আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

মিলারের সেঞ্চুরির পরও অজি আক্রমণে প্রোটিয়ারা ২১২ রানেই শেষ

সেমিফাইনালের অর্ধেক শেষে টস হেরে বরং আগে বোলিং করতে পেরেই খুশিই হবেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।

মিলারের সেঞ্চুরির পরও অজি আক্রমণে প্রোটিয়ারা ২১২ রানেই শেষ

অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ছবি: রয়টার্স

দুই অধিনায়কই আগে ব্যাটিং বেছে নেওয়ার ভাবনার কথা বললেন টসে। সেমিফাইনালের অর্ধেক শেষে টস হেরে বরং আগে বোলিং করতে পেরে খুশিই হবেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। বোলিং সহায়ক কন্ডিশনের পুরোটাই দুর্দান্তভাবে কাজে লাগিয়ে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে যে তাদের তাড়া করতে হচ্ছে মাত্র ২১৩ রান।

বৃহস্পতিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিতে ২৪ রানেই ৪ উইকেট তুলে দক্ষিণ আফ্রিকার বুকে সজোরে ধাক্কা দেয় অজিরা। এরপর ডেভিড মিলার চাপের মুখে চমৎকার সেঞ্চুরি হাঁকালেও শেষমেশ প্রোটিয়াদের পুঁজি হয়েছে ২১২ রানের। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে মিচেল স্টার্ক ও অধিনায়ক কামিন্স তিনটি করে এবং জশ হ্যাজেলউড ও ট্রাভিস হেড দুটি করে উইকেট নিয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তাতে শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও ৪৯.৪ ওভারে অলআউট হয়ে গেছে টেম্বা বাভুমার দল।

রঙিন পোশাক না হলে প্রোটিয়াদের ইনিংসটাকে শুরুর দিকে টেস্ট ক্রিকেট ভেবে ভুল হতে পারত! মেঘলা আকাশের নিচে বোলিং সহায়ক কন্ডিশন পায় অজিরা। সুইং ও সিম মুভমেন্টে প্রতিপক্ষের ওপর তারা চেপে বসে পুরোপুরিভাবে। কাঁটা কম্পাস দিয়ে মাপা নিখুঁত বোলিংয়ের সঙ্গে অসাধারণ ফিল্ডিংয়ে চলে অজিদের রাজত্ব।

প্রথম ওভারেই বাভুমাকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দেন স্টার্ক। রানের জন্য হাঁসফাঁস করতে থাকা কুইন্টন ডি কক উড়িয়ে মারতে যান হ্যাজেলউডের বল। তবে কামিন্সের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হয়ে যান ৩ রানেই। বলের এদিক-সেদিক নড়াচড়ায় প্রোটিয়ারা তখন চোখে আঁধার দেখতে পাচ্ছিল যেন। দলীয় সংগ্রহ দুই অঙ্কে যেতে দক্ষিণ আফ্রিকার লেগে যায় ৮ ওভার। প্রথম বাউন্ডারি পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয় ৫২ বল! ১৮ রানে প্রথম পাওয়ার প্লে শেষ করার পরও ধাক্কা কাটেনি।

১১তম ওভারে এইডেন মার্করাম পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ১০ রান করেই। একপাশে চাপ শুষে নেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টায় থাকা রাসি ফন ডার ডুসেনও শেষমেশ ব্যর্থ। হ্যাজেলউডের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ডুসেন ফিরে যান ৩১ বলে ৬ রানের ইনিংস খেলে। দুই ফিনিশার হেইনরিখ ক্লাসেন ও মিলারকে তাই পুনরুদ্ধারের কাজে নামতে হয়।

স্টার্ক ৭ ওভারে ১৮ রানে ২ উইকেট পেয়ে তার প্রথম স্পেল শেষ করেন। ৬ ওভারে সমান উইকেট পেতে ১২ রানের স্পেল শেষে হ্যাজেলউডের জায়গায় আসেন কামিন্স। ক্লাসেন ও মিলার মিলে তার ওভারে দুই চারে ১২ রান আনেন। ১৪ ওভারে ৪ উইকেটে ৪৪ রানে থাকতেই এরপর বৃষ্টি নেমে আসে।

বেশ কিছু সময় বন্ধ থাকার পর আবার খেলা শুরু হলে ক্লাসেন-মিলার চড়াও হন লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পার উপর। নিজের প্রথম পাঁচ ওভারেই পাঁচটি ছক্কার মার পড়ে জ্যাম্পার ওপর। সতর্কতার সঙ্গে জায়গামতো বল পেলে বাউন্ডারি বের করতে থাকেন দুই প্রোটিয়া ব্যাটার। তারপরও বিপদের মহাসাগরে পড়া দলটির একশ ছুঁতে লেগে যায় ২৮ ওভার। শতরানের দিকে এগোনো পঞ্চম উইকেট জুটিতে লড়াকু স্কোরের আশা দেখছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু আচমকাই দুটি উইকেট হারিয়ে বসে একই ওভারে।

পার্ট-টাইমার হেডের বলে বোল্ড হয়ে যান ক্লাসেন। ৪ চার ও ২ ছয়ে ৪৮ বলে ৪৭ রান করেন বিধ্বংসী ক্লাসেন। ভাঙে ১১৩ বলে ৯৫ রানের জুটি। পরের বলেই হেডের বড় বাঁক খাওয়া ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে যান মার্কো ইয়ানসেন। তেতো স্বাদ নেন গোল্ডেন ডাকের। ৩১তম ওভারে ১১৯ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ফেলে আবার খাদের কিনারায় চলে যায় প্রোটিয়ারা।

জেরাল্ড কোয়েটজি আট নম্বরে এসে দারুণ সঙ্গ দিয়ে সপ্তম উইকেটে ৭৬ বলে ৫৩ রানের জুটি গড়েন মিলারের সঙ্গে। ৩৯ বলে ১৯ রান করে কোয়েটজি ফিরে যান। তবে রিপ্লেতে দেখা যায়, কামিন্সের বাউন্সারে উইকেটরক্ষক জশ ইংলিসের হাতে যাওয়া ক্যাচে আউট ছিলেন না তিনি। কারণ, বল লাগেনি ব্যাটে বা গ্লাভসে। তবুও হাঁটা দেন কোয়েটজি। কেশব মহারাজও ৪ রানে ফিরে গেলে মিলারের সঙ্গীর অভাবই পড়ে যায়।

লড়াকু ইনিংসে মিলার দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ দুইশ পার করান। ৭০ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর ১১৫ বলে সেঞ্চুরি পেয়ে যদিও পরের বলেই আউট হয়ে যান। ৮ চার ও ৫ ছক্কায় গড়া ছিল তার ১০১ রানের ইনিংস। এরপর কাগিসো রাবাদাকে বিদায় করে প্রোটিয়াদের গুটিয়ে দেন কামিন্স।

নিজের ১০ ওভারের কোটা স্টার্ক শেষ করেন ৩৪ রানে ৩ উইকেটে। হ্যাজেলউড ৮ ওভারে মাত্র ১২ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নেন। ৫১ রান দিয়ে কিছুটা খরুচে থাকলেও কামিন্সের ঝুলিতে যায় ৩ উইকেট। এই তিন পেসারের বাইরে উইকেট পান অফ স্পিনার হেড। ২১ রানে তার শিকার দুটি।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

2h ago