৩০ বছর বয়সের মধ্যে যে ৩০ অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত

ছবি: সংগৃহীত

জীবনের মূল্যবান ৩০টা বছর পেরিয়ে আসা কিন্তু কম কথা নয়। জীবনের চাওয়া-পাওয়া, বোঝাপড়া নানা কিছু সামলে তবেই এই ৩০ বসন্ত পার হওয়া। জীবনের এই পর্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আপনি যদি ৩০ এ পা দিয়ে থাকেন তবে সামনে আরও সুন্দর সময় পেতে আয়ত্ত করে নিতে পারেন এ ৩০টি অভ্যাস-

১. সামনে এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন। আত্মতুষ্টি আর 'কমফোর্ট জোন' থেকে বের হয়ে এসে জগতকে দেখার চেষ্টা করুন।

২. লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সেগুলো লিখে রাখুন। বছর শেষে দেখুন যে কতটুকু অর্জিত হলো। সব লক্ষ্য অর্জিত হবে না হয়তো, তবে মূল বিষয় হচ্ছে প্রতি বছর আপনি নতুন কিছু লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন।

৩. ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে তিন মাসের বেতন পরিমাণ টাকা রাখুন। এটি চিকিৎসা, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা, আর্থিক নিরাপত্তাসহ অপ্রত্যাশিত চাকরি ছাঁটাইয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে সহায়তা করবে।

৪. ইন্সুরেন্স বিপদের বন্ধু। এটিকে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বলে মনে হতে পারে, তবে প্রয়োজনের সময় আর্থিক সুরক্ষার চেয়ে ভাল আর কিছুই হতে পারে না।

৫. ঋণ করে গাড়ির মতো সম্পদ না কেনাই ভালো। গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বেশ ভালো পরিমাণ অর্থ খরচ হয় এবং এটি পুনঃবিক্রির মান দিন দিন কমতে থাকে।

৬. বই পড়ুন। প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ পৃষ্ঠা পড়ার চেষ্টা করুন। আপনার আগ্রহের বিষয়ভিত্তিক বই, আর্টিকেল ইত্যাদি ঘুমানোর আগে পড়তে পারেন।

৭. স্ক্রিনটাইম দুই ঘণ্টার কমে সীমিত করার চেষ্টা করুন। স্ক্রিনের নীল আলোর ব্যবহার যদি সীমিত করতে পারেন তবে সেটি হবে নিজের চোখ ও মস্তিষ্ককে দেওয়া সবচেয়ে সেরা উপহার।

৮. প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকার চেষ্টা করুন। সূর্যের আলো থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন ডি হাড়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে এবং সূর্যের উষ্ণতা মানসিক স্বাস্থ্যকে সুরক্ষা দেবে।

৯. প্রতিদিন ৩০ মিনিটের ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। অভ্যাসটি শুধু আপনাকে কর্মক্ষম আর ফিটই রাখবে না, আপনার হার্ট ও ত্বককেও সুস্থ রাখবে।

১০. বিছানায় বসে যদি খাওয়াদাওয়া, টিভি সিরিজ দেখা, অফিসের কাজ করার মতো অভ্যাস থাকে তবে সেগুলো বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুন। শয়নকক্ষকে সারাদিনের কাজ শেষে আরাম করার জায়গা হিসেবে বিবেচনা করুন।

১১. যতটা সম্ভব স্টক মার্কেট এবং বিনিয়োগ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। সঞ্চয় অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তবে শুধু সঞ্চয় করলে হবে না, সেই সঞ্চিত সম্পদকে কীভাবে বাড়ানোর যায় সেটি নিয়েও চিন্তা করা উচিত।

১২. সহযোগিতামূলক প্রবৃত্তি নিজের মধ্যে গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। জীবনের কোন স্তরে এসে কাকে প্রয়োজন সেটি আপনি জানেন না। তাই অন্যের প্রতি সহনশীল ও সহানুভূতিশীল হওয়ার চেষ্টা করুন। তবে বিষয়টা যেন এমন না হয়ে দাঁড়ায় যে, সাহায্য পাওয়ার আশাতেই শুধু অন্যের প্রতি সদয় হবেন।

১৩. যতটুকু বলবেন তার থেকে দ্বিগুণ শোনার অভ্যাস করুন। বক্তার মেজাজ ও গলার স্বর খেয়াল করুন। শুধু শোনা এবং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অনেক কিছু শিখতে পারবেন।

১৪. জীবনে হার-জিত রয়েছে। নিজের পরাজয় মেনে নেওয়াটা অন্যতম দিক।

১৫. নিজেকে নিয়ে হাসতে জানা একটি ভালো অভ্যাস। 

১৬. সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার সীমিত করুন। মনে রাখা উচিত, সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ নিজের নেতিবাচক দিক তুলে ধরে না।

১৭. সরলতাই আভিজাত্য। জীবনে যত কম কুটিল জিনিস আপনি জড়ো করবেন, তত ভালো বিষয় আপনার জীবনে জমা হবে।

১৮. কৃতজ্ঞতার মানসিকতা বজায় রাখুন। 

১৯. জীবনে অনুশোচনা কমিয়ে দিন। স্বপ্নের চাকরি, আপনার কমফোর্ট জোনের বাইরে বের হওয়া, সঠিক সময়ে খারাপ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মনে সাহস রাখুন।

২০. অযথাই গালগল্পে জড়াবেন না। এটি এমন এক মন্দ দিক, যার কারণে অনেক মানুষ আপনাকে ছেড়ে চলে যাবে।

২১. মানুষের গোপনীয়তা রক্ষা করুন, সেটি যতই তুচ্ছ মনে হোক না কেন। মানুষ আপনাকে বিশ্বাস করে কিছু কথা বলেছে, আপনার উচিত নয় সেটি সবার সামনে আনা।

২২. কারো সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করবেন না। কারণ বর্তমানে বিশ্ব চলে নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে।

২৩. খাবার নির্বাচনে সতর্ক হোন, স্বাস্থ্যসম্মত খাওয়াদাওয়ায় অভ্যস্ত হোন। ৩০ এ এমন সব খাওয়াদাওয়া বেছে নেওয়া উচিত যা ডায়াবেটিস, ক্যান্সারের মতো রোগ থেকে সুরক্ষা দেবে। খাদ্যতালিকায় শাকসবজি যোগ করুন, সুষম খাদ্য খাওয়ার চেষ্টা করুন, অতিরিক্ত চিনি পরিহার ও যথেষ্ট পানি পানের অভ্যাস করুন। এই বয়সটাই সময় ধূমপান বা মদ্যপানকে না বলার।

২৪. শখের জন্য সময় বরাদ্দ রাখুন। মনেরও সৃজনশীল উদ্দীপনা দরকার।

২৫. আপনার প্রতি যারা যত্নশীল আপনিও তাদের প্রতি যত্নশীল হোন, সময় দিন। এই ৩০ এ আসার পরও যে বন্ধুরা রয়ে গেছে, তারাই আপনার জীবনে আশীর্বাদ।

২৬. ভ্রমণের সুযোগ কখনই হেলায় হারাবেন না। কারণ অভিজ্ঞতা নতুন আইফোনের চেয়ে ভালো বিনিয়োগ।

২৭. সস্তা, নিম্নমানের জিনিসের পরিবর্তে দীর্ঘস্থায়ী, টেকসই পণ্যে বিনিয়োগ করুন। নিত্য ব্যবহার্য জিনিস নিম্নমানের কিনলে সেটি বারবার কিনতে হবে এবং অতিরিক্ত খরচ হবে। তাই টেকসই পণ্য কিনুন।

২৮. নিজের যত্ন নিন। সাজসজ্জা আর সেল্ফ কেয়ারে কিছুটা খরচ করাই যায়। একজন পরিপাটি ব্যক্তি সবারই মনোযোগ আকর্ষণ করে।

২৯. সবাই আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী নয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত সে সম্পর্কে নীরব থাকুন।

৩০. সব বয়সের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করুন। প্রতিটি বয়স আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষা দেবে।

অনুবাদ করেছেন আসিয়া আফরিন চৌধুরী

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh alleges border abuse by BSF

Those pushed-in allege torture, abuses in India

A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.

3h ago