ফরিদপুর

দোকানিকে থানায় নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে এএসআই প্রত্যাহার

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আব্দুর রব। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে সিগারেটের প্যাকেট বদলে না দেওয়ায় এক দোকানদারকে থানায় নিয়ে আটকে বেদম নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ৩ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শিমন খানকে চরভদ্রাসন থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশের এই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে ফরিদপুর পুলিশ লাইনসে যুক্ত করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী দোকানদার আব্দুর রব মোল্লা (৩৫) বর্তমানে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি সদরপুর উপজেলার আকটের চর ইউনিয়নের ডাঙ্গী এলাকার আব্দুল বারেক মোল্লার ছেলে।

আব্দুর রবের ভাষ্য, গত ৮ আগস্ট বিকেলে এএসআই শিমন চরভদ্রাসন উপজেলার সামনে অবস্থিত তার দোকানে গিয়ে কুড়ি শলাকার বড় এক প্যাকেট সিগারেট বদলে দশ শলাকার করে দুটি ছোট প্যাকেট দিতে বলে। কিন্তু দোকানে ছোট প্যাকেট না থাকায় তিনি সিগারেটের প্যাকেট বদলে দিতে পারবেন না বলে জানান। সেই সময় তাকে পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান এএসআই শিমন। পরদিন ৯ আগস্ট দুপুর ১টার দিকে এএসআই শিমন, এসআই ইব্রাহিম ও তাদের সঙ্গে থাকা সাব্বির নামে এক ব্যক্তি তার দোকানে গিয়ে মারতে মারতে তাকে বের করে চরভদ্রাসন থানায় নিয়ে যান। এরপর থানার গারদে আটকে তারা তার ওপর নির্যাতন চালায়। তাকে রোলার ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।

'পরে স্থানীয় বিশিষ্ট এক ব্যক্তি থানায় গিয়ে আমাকে নিয়ে আসে', বলেন তিনি।

এ ঘটনার একটি সিসি ফুটেজে দেখা গেছে, চরভদ্রাসন থানার এএসআই শিমন খান, এসআই ইব্রাহিম ও সাব্বির নামে তাদের এক সহযোগী চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থিত আব্দুর রব মোল্লার একটি ফাস্টফুড দোকানে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে তারা দোকানদার রব মোল্লাকে মারতে মারতে বের করে নিয়ে যায়।

আব্দুর রবের স্ত্রী সাবিনা বেগম বলেন, 'এ ঘটনার পর আমাদের দোকানের ছেলেটি আমাকে ফোন দিয়ে বলে, ভাবি আপনাকে থানায় ডাকে। থানায় গিয়ে দেখি আমার স্বামীকে আলাদা একটা রুমে আটকে রেখেছে। সেখানে পৌঁছে দেখি, আমি থানায় যাওয়ার আগেই তারে অনেক মারধর করছে। তিনি চেয়ারে বসা ছিলেন, উঠতেও পারছিলেন না, এমনভাবে মেরেছে। সাধারণ একটা মানুষের সঙ্গে এমন করেছে। আমরা এর বিচার চাই। অসহায় মানুষের সঙ্গে এরকম করবে কেন?'

জানতে চাইলে এসআই শিমন খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই দোকানদার বেয়াদবি করেছিল।' তাকে মারধর করেননি দাবি করে তিনি আরও বলেন, 'ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে তা মীমাংসা হয়ে গেছে।'

এ বিষয়ে চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা সাংবাদিকদের বলেন, 'এ ঘটনার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে আজ সন্ধ্যায় এএসআই শিমন খানকে চরভদ্রাসন থানা থেকে প্রত্যাহার করে ফরিদপুর পুলিশ লাইনসে ক্লোজ করা হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English
EU helping Bangladesh to strengthen border security

EU recommends revising ICT's legal framework in line with int'l standards

EU also underlined the importance of ensuring due process at all stages of proceedings to ensure justice

48m ago