পড়ালেখায় নতুনত্ব আনবে যে ৫ স্টাডি মেথড

পরীক্ষার আগে সব বন্ধুরাই বলে প্রস্তুতি খারাপ, কিন্তু ফলাফল দিলে দেখা যায় কেবল নিজের দশাই বেহাল। এমন পরিস্থিতিতে আর পড়তে না চাইলে নিজেকে একটু স্মার্ট করুন। নতুন উদ্যমে পড়ালেখার জন্য কয়েকটি পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিন। 
স্টার ফাইল ছবি

পরীক্ষার আগে সব বন্ধুরাই বলে প্রস্তুতি খারাপ, কিন্তু ফলাফল দিলে দেখা যায় কেবল নিজের দশাই বেহাল। এমন পরিস্থিতিতে আর পড়তে না চাইলে নিজেকে একটু স্মার্ট করুন। নতুন উদ্যমে পড়ালেখার জন্য কয়েকটি পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিন। 

স্পেসড রিপিটিশন

হাতে খুব বেশি সময় নেই, কিন্তু বিশাল সিলেবাসের প্রায় পুরোটাই বাকি! এ অবস্থায় কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না? স্পেসড রিপিটিশন পদ্ধতি অনুযায়ী পড়া শুরু করে দিন আজই। 

শুরুতে পুরো সিলেবাসকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিন। তারপর পড়ানো বিষয়গুলোর প্রত্যেকটি টপিক এক দিন করে সময় নিয়ে আয়ত্ত করে ফেলুন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন যা পড়েছেন, সেগুলোর পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করুন নিজে নিজে। এক সপ্তাহ পর একই টপিক পুনরায় পড়ুন। দুই সপ্তাহ পর একই কাজ করুন।
 
এভাবে পড়লে অল্প সময়ে সব পড়ার ঝামেলা পোহানোর চেয়ে প্রথমে বিষয়গুলো আয়ত্ত করে কয়েকবার রিভাইস করলে মুখস্থ না করলেও চলে। ফলে পরীক্ষার আগে রাত জেগে কষ্ট করতে হয় না। অনেকের কাছে স্পেসড রিপিটিশন একটি গেম-চেঞ্জার বটে। 

এসকিউ থ্রি আর মেথড 

পড়ালেখায় অল্প পরিশ্রমে ভালো ফল পেতে সবাই চায়। এ ক্ষেত্রে এসকিউ থ্রি আর পদ্ধতি বেশ এগিয়ে রাখবে বলা যায়। ১৯৪৬ সালে ফ্রান্সিস পি রবিনসন পড়ালেখাকে আরও দক্ষ ও কার্যকরী করার জন্য এটি আবিষ্কার করেন। তার মতে, এই পদ্ধতির জরিপ, প্রশ্ন, পড়া, সারমর্ম বোঝা ও পুন:মূল্যায়ন করা- মোট পাঁচটি ধাপ মেনে চললে যেকোনো কিছুই সহজে আয়ত্ত করা যায়। 

প্রথম ধাপে টপিকগুলোর শিরোনাম, উপ-শিরোনাম, চিত্র বা চার্টের মতো অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো ভালো করে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নোট করুন। দ্বিতীয় ধাপে সেই টপিকের মূল ধারণা কী এবং তা আয়ত্ত করার জন্য আগে কী জানতে হবে সেগুলো নিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন। তৃতীয় ধাপে পুরো টপিক পড়ে প্রশ্নের সমাধান করুন। চতুর্থ ধাপে যা পড়েছেন তা নিজের ভাষায় সংক্ষিপ্ত করে মনে রাখার চেষ্টা করুন, মূল বিষয়বস্তু বুঝে দ্বিতীয় ধাপের যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিন। শেষ ধাপে টপিক কতটুকু আয়ত্ত হয়েছে তা পুনঃমূল্যায়ন করুন। 

মাইন্ড ম্যাপিং

পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা পড়ে কোনো বিষয় বোঝার চেয়ে চিত্রের মাধ্যমে পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে অনেকে। এতে সময়ও কম খরচ হয়। আপনারও যদি তাই মনে হয়, তাহলে মাইন্ড ম্যাপিং হতে পারে পছন্দের উপায়। 

মাইন্ড ম্যাপের গঠন আমাদের মস্তিষ্কে তথ্য সঞ্চয় ও সংরক্ষণের অনুরূপ। পড়ার দক্ষতা বাড়ানোর জন্য শুধু না লিখে ম্যাপ আঁকার চেষ্টা করুন। মানচিত্রে ধারণার শ্রেণিবিন্যাস ও সংযোগস্থাপনের মাধ্যমে সামগ্রিক চিত্র ফুটিয়ে তোলা যায়।  

এ পদ্ধতিতে প্রথমে একটি ফাঁকা পৃষ্ঠায় টপিকের মূল বিষয়ের নাম লিখে মূল পয়েন্টগুলো নোট করুন। কীওয়ার্ডগুলো মূল ধারণার সঙ্গে সংযোগ করুন। এভাবে একসময় একটি চিত্র ফুটে উঠবে, যার মাধ্যমে সেই বিষয়টি মনে থাকবে। 

ফাইনম্যান টেকনিক 

পড়ালেখায় সহজ ও নমনীয় পদ্ধতি হিসেবে এটি বেশ জনপ্রিয়। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যানের নাম অনুসারে এই পদ্ধতির নামকরণ করা হয়। মূলত কমবয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য এটি খুবই কাজে দেয়। 

কোনোকিছু স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য প্রথমে টপিকের প্রত্যেক বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা নিন। কঠিন শব্দে ব্যাখ্যার বিপরীতে সেগুলো সহজ করুন। বিভিন্ন বিষয় ও উপ-বিষয়ের মধ্যে সংযোগ করুন এবং যা শিখেছেন তা সংক্ষেপে ও সহজভাবে প্রকাশ করুন। 

ফাইনম্যান টেকনিক দ্বারা কোনো বিষয় বিস্তারিত ব্যাখ্যার মাধ্যমে মনে রাখা যায়। প্রথমবার এটি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বয়সভেদে জ্ঞানের মাত্রা কতটুকু তা মাথায় রাখতে হবে।

লেইটনার সিস্টেম

১৯৭২ সালে সেবাস্টিয়ান লেইটনার ফ্ল্যাশকার্ডের মাধ্যমে পড়া মুখস্থ করার কাজকে কীভাবে সহজ করা যায় তা আবিষ্কার করেন। এই পদ্ধতির মাধ্যমে পড়া মনে রাখার দক্ষতাও বৃদ্ধি পায়। 

প্রথমে একটি টপিকের বিষয়বস্তু কয়েকটি ফ্ল্যাশকার্ডে প্রশ্ন আকারে লিখুন। বিপরীত দিকে সেগুলোর উত্তর নোট করুন। তারপর তিনটি বক্সে ১, ২, ৩ নম্বর লিখুন। সবগুলো ফ্ল্যাশকার্ড ১ নম্বর বক্সে ভাঁজ করে রাখুন, যাতে উত্তরগুলো ভেতরের দিকে থাকে। 

একেক করে ফ্ল্যাশকার্ডের প্রশ্নগুলো পড়ে উত্তর মনে করার চেষ্টা করুন। পারলে ২ নম্বর বক্সে রাখুন, না পারলে ১ নম্বর বক্সে রাখুন। এভাবে সবগুলো ফ্ল্যাশকার্ড ২ নম্বরে রাখার পর সেগুলো পুন:মূল্যায়ন করে ৩ নম্বর বক্সে রাখুন। 

এগুলো ছাড়াও অনেক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি রয়েছে, যা পড়ালেখার দক্ষতার পাশাপাশি সময়ের অপচয় কমায়। প্রতিযোগিতায় অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকতে এবং একঘেয়ে পড়ালেখা থেকে রেহাই পেতে সেগুলো যাচাই করুন এখনই।  

তথ্যসূত্র: গো বুক মার্ট, সায়েন্টিফিক স্টাডি, মেন্টি

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

11h ago