সিইবিআরের পূর্বাভাস

২০৩৮ সালের মধ্যে বিশ্বের ২০তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে বাংলাদেশ

সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশের অর্থনীতি, ডলার সংকট, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয়, বাংলাদেশের জিডিপি,
ছবি: সংগৃহীত

লন্ডনভিত্তিক সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের (সিইবিআর) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অব্যাহত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে ২০৩৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২০তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে।

সিইবিআর পূর্বাভাস দিয়েছে, বার্ষিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২০২৩-২৪ এবং ২০২৭-২৮ সালের মধ্যে গড়ে ৬ দশমিক ৮ শতাংশে উন্নীত হবে। অবশ্য পরবর্তী দশকে কমে প্রতি বছর গড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে।

আগামী ১৫ বছরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবিলের (ডাব্লিউইএলটি) র‌্যাঙ্কিংয়ে দ্রুত এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

সিইবিআরের পূর্বাভাস, বাংলাদেশ ২০৩৮ সালের মধ্যে টেবিলে ১৭ ধাপ উপরে উঠে আসবে, বর্তমান অবস্থান ৩৭তম। আগামী বছরের মধ্যে বাংলাদেশ তিন ধাপ এগিয়ে যাবে এবং ২০৩৩ সালের মধ্যে ২৩তম স্থানে উঠে আসবে।

সিইবিআর ১৯২টি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।

২০২৩ সালের হিসাবে, বাংলাদেশের মাথাপিছু ক্রয় ক্ষমতা সমতা (পিপিপি) সমন্বিত জিডিপি ৮ হাজার ৬৭৩ ডলার ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে অনুমান করা হয়েছে।

২০২১-২২ অর্থবছরে অর্থনীতির ৭ দশমিক ১ শতাংশ সম্প্রসারণের পর গত অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশে নেমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে আউটপুট প্রাক-মহামারি স্তরের চেয়ে ২৫ দশমিক ৬ শতাংশের ওপরে দাঁড়িয়েছে।

শিল্প কর্মকাণ্ডের সংকোচনে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমেছে। যার অন্যতম কারণ উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোতে রপ্তানি চাহিদা কমে যাওয়া।

এছাড়া, টাকার অবমূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ বাজারে জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে উত্পাদন এবং পরিবহন ব্যয় অনেক বেড়েছে। এগুলো ভোক্তা মূল্য বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। ফলে, মূল্যস্ফীতি উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

২০২৩ সালে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশে পৌঁছেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যা ২০২১ সাল পর্যন্ত গত দশ বছরে দেখা গড় মূল্যস্ফীতির চেয়ে অনেক বেশি।

মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর মুদ্রানীতি মেনে চলছে এবং পলিসি রেট বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ করেছে।

সিইবিআর বলেছে, গত এক বছরে বাংলাদেশের সামগ্রিক মুদ্রানীতি কাঠামোতে আমূল পরিবর্তন এসেছে, যা আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা থেকে সুদের হার লক্ষ্যমাত্রা কাঠামোতে পরিবর্তিত হয়েছে।

এই পরিবর্তনের পেছনে সমন্বিত বাজার বিনিময় হারের প্রতিশ্রুতি আছে। এর মাধ্যমে ২০০৩ সালের মে মাস থেকে চালু থাকা বিনিময় হার ব্যবস্থা থেকে সরে আসা হয়েছে। এই ব্যবস্থায় রপ্তানি, আমদানি ও প্রবাসীদের জন্য ভিন্ন হার অন্তর্ভুক্ত আছে।

এই নীতিগত পরিবর্তনগুলো বছরের শুরুতে আইএমএফের ঋণ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অংশ।

সিইবিআর বলেছে, সম্প্রতি বিশ্ব অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে দাবি করার বিষয়টি খুবই সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অনিশ্চয়তা সম্ভবত 'নতুন স্বাভাবিক'। তবুও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের স্বল্পমেয়াদী বৈশ্বিক পূর্বাভাস সঠিক হয়েছে, যদিও মাঝারিমেয়াদী পূর্বাভাসগুলোর ক্ষেত্রে কম ছিল।

সিইবিআর আরও বলেছে, মার্কিন অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। তবে তারা কেবল ঋণ নেওয়ার খরচে ও ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা অব্যাহত রেখেছে।

ইউরোজোনের সমস্যাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। ইউরোজোনের অবস্থানটি এ কারণে জটিল যে, এখানকার রাজনৈতিক জোটের স্তর আর্থিক জোটের স্তরের চেয়ে অনেক কম উন্নত।

তবে, চীনের সমস্যাগুলো বিভিন্ন ধরনের বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সিইবিআর বলেছে- ভারত ২০৩২ সালের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হতে চলেছে। এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে 'বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক পরাশক্তি' হয়ে উঠবে।

Comments

The Daily Star  | English
fire at Secretariat

Secretariat fire sabotage or accident still not known: Fire service DG

Muhammad Jahed Kamal, director general of the Fire Service and Civil Defence, today said the cause of the devastating fire at Building No. 7 of the Bangladesh Secretariat still remains unknown

1h ago