চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ শুরু, এখনও পৌঁছেনি অধিকাংশ বাড়িতে

প্রতীকী ছবি সংগৃহীত

শুক্রবার রাতে মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের কারিগরি ত্রুটি সারানোর পর আজ শনিবার ভোরে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ আবার শুরু হয়।

তবে পাইপলাইনে গ্যাসের চাপ কম থাকায় বন্দরনগরীর বেশিরভাগ এলাকায় এখনো গ্যাস সরবরাহ চালু হয়নি।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) গৌতম চন্দ্র কুন্ডু বলেন, 'শুক্রবার রাতে প্রকৌশলীরা ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের কারিগরি ত্রুটি সমাধান করেছেন এবং তারপরে শনিবার সকালে টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ আবার শুরু হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'তবে গ্যাসের চাপ এখনও প্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি।'

তিনি বলেন, 'ধীরে ধীরে গ্যাসের চাপ বাড়ছে এবং আমরা আশা করছি, আজ দুপুর নাগাদ বাসাবাড়ির চুলায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।'

এদিকে বন্দরনগরীর অধিকাংশ এলাকায় গ্যাস সরবরাহ না আসায় খাবার তৈরিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বাসিন্দারা।

শহরের হেমসেন লেন এলাকার বাসিন্দা সজল দাশ বলেন, 'আমাদের বাসার চুলাতে গ্যাসের সরবরাহ এখনও আসেনি তাই আমাদেরকে রেস্টুরেন্ট থেকে সকালের নাস্তার জন্য খাবার কিনে এনে খেতে হয়েছে।'

নগরীর গোয়াল পাড়া এলাকার বাসিন্দা শ্রাবণ পাল জানান, সকালে তার বাড়ির চুলায় গ্যাস সরবরাহ শুরু হলেও গ্যাসের চাপ খুব কম ছিল যা দিয়ে রান্না করা যাচ্ছে না।

স্থানীয়রা জানায়, নগরীর হালিশহর, টাইগারপাস, খুলশী, আসকার দীঘির পাড়, জামাল খান, আন্দরকিল্লা, রাজা পুকুর লেন, রহমতগঞ্জ, দেওয়ানজী পুকুর পাড় ও জয়নগর এলাকায় গ্যাস সরবরাহ এখনো চালু হয়নি।

সিএনজিচালিত অধিকাংশ যানবাহনে জ্বালানি রিফুয়েলিং করতে না পারায় বন্দর নগরীতে যানবাহন চলাচল অন্যান্য দিনের তুলনায় খুবই কম।

শহরের কদমতলী এলাকায় একটি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মো. মানিক বলেন, 'শুক্রবার সকালে আমি আমার গাড়িটি রিফুয়েলিংয়ের জন্য লাইনে রেখেছিলাম কিন্তু এখনও গ্যাস পাইনি।'

তিনি বলেন, 'শুক্রবার সারাদিন আমার কোনো আয় ছিল না এবং আজও হয়তো আমি রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নামতে পারব না। আমি কীভাবে আমার পরিবারের দৈনন্দিন খরচ জোগাড় করব জানি না।'

পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, প্রায় আড়াই মাসের রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শেষ করে মহেশখালীতে একটি এলএনজি  টার্মিনাল চালু করার মুহূর্তে এতে কারিগরি ত্রুটি ধরা পড়ে, যে কারণে তা চালু করা যায়নি। অন্যদিকে যে টার্মিনালটি থেকে এতদিন গ্যাস সরবরাহ হচ্ছিল, রক্ষাণাবেক্ষণ কাজের জন্য সেটি থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। ফলে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ সারা দেশে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

বর্তমানে মহেশখালীতে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল চালু রয়েছে, যার প্রতিটির ক্ষমতা ৫০০ এমএমসিএফ/ডি।  তাদের একটি পরিচালনা করে দেশীয় কোম্পানি সামিট, অন্যটি পরিচালনা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সেলারেট এনার্জি।

এক্সেলারেট এনার্জি পরিচালিত টার্মিনালটি ১ নভেম্বর থেকে আড়াই মাস রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ছিল এবং তখন থেকে সামিট পরিচালিত টার্মিনালটি থেকে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত ছিল। গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় প্রায় তিন মাস ধরে দুর্ভোগে পড়েছেন বন্দর নগরবাসী।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে এই দুর্ভোগ আরও বহুগুণ বেড়ে যায়।

শুক্রবার রাতে টার্মিনালের কারিগরি ত্রুটি সারানোর পর আজ সকাল থেকে গ্যাস বিতরণ শুরু হলে প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর ধীরে ধীরে নগরীতে গ্যাস সরবরাহ আবার শুরু হয়।

Comments

The Daily Star  | English
Mahdi Amin, adviser to BNP acting chairperson Tarique Rahman

‘BNP’s 31-point charter embodies public will’

Mahdi Amin, adviser to BNP acting chairperson Tarique Rahman, speaks to The Daily Star

10h ago