জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গৃহীত

সাধারণ পরিষদের দশম জরুরি বিশেষ অধিবেশনে গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত হয়। ছবি: এএফপি

গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতি এবং বেসামরিক নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা নির্বিঘ্নে সরবরাহের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আনা প্রস্তাব দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত হয়েছে।

সাধারণ পরিষদের দশম জরুরি বিশেষ অধিবেশনে শুক্রবার ১২১টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে, ১৪টি দেশ বিপক্ষে এবং ৪৫টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।

আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

গত তিন সপ্তাহ ধরে গাজা উপত্যকায় মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্য বারবার আলোচনা করেও সফল হতে পারেনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।

বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার অভিভাবক এই পরিষদের উপর্যুপরি ব্যর্থতার পর আজ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্যালেস্টাইনের গাজায় মানবিক যু্দ্ধ বিরতির জন্য আনা প্রস্তাব দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত হয়।

গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫০০ শিশুসহ প্রায় ৭ হাজার বেসামরিক নাগরিক মারা গেছেন।

বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ।

বাংলাদেশের পক্ষে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভোট দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।

তিনি বলেন, 'আমরা শুধু এই প্রস্তাবের পক্ষেই ভোট দিইনি। নিরাপত্তা পরিষদ বিশ্বের কোথাও শান্তি ও নিরাপত্তা ইস্যুতে কোনো প্রস্তাব গ্রহণে ব্যর্থ হলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জরুরি সেশন আহ্বান করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। সেই জরুরি সেশন যাতে অবিলম্বে আহ্বান করা হয়, সেজন্য আমরা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে লিখিত অনুরোধ জানিয়েছি। অন্যান্য দেশ যাতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, সেইজন্য সম্ভাব্য দেশগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছি।'

রাষ্ট্রদূত বলেন, এর আগে নিরাপত্তা পরিষদে প্যালেস্টাইন বিষয়ে উন্মুক্ত বিতর্ক চলাকালে ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের প্রতি বাংলাদেশের অটল ও অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতির জন্য নিরাপত্তা পরিষদের সকল স্থায়ী ও অস্থায়ী সদস্যদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি।'

এই প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার ফলে অবিলম্বে গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতি হবে। বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা হবে। সেখানে মানবাধিকার সংগঠন ও মানবাধিকার কর্মীরা অবাধে প্রবেশের সুযোগ পাবে। বিদ্যুৎ, পানি, খাদ্য ও প্রয়োজনীয় ওষধের সরবরাহ নিশ্চিত হবে। হাসপাতালগুলো যাতে আহত ও অসুস্থ নাগরিকদের সেবা দিতে পারে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করার পথ উন্মুক্ত হবে। একটি স্বাধীন, টেকসই ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের জনগণের বৈধ আকাঙ্ক্ষার ন্যায়সঙ্গত ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান অর্জনে বৈশ্বিক প্রচেষ্টার প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার আগামী দিনগুলোতে অব্যাহত থাকবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

প্রস্তাবটি গ্রহণের প্রাক্কালে কানাডার পক্ষ থেকে ৭ অক্টোবর ইসরাইলে সংঘটিত হামলার বরাতে হামাসের প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করে একটি সংশোধনী প্রস্তাব আনা হয। কিন্তু ইসরাইলের আগ্রাসী কার্যকলাপ ও বর্বরোচিত হামলার বিষয়ে উক্ত সংশোধনীতে কনোন উল্লেখ না থাকায় মুসলিম বিশ্বসহ অধিকাংশ সদস্য রাষ্ট্র উক্ত সংশোধনী প্রস্তাবনাটি প্রত্যাখ্যান করে।

Comments

The Daily Star  | English

Next nat'l polls: BNP urges CA, CEC to disclose what they discussed

Ensuring free and fair polls is now the main responsibility of EC and govt, he says

1h ago