বিএনপির বিরুদ্ধে আরও কঠোর হচ্ছে সরকার

সরকারের পদত্যাগ দাবিতে চলমান আন্দোলন বিএনপি যাতে জোরদার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। ফলে সামনে বিএনপির জন্য আরও কঠিন সময় আসছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

সারা দেশে পুলিশ ২০১৩-১৪ ও ২০১৮ সালে অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামিদের তালিকা তৈরি করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী 'সন্দেহভাজন সমস্যা সৃষ্টিকারীদের' নতুন তালিকাও তৈরি করছে।

সূত্র জানায়, তালিকায় যাদের নাম এসেছে, তাদের বেশিরভাগই বিএনপির নেতাকর্মী। পুলিশ সাধারণভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নজর রাখছে এবং তাদের অনলাইন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে।

শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা সব মেট্রোপলিটন কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং তাদেরকে 'সমস্যা সৃষ্টিকারীদের' তালিকা তৈরি করতে বলেছেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ বিভাগ ও গোয়েন্দা শাখা 'সন্দেহভাজন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের' চিহ্নিত করছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, র‌্যাবকেও এ ধরনের তালিকা তৈরি ও নজরদারি জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও র‌্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, বিএনপি সমর্থকরা কিশোর গ্যাং, মাদকাসক্ত ও গৃহহীনদের অগ্নিসংযোগের জন্য অর্থ দিচ্ছে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিএনপি সমর্থকদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের সব ইউনিটকে ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে টহল বাড়াতে বলা হয়েছে এবং 'ঝামেলা সৃষ্টিকারীদের' গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে।

গত ১৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকেও একই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিএনপি মনে করে, এসব উদ্যোগ সরকারের 'মাঠ থেকে বিরোধী দলকে নির্মূল করার' পরিকল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপির আরও নেতাকর্মীকে কারাগারে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ।

'নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে ও জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তারা এসব করছে', বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৮ নভেম্বর বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, কেউ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

নির্বাচনে বাধা দিতে পারে এমন বিএনপি কর্মীদের 'মোকাবিলা' করতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের জন্য দলের প্রত্যেক ইউনিটকে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

সূত্র জানায়, ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে ২০ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত থাকব। কিন্তু বিএনপিকে রাজপথে ছাড় দেবো না। আমরা আমাদের প্রচারণা চালিয়ে যাব এবং একইসঙ্গে তাদের মোকাবিলা করব।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপির উত্তরা বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অগ্নিসংযোগের জন্য অর্থ দিয়েছে কিংবা এর সঙ্গে জড়িত, বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের এমন প্রায় ৫০ জনকে চিহ্নিত করেছে তারা।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, নাশকতার পরিকল্পনা, প্রস্তুতি ও বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িতদের আমরা চিহ্নিত করেছি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ৪০ সদস্যের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সন্ধান পেয়েছেন পুলিশ, যার মাধ্যমে বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা অগ্নিসংযোগকারীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Panic grips NBR officials

The relief that followed the end of a disruptive strike by tax officials at the National Board of Revenue has quickly given way to anxiety and regret, as the government started a clampdown on those involved.

12h ago