২ বছরে স্থায়ীভাবে দেশে ফিরেছেন ৪ লাখ ৬৬ হাজার অভিবাসী

প্রতীকী ছবি | স্টার ফাইল ফটো

গত দুই বছরে ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৬৬৬ জন বাংলাদেশি অভিবাসী স্থায়ীভাবে দেশে ফিরেছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

'জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২: জাতীয় প্রতিবেদন (প্রথম খণ্ড)' অনুযায়ী, ফেরত আসা অভিবাসীদের মধ্যে ১ লাখ ৫৪ হাজার বা ৩৩ দশমিক ০৩ শতাংশ চট্টগ্রাম বিভাগের  এবং ১ লাখ ৩২ হাজার বা ২৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ ঢাকা বিভাগের।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্থায়ীভাবে দেশে ফেরা অভিবাসীদের মধ্যে খুলনা বিভাগের ৮ দশমিক ৪২ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগের ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ, সিলেট বিভাগের ৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগের ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ, রংপুর বিভাগের ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন বরিশাল বিভাগের ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

সম্প্রতি বিবিএসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জনশুমারির সময় বাংলাদেশে ২৭ হাজার ৮৪২ জন বিদেশি অবস্থান করছিলেন। এর মধ্যে পুরুষ ২১ হাজার ২০৮ জন এবং নারী ৬ হাজার ৬৩৪ জন।

বিভাগভিত্তিক বিদেশিদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি বিদেশি বা ৪০ দশমিক ৪১ শতাংশ ঢাকায় বসবাস করেন। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ, রাজশাহীতে ১৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ, বরিশালে ১২ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং ময়মনসিংহে ১ শতাংশ বসবাস করেন।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, দীর্ঘদিন বিদেশে কাজ করা অনেক বাংলাদেশির স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে আসা একটি 'স্বাভাবিক প্রক্রিয়া'।

এছাড়াও চাকরি হারানোর মতো কারণে অনেকেই বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

তবে কোভিড মহামারি ও মহামারী পরবর্তী পরিস্থিতি প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রত্যাবর্তনে প্রভাব ফেলেছে কি না, তা বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন, যোগ করেন তিনি।

'আরও কোনো কারণ আছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার,' উল্লেখ করে অধ্যাপক রায়হান বলেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, মহামারির মধ্যে বিদেশে চাকরি হারিয়ে বাংলাদেশিরা দেশে ফিরেছেন।

অধ্যাপক রায়হান আরও বলেন, জনশুমারিতে বাংলাদেশে বসবাসরত বিদেশিদের সংখ্যাকে 'অবমূল্যায়ন' করা হয়েছে।

বিবিএসের প্রতিবেদনে যে পরিসংখ্যান দেখানো হয়েছে তার চেয়ে বাংলাদেশে বসবাসরত বিদেশিদের সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি বলে মনে করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক বিদেশি অনানুষ্ঠানিকভাবে এবং বৈধ ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াও বাংলাদেশে কাজ করেন।

অভিবাসী অ্যাডভোকেসি গ্রুপ রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (আরএমএমআরইউ) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে দেখিয়েছে, আটক ও পরবর্তীতে নির্বাসন, বিদেশে চাকরি পেতে ব্যর্থতা এবং নিয়োগকর্তার প্রতিশ্রুত চাকরি ও মজুরি প্রদানের লঙ্ঘন ২১৮ জন বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকের অসময়ে প্রত্যাবর্তনের মূল কারণ।

জরিপে দেখা গেছে, বৈধ ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া ১৬ জন এবং বৈধ ভিসা ছাড়া ১১ জনসহ ৩৪ জন প্রবাসীকে আটকের পর ফেরত পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে ৩৩ জন অভিবাসী কাজ না পেয়ে ফিরে এসেছেন এবং ৪৪ জন অভিবাসী শ্রমিক নিয়োগকারীদের প্রতিশ্রুতি মতো চাকরি ও মজুরি না পেয়ে ফিরে এসেছেন।

অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে নিয়োগকর্তার অসদাচরণ, কম মজুরি এবং শারীরিক অসুস্থতা।

রাজধানীর একটি হোটেলে জরিপের ফলাফল প্রকাশের সময় উপস্থাপিত গবেষণাপত্রে আরএমএমআরইউ'র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী উল্লেখ করেন, অসময়ে প্রত্যাবর্তন একটি 'সাধারণ ঘটনা' হয়ে দাঁড়িয়েছে।

'বড় বিনিয়োগ' করার পর, অভিবাসীদের একটি অংশ তাদের নির্ধারিত সময়ের কাজ শেষ করার আগেই ফিরে আসছে, গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেন তিনি।

বিবিএসের জনশুমারির ফলাফল অনুযায়ী, ৫০ লাখ ৫৩ হাজার ৩৫৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক আদমশুমারির আগে কমপক্ষে ছয় মাস বিদেশে অবস্থান করছিলেন অথবা কমপক্ষে ছয় মাস বিদেশে থাকার অভিপ্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং ঢাকা বিভাগে ২৮ দশমিক ৩২ শতাংশ রেকর্ড করা হয়েছে।

সিলেটে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ, খুলনায় ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৩ দশমিক ০৫ শতাংশ, বরিশালে ৩ শতাংশ ও রংপুরে ২ দশমিক ২৮ শতাংশ।

Comments

The Daily Star  | English

NBR revises VAT, SD on 9 items following public outcry 

The tax authority brought down the indirect taxes two weeks after the government hiked rates of nearly 100 goods and services drawing opposition from criticisms that the spike would stoke inflation which has been staying over 9 percent since March 2023

21m ago