বাবাকে হারিয়ে পাওয়া রিকশার জন্যই প্রাণ গেল কিশোরের

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

বাবাকে হারানোর পর সংসারের হাল ধরার মতো আর কেউ ছিল না। তাই আত্মীয়-স্বজনরা মিলে কিশোর হুসাইন ব্যাপারিকে ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা কিনে দিয়েছিলেন জীবিকা নির্বাহের জন্য। সেই রিকশার জন্যই জীবন দিতে হলো ১৩ বছরের এই ছোট্ট প্রাণকে।

আজ শুক্রবার সকালে ফরিদপুর শহরের ভাটি লক্ষ্মীপুর এলাকার একটি মাদ্রাসার পাশ থেকে হুসাইনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, রিকশাটি ছিনতাইয়ের জন্য দুর্বৃত্তরা হুসাইনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।  

নিহত হুসাইনের বাড়ি শহরের চর টেপাখোলা ব্যাপারীপাড়া মহল্লায়। হুসাইনের চাচাতো ভাই ওবায়দুর রহমান (৩৫) বলেন, এক সপ্তাহ আগে কার বাবা খোকা ব্যাপারি মারা যান। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে হুসাইন ছিল সবার ছোট। বোনদের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় হুসাইন মা শেফালি বেগমকে নিয়ে একাই থাকত। রিকশা চালানোর আয় দিয়ে চলত মা-ছেলের সংসার। এখন একমাত্র উপার্জনক্ষম ও বেঁচে থাকার অবলম্বন ছেলেটিকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন হুসাইনের মা।

হুসাইনের স্বজনরা বলছেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে বাসা থেকে রিকশা নিয়ে বের হয় সে। রাতে বাড়িতে না ফিরলে তার খোঁজে এলাকায় মাইকিংও করা হয়। আজ সকালে ভাটি লক্ষ্মীপুরের মহিলা মাদ্রাসার পাশে হুসাইনের পড়ে থাকা মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা।

এলাকার শোকাহত বাসিন্দারা বলছেন, গলায় দড়ি পেঁচিয়ে হুসাইনকে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে। একটি রিকশার জন্য এমন একটি তাজা প্রাণ ঝরে যাওয়ার বিষয়টি মানতে পারছেন না তারা।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক সনাতন কুমার মন্ডল জানান, ময়নাতদন্তের জন্য হুসাইনের মরদেহ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, 'এই হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের পাশাপাশি সিআইডিও কাজ করছে। আশা করছি দ্রুতই জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Yunus opens second round of talks to strengthen national unity

'Beautiful July Charter' would be unveiled following discussions, he says

3h ago