নরসিংদীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ৭, আটক ২
নরসিংদীর আলোকবালীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এসময় তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ২নং ওয়ার্ড সভাপতি হাসান আলী ও একই ইউনিয়নের বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জয়নাল আবেদিনের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এ ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- হালিম মিয়া (৫০), হারুন মিয়া (২০), মাসুদ রানা (২৪), আল আমিন (৩০), নাহিদ সরকার (২২), সাকিব সরকার (২৪), শফিউল্লাহ (৩৫)। তারা সবাই আলোকবালীর খোদাদিলা গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় আটককৃতরা হলেন- নাজমুল ইসলাম (২০) ও আল আমিন (৩০)।
জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ রয়েছে আলোকবালী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের ২ নং ওয়ার্ড সভাপতি হাসান আলী ও ইউনিয়ন শাখা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী জাকির হোসেনের সাথে একই ইউনিয়নের ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে।
পুলিশ বলছে, জাকির হোসেন ও জয়নাল আবেদিনের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
জানতে চাইলে আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ২ নং ওয়ার্ডের সভাপতি হাসান আলী বলেন, 'গতকাল বুধবার জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে আমার কয়েকজন কর্মী অংশগ্রহণ করায় গতকাল রাত ১০টার দিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জয়নাল ও তার ভাই আল ইসলাম (৩৫), কর্মী আল আমিন (৩০) ও কুতুব উদ্দিন (৩৬) তাদের মারধর করেন। এই ঘটনার পর আজ ভোরে বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী জাকির হোসেন ও আওয়ামী লীগের কর্মী শহীদ মিয়া ও আমার বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। আমার তিন কর্মী হালিম, হারুন ও মাসুদকে টেটাবিদ্ধ করা হয়।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, পাশের গ্রাম নিলক্ষা থেকে আমার ভাগিনা নাজমুল ইসলাম (২০) মেহমান হিসেবে বেড়াতে এসেছিল। কিন্তু তারা তাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদিনকে সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে একাধিকার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষষে সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক রুবেল আহমেদ বলেন, 'আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি ভোরবেলা আমাদের লোকজনের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করে ও চার জনকে গুলি করে আহত করে জাকির ও হাসান আলী গ্রুপের লোকজন। আমরা চাই প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যেন নেয়। বিএনপির লোকজন আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচিতে বাধা দেয়নি।'
আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাদ উল্লাহ বলেন, 'তাদের নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব লেগে আছে দীর্ঘ দিন ধরে। এখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে, যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের সাথে কথা বলে সমাধান করে দেয়ার চেষ্টা করছি।'
নরসিংদী সদর থানার উপপরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, 'সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। ২ জনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।'
Comments