১৯৯১ সালের পর সংসদে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রাজনৈতিক দল

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

সামরিক স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের পতনের পর দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয় ১৯৯১ সালে। এরপর থেকে গঠিত সংসদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম দলের প্রতিনিধিত্বের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এবারের সংসদ।

৭ জানুয়ারির এই নির্বাচনে মাত্র পাঁচটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন।

দেশের সংসদে সবচেয়ে কম রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব ছিল ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর গঠিত সংসদে। ওই সংসদে কেবলমাত্র বিএনপি ও ফ্রিডম পার্টির সদস্যরা প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে আজ পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে কম রাজনৈতিক দলের সদস্য নিয়ে গঠিত সংসদের উদাহরণ হয়ে রয়েছে।

১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পর গঠিত প্রথম সংসদে মাত্র তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব ছিল। ১৯৮৮ সালের নির্বাচনের পর চারটি রাজনৈতিক দলের সদস্যরা জাতীয় সংসদ গঠন করে এবং ২০০১ সালের নির্বাচনের পর এই সংখ্যা ছিল ছয়।

সংসদ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রশাসন বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক নিজাম আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংসদে অল্প কয়েকটি দলের প্রতিনিধিত্ব গণতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ নয়।'

তিনি বলেন, 'দ্বাদশ জাতীয় সংসদ থেকে দেখা যাচ্ছে যে সংসদে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব কীভাবে কমছে।'

তিনি আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল মূলত আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্বতন্ত্রের মধ্যে। এর পাশাপাশি কিছু আসনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতা হয়েছে।

অধ্যাপক নিজাম মনে করেন, 'এর ফলে সংসদে প্রকৃত বিরোধী দল পাওয়া যাবে না। এতে গণতন্ত্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।'

৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, ২৯৯টি আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে জয় লাভ করেছে। বাকি ৬২টি আসনে জিতেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, স্বতন্ত্র ৬২ জনের মধ্যে অন্তত ৫৮ জন ক্ষমতাসীন দলের নেতা।

তারা আরও জানান, সংসদে আরও বেশি সংখ্যক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অন্যান্য দলের কিছু প্রার্থীকে সমর্থন করতে বলাসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু এসব কৌশল কাজ করেছে বলে মনে হচ্ছে না।

সূত্র জানায়, তৃণমূল বিএনপি, কল্যাণ পার্টি, জাতীয় পার্টি ও জাতীয় পার্টি (জেপি-মঞ্জু) থেকে মনোনীত কয়েকজন প্রার্থী এবং বেশ কয়েকজন সাবেক বিএনপি নেতার বিনা বাধায় সংসদ সদস্য হওয়ার কথা ছিল। অন্যথায় এসব প্রার্থীদের সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ ছিল না।

২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংসদে ছিল নয়টি রাজনৈতিক দল। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সাতটি রাজনৈতিক দলের সদস্য জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে।

Comments

The Daily Star  | English

UN climate talks in limbo

The world's most climate-imperilled nations stormed out of consultations in protest at the deadlocked UN COP29 conference yesterday, as simmering tensions over a hard-fought finance deal erupted into the open

1h ago