সিলেটে তেল-গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে: নসরুল হামিদ

সিলেটে তেল-গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে তেল ও গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

আজ রোববার দুপুরে মন্ত্রণালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

নসরুল হামিদ বলেন, 'সবার জন্য এই বিজয়ের মাসে বিরাট সুখবর। আমাদের সিলেট-১০ (জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট) এলাকায় দুই মাস আগে আমরা ড্রিল শুরু করি। এতে চারটি স্তরে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। স্তরগুলো প্রায় সাড়ে তিন হাজার মিটারের ঊর্ধ্বে। আরও বড় সুখবর হলো প্রথম স্তরে আমরা তেলের সন্ধান পেয়েছি।'

তিনি বলেন, 'সিলেট-১০ নম্বর কূপে দুই হাজার ৫৭৬ মিটার গভীরতা খনন সম্পন্ন করা হয়। এই কূপের চারটি স্তরের গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। মজুতের পরিমাণ ৪৩ থেকে ১০০ বিলিয়ন ঘনফুট।

'দুই হাজার ৪০০ থেকে ৬০ এবং দুই হাজার ৪০০ থেকে ৭৫ মিটারের আরও একটি ভালো গ্যাসের স্তর পাওয়া যায়। এখানে টেস্ট করলে ২৫ থেকে ৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আমরা আশা করছি,' জানান তিনি।

নসরুল হামিদ বলেন, 'দুই হাজার ২৯০ থেকে দুই হাজার ৩১০; এই স্তরে গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। পরবর্তীতের এক হাজার ৩৯৭ থেকে এক হাজার ৪৪৫ মিটার গভীরতায় আরও একটি জোন আবিষ্কৃত হয়। যেখানে গত ৮ ডিসেম্বর টেস্ট করে তেলের উপস্থিতি জানা যায়। প্রাথমিকভাবে এর এপিআই ২৯ দশমিক সাত।

'প্রতি ঘণ্টায় ৩৫ ব্যারল তেলের প্রভাবক পাওয়া যাচ্ছে। এই মুহূর্তে যে প্রেসার আছে, ড্রিল করার সময় ৩৫ ব্যারলের মতো তেল উঠছে এখন। পরীক্ষা সম্পন্ন হলে তেলের মজুত জানা যাবে। এর জন্য আরও চার থেকে পাঁচ মাস সময় লাগবে,' যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'দুই হাজার ৫৪০ এবং দুই হাজার ৫৬০ মিটার গভীরতায় একযোগে উৎপাদন করা হলে আট থেকে ১০ বছর সাসটেইন করবে এই পুরো জায়গাটা। গড় মূল্য দাঁড়াবে আট হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যদি ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে উৎপাদন করা হয়, তাহলে আমরা ১৫ বছরের বেশি এটাকে সাসটেইন করতে পারব।

'এর আগে তেলের উপস্থিতি ১৯৮৬ সালে আমরা পেয়েছিলাম হরিপুরে। সেটা সাসটেইন করেছিল পাঁচ বছর। তখন গ্র্যাভিটি ছিল ২৭। এবার যে তেলের মজুত আমরা পাচ্ছি, সেটা ইতোমধ্যে আমরা পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছি, সিলেটে পরীক্ষা করে পাওয়া গেছে ২৯ দশমিক সাত,' বলেন তিনি।

নসরুল বলেন, 'একটা ভালো খবর গ্যাস এবং তেলের স্তর ভিন্ন ভিন্ন। আগে আমাদের গ্যাসের সঙ্গে কিছু তেল আসতো।'

এর আগে ২০১২-১৩ সালে তেল পাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, পরবর্তীতে সেটি আর হয়নি—এ ব্যাপারে একজন গণমাধ্যমকর্মী প্রশ্ন করলে নসরুল হামিদ বলেন, 'এটা বলতে পারব আমরা আরও চার থেকে পাঁচ মাস পরে। আমাদের মোট মজুত কত হবে। এখানে যেটা হয়েছে, ড্রিল করার সঙ্গে সঙ্গে তেল উঠছে। এ কারণে আমরা ঘোষণাটা দিলাম আগে। বন্ধ রাখার পরে চালু করে আমরা দেখলাম, একই ফ্লোতে তেল উঠছে। আমরা আশাবাদী এখানকার মজুত স্থায়ী হবে।'

এটা তুলতে আমাদের বাপেক্স (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন) বা পেট্রোবাংলা সক্ষম নাকি বাইরে থেকে অন্য কোনো কোম্পানি আনতে হবে জানতে চাইলে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমরা এখানে কনট্রাকটর নিয়োগ করে কাজ করছি। তারা কাজ করবে এবং তেল রিফাইন করে আমরা ব্যবহার করব।'

তেল-গ্যাস পাওয়া যাওয়ায় দামের ওপর প্রভাব পড়বে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'অবশ্যই পড়বে। আমরা আশাবাদী, প্রায় ৪৬টি ড্রিল আমরা শুরু করেছি। আরও ১০০ ড্রিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে পেট্রোবাংলা, আমরা আশাবাদী ৫০০ থেকে ৬০০ এমএমসি গ্যাস প্রতিদিন আমরা আগামী দুই বছরের মাথায় তুলতে পারব।

'আমরা আশাবাদী, যেভাবে চাহিদা বাড়ছে, আমাদের ব্যবহার বাড়বে ছয় হাজার এমএমসি গ্যাস। আমরা আশাবাদী ২০২৭ সালে আমরা গ্যাসে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবো,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
health reform

Priorities for Bangladesh’s health sector

Crucial steps are needed in the health sector for lasting change.

17h ago