সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব তথ্য শেয়ার করা উচিত নয়

ছবি: সংগৃহীত

আজকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়া আমাদের একটা দিনও চলে না। দূরে থাকা পরিবারের সদস্য, বন্ধু, আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে এবং নিজেকে ব্যস্ত দিনের শেষে একটু স্বস্তি দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই আমাদের ভরসা।

তবে এটি ব্যবহারে বেশ কিছু সতর্কতারও দরকার আছে। কিছু তথ্য আছে, যেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করলে নানা ধরনের বিড়ম্বনায় পড়ার বা ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

চলুন জেনে নিই সেগুলো কী-

এই মুহূর্তে কোথায় ও কীভাবে অবস্থান করছেন

যেখানে আছেন সেই স্থানটি জানিয়ে দেওয়া অনেক সময় ঝামেলা ডেকে আনতে পারে। তৈরি হতে পারে নিরাপত্তা সংক্রান্ত হুমকি। তাই কোনো স্থানে অবস্থানকালে তখনই চেক ইন না দিতে চেষ্টা করবেন। পরে দিলে নিরাপত্তার ঝুঁকি আর থাকে না। বিশেষ করে কোনো জায়গায় একা ঘুরতে গেলে সেটির লোকেশন এবং আপনি যে একা আছেন তা সেখানে থাকা অবস্থাতেই জানাতে যাবেন না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমনকি নিজের বাসায়ও যদি একা থাকেন সেটিও তখন জানাবেন না। পরিবারের সবাই মিলে বাইরে অবস্থান করছেন, বাসায় কেউ নেই-এ ধরনের তথ্যও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন। যারা আপনার বাসা চেনেন, তারা সুযোগ নিতে পারেন এই পরিস্থিতির।

শিশুদের ছবি ও পুরো নামসহ বিস্তারিত তথ্য

পরিবারের আদরের ছোট সদস্যটির ছবি আমরা বিভিন্ন সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে থাকি। এ কাজটি অনেক সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে। শিশুর জন্য পরবর্তীতে বিব্রতকর হতে পারে এ ধরনের ছবি পোস্ট না করবেন না। এ ছাড়া, কখনোই তার ছবির সঙ্গে পুরো নাম উল্লেখ করবেন না। শিশু কোন স্কুলে পড়ে বা কোন ক্লাসে পড়ে বা প্রতিদিন কোথায় খেলতে যায় এ জাতীয় বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ না করতে চেষ্টা করবেন। কোনো শিশুর ছবি, তার পুরো নাম ও বাবা/মায়ের নাম এবং স্কুলের নাম বা খেলার স্থান জানা থাকলে ইচ্ছা করলে যে কেউ শিশুটির নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

বাসার ঠিকানা ও বাসার ছবি

অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় চেক ইন দিয়ে বা অন্য প্রসঙ্গে নিজের বাসার ঠিকানা জানিয়ে দেন বা এমনভাবে ছবি পোস্ট করেন যে ঠিকানা বোঝা যায় এবং বাসার খুঁটিনাটি আরও অনেক কিছুই বোঝা যায়। নিরাপদে থাকতে এটিও এড়িয়ে চলতে হবে।

বর্তমান বা আগের কর্মক্ষেত্র নিয়ে বিরক্তি

কর্মক্ষেত্র নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরক্তি বা অসন্তোষ প্রকাশ করা একেবারেই অপেশাদার আচরণ। কর্মক্ষেত্রের সমস্যা সেখানেই শেয়ার করতে চেষ্টা করুন এবং সমাধানের চেষ্টা করুন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে কথা বলা অপ্রয়োজনীয়। এ ছাড়া, অফিস কর্তৃপক্ষের নজরে পড়লে আপনাকে ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে। চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পরও কর্মক্ষেত্রের ওপর অসন্তোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখবেন না। সম্ভাব্য নিয়োগদাতাদের চোখে পড়লে আপনার সম্পর্কে তাদের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে।  

পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যা

অনেকেই ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের চাওয়া-পাওয়ার নানা হিসেব, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যা, বিবাদ, দ্বন্দ্ব ইত্যাদি শেয়ার করে থাকেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এই কাজটি করলে মানুষ আপনার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে ভালো ধারণা পাবে না। ভবিষ্যতে নিজেই হয়তো বিব্রত হবেন। তা ছাড়া, সেখান থেকে কোনো ভালো সমাধানও পাবেন না। ব্যক্তিগত সমস্যা যত কম সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করবেন তত ভালো। এসব বিষয় নিয়ে কাছের বন্ধু, পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে হালকা হতে পারেন বরং। 

বেড়াতে যাওয়ার আগে বিস্তারিত তথ্য

কোথাও বেড়াতে গেলে কয়দিনের জন্য যাচ্ছেন, বাসা ফাঁকা থাকবে কি না, বেড়ানোর সময় কোথায় বা কোন হোটেলে অবস্থান করছেন-এত বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করবেন না। ফিরে এসে তারপর না হয় বললেন। এতে বিপদ ও বিড়ম্বনার আশঙ্কা থাকে না।

ব্যক্তিগত ডকুমেন্ট

ব্যাংকের তথ্য, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, এনআইডি, পাসপোর্ট, অফিসের আইডি কার্ড, দলিল এগুলোর ছবি যেন ভুলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত না হয়ে যায় খেয়াল রাখবেন।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Public Service Act: Ordinance out amid Secretariat protests

The government last night issued an ordinance allowing dismissal of public servants for administrative disruptions within 14 days and without departmental proceedings.

8h ago