খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদনে আইন মন্ত্রণালয়ের ‘না’

খালেদা জিয়া
কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালে খালেদা জিয়াসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। ফাইল ছবি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্থায়ীভাবে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে অনুমতি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে যে আবেদন করা হয়েছিল, তা নাকচ করে দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, 'প্রথম যে দরখাস্তটা ছিল, যেটা ২০২০ সালের মার্চ মাসে নিষ্পত্তি হয়, সেই দরখাস্তে ছিল বেগম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসা যেন হয় সেই ব্যবস্থা করা। তখন সেই দরখাস্তের ওপর আমরা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, দুটি শর্ত সাপেক্ষে তার দণ্ডাদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এটা ফৌজদারি কর্যবিধির ৪০১ এর উপধারা এক এর ক্ষমতাবলে। সেখানে দুটি শর্ত দেওয়া হয়েছিল তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন, দ্বিতীয় তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

'সেই শর্তগুলো মেনে তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হন এবং বাসায় ফিরে যান। সেভাবেই দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হয়। তাকে দেওয়া হয়েছিল ছয় মাসের জন্য এবং এইটুকু উন্মুক্ত ছিল প্রত্যেক ছয় মাসে বৃদ্ধি করা যাবে কি না, সেটা প্রত্যেক ছয় মাসে আট বার বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় কোনো দরখাস্ত যদি একবার নিষ্পত্তি করা হয়, সেই নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্ত পুনর্বিবেচনা করার কোনো অবকাশ আইনে থাকে না,' বলেন আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, 'আমরা সেই ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার উপধারা এক থেকে ছয় পর্যন্ত ব্যাখ্যা করে আমাদের মতামত পাঠিয়ে দিয়েছি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সেই মতামত হলো, এটা পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজড ট্রানজেকশন। এটা খোলার আর কোনো উপায় নেই।'

এখন তার পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'যে আদেশবলে দুটি শর্তযুক্তভাবে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে সাজা স্থগিত রেখে, সেটা বাতিল করে আবার পুনরায় বিবেচনা করার সুযোগ থাকলে করা হবে।

'আমাদের এই উপমহাদেশের ৪০১ ধারার ক্ষমতা যখন সরকার প্রয়োগ করে। তখন সেটাকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যায় না বলে সিদ্ধান্ত আছে। সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন, এখন যে আদেশ আছে সেটা যদি বাতিল করে তাকে আবার কারাগারে নেওয়া হয় তাহলে তিনি আদালতে যেতে পারেন। এই অবস্থায় তিনি আদালতে যেতে পারেন—এ রকম সুযোগ নেই,' ব্যাখ্যা করেন আইনমন্ত্রী।

সাজা স্থগিত প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, 'বাতিল করাটা অমানবিক হবে, বাতিল করব না।'

গত ২৪ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে সাজা স্থগিতের মেয়ার ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। তারপর এক সপ্তাহ না যেতেই তারা আবার আবেদন করলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চাওয়া ছিল কি না জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, 'আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।'

গত সোমবার খালেদা জিয়ার ছোটভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ আবেদন করেন। পরে এ ব্যাপারে আইনি মতামত চেয়ে আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সেখানে তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi migrants workers rights in Malaysia

Malaysia agrees to recruit 'large number' of Bangladeshi workers

Assurance will be given to ensure their wages, safety, and overall welfare, according to ministry officials

35m ago