সোলার সেচ পাম্পে ৪০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা আছে: নসরুল হামিদ

সোলার সেচ পাম্পে ৪০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা আছে: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

দেশের ১২ লাখ ডিজেলচালিত সেচ পাম্পগুলোকে সোলারে রূপান্তর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

তিনি বলেছেন, 'আমরা ইতোমধ্যে আড়াই শতাধিক সোলার লাগাতে শুরু করেছি। সেগুলো আমরা মডেল হিসেবে দেখছি। এই মডেল যদি সফল হয়, তাহলে আমরা পরিধি বাড়াব।'

সোলার ইরিগেশন নিয়ে সরকারের পরিকল্পনার ব্যাপারে তিনি বলেন, 'সোলার পাম্পের যে খরচ, আমরা হিসাব করে দেখেছি, প্রায় ৪০ শতাংশ টাকা সরকার থেকে না দিলে তা কমার্শিয়ালি ফিজিবল করা সম্ভব হবে না।

'কৃষকের মুশকিল হলো, সোলার করতে গিয়ে যে জায়গাটা তার নষ্ট হবে এবং পাম্প মেরামত করতে তার যে খরচ—এটা তার অনেক বেশি হয়ে যাবে,' বলেন তিনি।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাস ভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

নসরুল বলেন, 'প্রায় দুই হাজার ডিজেলচালিত পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে গেছে। এর বিপরীতে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র এলে আরও উৎপাদন দক্ষতা তৈরি হবে।'

তিনি বলেন, 'আমরা আশাবাদী ২০২৬-২৭ এর মধ্যে আমাদের আরও দুটি ভাসমান টার্মিনাল (ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট বা এফএসআরইউ) আসছে। সেই সময় আমাদের যে প্রকল্পগুলো হাতে আছে সেগুলো শেষ হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা এখন তিন হাজার ৭০০ মেগাওয়াট সোলার প্ল্যান্টের অনুমোদন দিয়ে দিয়েছি। আমি আশাবাদী, অন্তত এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার যদি আসে সিস্টেমে, আমাদের জন্য ভালো হবে। আমরা আরও প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট সোলার নিয়ে কাজ করছি।

'আমরা আশা করছি, আগামী মাসের মধ্যে নেপালের ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নিয়ে আসতে পারব। আমরা পারচেজ কমিটিতে (ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি) পাঠিয়ে দিয়েছি। আমাদের ৪০ মেগাওয়াটের প্রস্তুতি নেওয়া আছে, এটা পাস হয়ে গেলেই নিয়ে আসতে পারব। নেপালের বিদ্যুৎ এটা প্রথম শুরু হলো,' যোগ করেন তিনি।

নসরুল হামিদ আরও বলেন, 'আমাদের উইন্ড (বায়ুবিদ্যুৎ) আমরা ২০০ মেগাওয়াট শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ৬০ মেগাওয়াট আমাদের সিস্টেমে চলে এসেছে।'

তেলের দাম সমন্বয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ধরে নেই, ক্রুড অয়েলের দাম যদি আন্তর্জাতিক বাজারে ৮০ ডলার হয়, আমাদের এখানে কেন ১০০ ডলার? প্রশ্ন থাকে, যেটা আমাদের বিশেষজ্ঞরা বা রাজনীতিবিদরা করেন। আমাদের দেশে কি ৭০ ডলার হবে? ৮০ ডলার ওখানে (আন্তর্জাতিক বাজারে), সেটা আনতে খরচ আছে, সেই খরচটা হিসাব করে নাই। এখানে আমরা রিফাইন করব, সেটাও হিসাব করে না। আমি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিকে দিয়ে ডিস্ট্রিবিউট করব পদ্মা-মেঘনা-যমুনার মাধ্যমে, সেটাও হিসাব করে না। ট্রাকে করে তেল যে পেট্রল পাম্পে পৌঁছব, পেট্রল পাম্প মালিকদের কমিশন দেবো, সেটাও কেউ হিসাব করে না।

'এই চলমান প্রক্রিয়ায় যে অপচয়টা হয়, সেটার একটা হিসাব আছে। সেই হিসাব করে না। এর পরে দাম নির্ধারণ হয়। আমরা ফিনিশ অয়েলও আমদানি করি,' যোগ করেন তিনি।

সাধারণ মানুষের জন্য এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আপনি অনেক দিন ধরে বলে আসছেন ইলেকট্রিক চার্জিং স্টেশন, ইলেকট্রিক ভেহিকলের কথা কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) বলেছে, দেশে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা যাচ্ছে না, সেখানে ইলেকট্রিক ভেহিকল! এ ক্ষেত্রে আপনাদের সমন্বয় আছে কি না জানতে চাইলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'তারা আসলে বোঝে নাই যে, এটার সঙ্গে লোডশেডিংয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। ব্যাটারি চার্জড ভেহিকলের সঙ্গে লোডশেডিংয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। একটি ইলেকট্রিক ট্রেন যখন চলে, সেটা সারাক্ষণ বিদ্যুৎ নেয় না। লোডশেডিং যাওয়ায় কি মেট্রো (মেট্রোরেল) বন্ধ হয়ে গেছে? আমি তো ধরে ধরে সবাইকে জ্ঞান-বুদ্ধি দিতে পারব না যে, ব্যাটারি কীভাবে চার্জ হয়!'

Comments

The Daily Star  | English
Income inequality in Bangladesh

Growth obsession deepened rich-poor divide

Income inequality in Bangladesh has seen a steep rise over the past 12 years till 2022, according to official data, as economists blame a singular focus on growth rather than sorting out income disparities.

16h ago