আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

লিটন-তানজিদের দারুণ শুরুর পরও মিলল না চ্যালেঞ্জিং পুঁজি 

বৃহস্পতিবার পুনেতে বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে ২৫৬ রান করেছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন লিটন, তানজিদের ব্যাট থেকে আসে ৫১ রান। এছাড়া মুশফিকুর রহিম ৩৮ ও মাহমুদউল্লাহ করেন ৪৬ রান।

পুনে থেকে

লিটন-তানজিদের দারুণ শুরুর পরও মিলল না চ্যালেঞ্জিং পুঁজি 

ভারত বনাম বাংলাদেশ
ছবি: রয়টার্স

দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম আর লিটন দাস এনে দিয়েছিলেন স্বপ্নের মতন শুরু। বিশ্বকাপ মঞ্চে বাংলাদেশ পেয়ে গিয়েছিল রেকর্ড ওপেনিং জুটি। ভারতের বিপক্ষে বড় মঞ্চে বড় পুঁজির আভাসও ছিল স্পষ্ট। তবে এই দুজনের পর বাংলাদেশের ইনিংসে পড়ে ভাটার টান। মিডল অর্ডারের ভঙ্গুর অবস্থার মাঝে ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবু ব্যাটিং স্বর্গে মেলেনি চ্যালেঞ্জিং পুঁজি।

বৃহস্পতিবার পুনেতে বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে ২৫৬ রান করেছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন লিটন, তানজিদের ব্যাট থেকে আসে ৫১ রান। এছাড়া মুশফিকুর রহিম ৩৮ ও মাহমুদউল্লাহ করেন ৪৬ রান। 

ভারতের হয়ে ৩৮ রানে ২ উইকেট নিয়ে সফল বোলার রবীন্দ্র জাদেজা। জাসপ্রিট বুমরাহ ৪১ রানে পান ২ উইকেট। অথচ ১৫তম ওভারে বিনা উইকেটে এক পর্যায়ে ৯৩ ছিল বাংলাদেশের রান। অমন মঞ্চ মিডল অর্ডার ব্যাটাররা কাজে লাগাতে পারেননি।

টস জিতে ওপেন করতে নেমে সতর্ক শুরু আনার পর ডানা মেলতে থাকেন তানজিদ-লিটন। ভালো বল সামলে আলগা বলে কোন মার্জনা করেননি তারা। তানজিদের মধ্যে পাওয়া যায় ফুরফুরে হাওয়া, লিটন নেন দায়িত্ব। ওপেনিংয়ে বাংলাদেশ পেয়ে যায় বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বোচ্চ জুটি

আগের তিন ম্যাচে ৫, ১ ও ১৬ রান করে প্রবল চাপে ছিলেন তানজিদ। সাকিব আল হাসান ফিট থাকলে হয়ত একাদশেই জায়গা হারাতে হতো থাকে। সুতোর উপর ঝুলতে থাকা অবস্থায় নিজেকে প্রমাণ করতে থাকেন তিনি। দারুণ সব শটে ফুটে বের হয় আত্মবিশ্বাস।

৪১  বলে পেয়ে যান ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। এরপরই অবশ্য থেমেছেন। রিষ্ট স্পিনার কুলদীপ যাদবের বলে বিভ্রান্ত হয়ে এলবিডব্লিউতে থামে তার ৪৩ বলে ৫১ রানের ইনিংস। ৯৩ রানের এই  ওপেনিং জুটিই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ। এর আগের সর্বোচ্চ ছিল সেই ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ ও মেহরাব হোসেন অপি জুটির ৬৯ রন।

এই পরিসংখ্যান জানান দেয় গত ২৪ বছরে বিশ্বকাপ মঞ্চে কতটা নাজুক ছিল বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। তানজিদের বিদায়ের পর নাজমুল হোসেন শান্তও টেকেননি। বিশ্বকাপের আগে দারুণ ছন্দে থাকা বাঁহাতি ব্যাটার টানা তিন ম্যাচে রান পেলেন না। জাদেজার বল পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন, এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্তে রিভিউ নেওয়ারও অবস্থা ছিলো না।

এক পাশে উইকেট মতনের ভিড়ে দলকে টানছিলেন লিটন। চাপে থাকা বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার কুলদীপকে সামলাচ্ছিলেন দারুণভাবে। জাদেজাকে এক ওভারে চোখ জুড়ানো তিন চারে আভাস দেন বড় কিছুর। শুরুতে প্রথম ১৩ বলে কোন রান ছিল না লিটনের। পরে ৪৮ বলে চলে যান ৪২ রানে। শান্তর আউটে ফের তাকে গুটিয়ে নিতে হয় নিজেকে। ৬২ বলে ফিফটি পেরুনোর পর আবার ডানা মেলেন। তবে এবারও তার ছন্দ নষ্ট হয় মেহেদী হাসান মিরাজের আউটে।

চারে নামিয়ে মিরাজের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি কিছু। মোহাম্মদ সিরাজের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ধরা দেন তিনি। বাম দিকে ঝাঁপিয়ে লোকেশ রাহুল দারুণ রিফ্লেক্সে হাতে জমান ক্যাচ।

পরের কয়েক বলে আবার মন্থর হয়ে পড়ে খেলা। রানের গতি বাড়াতে জাদেজাকে লক্ষ্য করে ভুলটা করে বসেন লিটন। এগিয়ে এসে উড়াতে গিয়ে লং অফে ধরা দেন তিনি। ৮২ বলে ৬৬ রানে থামে তার ইনিংস।

ভাটার টান পড়তে থাকা বাংলাদেশের ইনিংসে এরপর অক্সিজেন যুগিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ক্রিজে এসেই চনমনে উপস্থিতি জানান দেয় তার বড় মঞ্চে ছন্দে থাকার আভাস। শেষ দিকে ঝড় তোলার জন্য যখন মুশফিক একদম প্রস্তুত তখনই আক্রমণে এসে ব্রেক থ্রো আনেন বুমরাহ। স্কয়ার কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে জাদেজার দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে ফেরেন ৩৮ রান করা অভিজ্ঞ ব্যাটার।

সাতে নেমে মাহমুদউল্লাহ এরপর কিছুটা মিটিয়েছেন দলের চাহিদা। শেষ ওভারে বুমরাহর শিকার হওয়ার আগে ৩৭ বলে ৪৬ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh-US tariff talks underway in Washington

Based on progress made so far, Bangladesh hopes for a positive outcome

2h ago