৫ বছরে নুরুল ইসলাম নাহিদের আয় বেড়েছে ৩ গুণের বেশি
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী সিলেট-৬ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদের আয় পাঁচ বছরে বেড়েছে তিন গুণের বেশি।
এই সম্পদের হিসাব নাহিদে নিজের দেওয়া। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে তার আয় বৃদ্ধির এই চিত্র পাওয়া যায়।
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নুরুল ইসলাম নাহিদ তার হলফনামায় বার্ষিক আয় হিসেবে উল্লেখ করেন ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ টাকা। পেশায় কৃষিজীবী ও রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কৃষিখাত, শেয়ার, মৎস্য চাষ ও লেখক সম্মানী বাবদ তিনি এই আয় হিসাব দিয়েছিলেন। এ সময় তার ওপর নির্ভরশীলের চাকরি বাবদ আয় ছিল ২ লাখ ৪ হাজার ১৭৪ টাকা।
২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচনের আগে নাহিদ তার হলফনামায় বার্ষিক আয় ১৭ লাখ ৭২ হাজার ৩৯৯ টাকা প্রদর্শন করেন।
২০১৮ সালে নাহিদের বার্ষিক আয় কিছুটা কমে হয় ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২০৫ টাকা। এর মধ্যে কৃষিখাত থেকে ৫০ হাজার টাকা, শেয়ার থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ও বাকি টাকা পেশাগত আয় ছিল।
সর্বশেষ দুই নির্বাচনে নির্ভরশীলদের কোনো আয় প্রদর্শন করেননি তিনি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য নাহিদ যে হলফনামা দিয়েছেন তাতে বর্তমান বার্ষিক আয় ৫০ লাখ ৩০ হাজার ১১৩ টাকা দেখিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৭২০ টাকা কৃষিখাত থেকে, ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা বাসা ভাড়া থেকে, ৩০ লাখ টাকা শেয়ার থেকে, ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা চাকরি সম্মানী ভাতা এবং বাকি টাকা অন্যান্য খাত থেকে এসেছে। বর্তমানে তার ওপর নির্ভরশীলদের কোনো আয় নেই।
নুরুল ইসলাম নাহিদের অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ২০০৮ সালে নিজের নামে ছিল ২১ লাখ ৫৭ হাজার ৯১১ টাকা যার মধ্যে নগদ ৪৭ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৪ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, ও সঞ্চয়পত্রে ১২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।
সেসময় তার স্ত্রীর নামে নগদ, ব্যাংকে জমা ও স্বর্ণালংকার মিলিয়ে মোট ৬ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৪ টাকা ও নির্ভরশীলদের নামে ৩ লাখ ৭২ হাজার ২৫৮ টাকা ছিল।
২০১৪ সালে নাহিদের নিজের নামে ৯৮ লাখ ৩০ হাজার ৫৫০ টাকা ছিল যার মধ্যে নগদ আড়াই লাখ টাকা, ব্যাংকে ৫৫ লাখ ও বাদবাকি গাড়ি, স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য। তখন স্ত্রীর নামে ৫০ লাখ ১৭ হাজার ৮৪৩ টাকা যার মধ্যে ৪৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র প্রদর্শন করেন। সেবার নির্ভরশীলদের নামে কোনো সম্পদ প্রদর্শন করেননি তিনি।
২০১৮ সালে নাহিদের নিজের নামে ১ কোটি ৫৮ লাখ ১৬ হাজার ০৯ টাকার সম্পত্তি ছিল যার মধ্যে নগদ ৩৫ লাখ ৬৪ হাজার ৭০৫ টাকা, ব্যাংকে জমা ৩৯ লাখ ৭২ হাজার ৯৮৩ টাকা ও সঞ্চয়পত্রে ২০ লাখ টাকা ছিল। এছাড়া বাকি টাকা গাড়ি ও অন্যান্য খাতের।
তখন নাহিদের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে ছিল মোট ৫৮ লাখ ১৭ হাজার টাকা যার মধ্যে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩০ টাকা ব্যাংকে, ৫০ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্রে ও বাকি টাকা বিভিন্নখাতে।
বর্তমানে নুরুল ইসলাম নাহিদের নিজের নামে ২ কোটি ৮ লাখ ৯৩ হাজার ১৩২ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে যার মধ্যে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩১ টাকা ব্যাংকে জমা এবং বাদবাকি গাড়ির মূল্য ও অন্যান্য।
তবে এবার তিনি তার স্ত্রীর কোন অস্থাবর সম্পদ প্রদর্শন করেননি।
নুরুল ইসলাম নাহিদের স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে ২০০৮ সালে নিজ নামে ৫ লাখ টাকা মূল্যের ৩ কাঠা অকৃষি জমি, যৌথ মালিকানায় ৫ কাঠা জমির ১/৬ অংশ ও ২ একর বাড়ির ১/৬ অংশ।
২০১৪ সালে নিজ নামে ২০ লাখ টাকা মূল্যের ০.০৮২৫ একর অকৃষি জমি, যৌথ মালিকানায় ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার কৃষি জমি, ৪৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকার অকৃষি জমি ও ২০ লাখ টাকার দালান এবং ২০১৮ সালে নিজ নামে ২১ লাখ ৮ হাজার ৪৪০ টাকার বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট, যৌথ মালিকানায় ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার কৃষি জমি, ২০ লাখ টাকার অকৃষি জমি ও ২০ লাখ টাকার দালান।
বর্তমানে নিজের নামে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার কৃষি জমি, ৫ লাখ টাকার ঘর, ২১ লাখ ৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।
Comments