পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলে প্রচার করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলে একটি মহল 'অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে' বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ রোববার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, 'মিডিয়ার কিছু অংশ ও কিছু ব্যক্তিত্ব বিএনপির সংস্কার সম্পর্কে বিভিন্ন রকম কথা বলছেন যেগুলো সঠিক নয়। বিএনপির কমিটমেন্ট টু রিফর্মস। বিএনপি হচ্ছে সেই দল যারা ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়ার ভিশন-২০৩০ এ সংস্কারের কথা বলেছিল। বিএনপি ২০২২ সালে ২৭ দফা এবং অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করে ২০২৩ সালে ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি আমরা দিয়েছে।'
'আমরা আন্তরিক বলেই ৩১ দফা নিয়ে সারা দেশে অসংখ্য প্রোগ্রাম করেছি। আজকে একটা মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলে প্রচার করা একটা অপচেষ্টা চালাচ্ছে,' যোগ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'একটা গোষ্ঠি বিএনপিকে ভুলভাবে চিত্রিত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। জনগণ এতে সাড়া দিচ্ছে না। বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সংগঠন করার স্বাধীনতা, সংসদীয় গণতন্ত্র—এমনকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মেনে নিয়ে তিনটি নির্বাচন করেছে বিএনপি। সব কিছুই সংস্কারের মাধ্যমে বিএনপি করেছে।'
তিনি আরও বলেন, 'ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিএনপি সম্পর্কে বিরুপ মনোভাব সৃষ্টি করার চেষ্টাতে লাভ হবে না। কারণ বাংলাদেশের মানুষ বিএনপিকে চেনে, বাংলাদেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে থেকেছে।'
নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, 'নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায়, তারা নিশ্চয়ই গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়, তারা নিশ্চয়ই জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পক্ষের শক্তি নয়।'
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে বলেন, 'এ ব্যাপারে আমরা অনেক আগে আমাদের মতামত দিয়েছি। তারপর সরকার বলেছে তারা দায়িত্ব নিয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা কিছু আনেনি। 'আমরা যেকোনো সময়ে যেকোনো ব্যাপারে আলোচনায় সবসময় ছিলাম, এখনো আছি। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।'
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমরা পরিস্কার করে বলেছি—আমরা মনে করি যে, জনগণ নির্বাচন চায়। যেটা আলোচনা হয়েছে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের। আমরা আশা করি যে, সেই লক্ষ্যেই দেশ এগিয়ে যাবে।'
সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, দেশে যেন নতুন করে কোনো স্বৈরাচারের উৎপত্তি না হয়, ফ্যাসিজমের কোনো উৎপাদন ব্যবস্থা না থাকে সেজন্য পৃথিবীর কোনো দেশে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারিত করার কোনো নজির নেই। এ সত্ত্বেও আমরা বলেছি, বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের কমিটি স্ট্যান্ডিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রীর আসনে বহাল থাকবে না।'
'আমরা বলেছি, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নির্বাহী বিভাগকে কার্যকরভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে তার কোনো পরিধির মধ্যে অন্য কোনো অর্গান এবং অন্য কোনো বডি সৃষ্টি করে যেন প্রধানমন্ত্রীর কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত না করে সেজন্য আমরা এনসিসি জাতীয় কোনো ধারণার সঙ্গে একমত হইনি,' বলেন তিনি।
তিনি বলেন, 'আমরা আশা করি আমরা একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব। আলাপ-আলোচনা হচ্ছে, তবে দীর্ঘ আলোচনা কাম্য নয়। সবার সঙ্গে আলোচনা করে খুব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো, সাংবিধানিক বিষয়গুলোতে ঐকমত্যে আসা যাবে, আমরা আশাবাদী।'
Comments