বিমানবন্দর মেডিকেল জরুরি অবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকে। এই প্রক্রিয়ায় বিমানবন্দরের নিকটতম হাসপাতালগুলোকে সতর্ক রাখা হয় এবং অ্যাম্বুলেন্স ও প্যারামেডিকদের বিমানবন্দরে প্রস্তুত রাখা হয়।

যাত্রী অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পরও পাইলট কাছের কোনো বিমানবন্দরে অবতরণ কেন করেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'জরুরি অবতরণের উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকে বাঁচানো, জানাজার ব্যবস্থা করা নয়। আমরা যখন জানতে পারলাম, ততক্ষণে তাকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।'

পাইলট জানান, ওই যাত্রীকে মৃত ঘোষণা করার জন্য সেখানে কোনো ডাক্তার ছিল না। ফ্লাইট পার্সারের ওপর নির্ভর করেই শুয়াইবুর রহমান চৌধুরীকে মৃত বলে ধরে নেন তিনি।

ফ্লাইট পার্সার একজন প্রশিক্ষিত মেডিকেল পেশাদার নয়। তাদেরকে শুধুমাত্র প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

ফ্লাইট লগ অনুসারে, ফ্লাইটটি বাংলাদেশ সময় ১২ নভেম্বর প্রায় সোয়া ১০টার দিকে উড্ডয়ন করে। জিএমটি/ইউটিসি  অনুযায়ী সময় তখন সকাল ৪টা ১৬ মিনিট।

লগে বলা হয়েছে, 'আনুমানিক ৬টা ৫৫ ইউটিসিতে কেবিনের প্রধান ফ্লাইট পার্সার আমাকে একজন যাত্রী সম্পর্কে অবহিত করেন, (যিনি) অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং তাকে অক্সিজেন দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে কেবিনের প্রধান ফ্লাইট পার্সার জানান যে ওই যাত্রীকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।'

পার্সার পাইলটকে জানান যে ওই যাত্রীকে সকাল ৭টা ২৫ মিনিট (জিএমটি) নাগাদ মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়।

ফ্লাইট লগ অনুসারে, বিমানটি বিকাল ৪টা ১৬ মিনিটে (জিএমটি) হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

বিমানের লন্ডনে কান্ট্রি হেড ইরতেজা কামাল চৌধুরী বলেন, 'বিমান বিষয়টি নিয়ে এখনো তদন্ত করেনি।'

তিনি বলেন, 'আমরা শুধু জানি যে ফ্লাইটটি একজন মৃত যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছে। হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ফ্লাইটটি অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্ব নেয় এবং সংশ্লিষ্ট সবার সাক্ষাৎকার নেয়। পুলিশ ও চিকিৎসা পেশাদাররা তাদের কাজ করেছেন। আমরা একটি লিখিত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি।'

তিনি জানান, হিথ্রো বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি থেকে যাত্রী নামানোর আগে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেতে তাদের আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য মরদেহটি নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Police grapple with surge in crime

Data from the Police Headquarters presents a grim picture of violent crimes, including murder, mugging, robbery, extortion, and mob violence, in the first six months of 2025.

16h ago