চলে গেলেন মিলান কুন্ডেরা

১৯৭৩ সালে মিলান কুন্ডেরা ও তার স্ত্রী । ফাইল ছবি: এএফপি
১৯৭৩ সালে মিলান কুন্ডেরা ও তার স্ত্রী । ফাইল ছবি: এএফপি

'দ্য আনবিয়েরেবল লাইটনেস অব বিয়িং' বইয়ের লেখক চেক সাহিত্যিক মিলান কুন্ডেরা (৯৪) মারা গেছেন।

আজ বুধবার মিলান কুন্ডেরা লাইব্রেরির মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।

মুখপাত্র এএফপিকে বলেন, 'দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমি নিশ্চিত করছি যে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মি. মিলান কুন্ডেরা গতকাল (মঙ্গলবার) মারা গেছেন।'

কুন্ডেরার স্যাটায়ার ও কবিতার মতো গদ্য লেখনী জীবনের বিভিন্ন চিত্তাকর্ষক দিককে পাঠকের সামনে উন্মোচন করেছে। ভিন্নমত প্রকাশের জন্য তিনি চেক নাগরিকত্ব হারিয়েছিলেন। এ অভিজ্ঞতার বিষয়টি তার লেখনীকে প্রভাবিত করেছে।

তার সমালোচনামূলক গ্রন্থ 'আর্ট অব নোভেল (১৯৮৬)' এ তিনি জীবন সম্পর্কে বলেন, '(এটি) একটি ফাঁদ, যা আমরা সব সময়ই জেনে এসেছি: আমাদের সম্মতি না নিয়েই আমাদের জন্ম দেওয়া হয়, আমরা এমন এক দেহে আটকা পড়ি যা আমরা নিজেরা পছন্দ করে বাছাই করিনি এবং আমাদের একমাত্র নিয়তি হচ্ছে অবধারিত মৃত্যু।'

১৯২৯ সালে তৎকালীন চেকোস্লোভাকিয়ার বেরনো শহরে জন্ম নেন কুন্ডেরা। তার বাবা ছিলেন একজন প্রখ্যাত পিয়ানোবাদক।

তিনি প্রাগে পড়াশোনা করেন। সে সময় তিনি সমাজতান্ত্রিক দলে যোগ দেন এবং ফরাসি কবি অ্যাপোলিনেয়ারের কবিতা অনুবাদ করার পাশাপাশি নিজেও কিছু কবিতা লেখেন।

তিনি একটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে পাঠদান করেন। তার ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন পরবর্তীতে অস্কার বিজেতা পরিচালক মিলোস ফোরম্যান।

কুন্ডেরার প্রথম উপন্যাস ছিল 'দ্য জোক'। এই ডার্ক হিউমার ভিত্তিক উপন্যাস ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত হয়। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা নিয়ে লেখা এই উপন্যাস চেকোস্লোভাকিয়ায় নিষিদ্ধ করা হলেও তিনি এ লেখার জন্য খ্যাতি অর্জন করেন।

১৯৭৫ সালে তিনি ও তার স্ত্রী ভেরা ফ্রান্সে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান। সেখানে তারা রেনেঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ বছর সহ-অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৯ সালে তাদের চেক নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়।

তার সবচেয়ে বিখ্যাত লেখা 'দ্য আনবিয়ারেবল লাইটনেস অফ বিয়িং' ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯৮৭ সালে এ লেখার ভিত্তিতে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়। এতে অভিনয় করেন জুলিয়েট বিনোশ ও ড্যানিয়েল ডে-লুইস।

এই উপন্যাসটি নৈতিকতা বিষয়ের ওপর লেখা। এতে ব্যক্তিগত ও সামগ্রিক পর্যায়ে স্বাধীনতা ও আবেগ নিয়ে বলেছেন লেখক।

২০১৩ সালে ১৩ বছর বিরতির পর আবারো নতুন এক উপন্যাস প্রকাশ করেন কুন্ডেরা।

দ্য ফেস্টিভাল অব ইনসিগনিফিকেন্স বইটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া অর্জন করে।

২০১৯ সালে চেক প্রজাতন্ত্র কুন্ডেরার নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয় এবং ২০২৩ সালে তার আদি নিবাস বিরনোতে মিলান কুন্ডেরা পাঠাগার স্থাপিত হয়।

 

Comments

The Daily Star  | English

Tk 2,956 crore earmarked for Election Commission

Of this amount, Tk 2,727 crore has been allocated as revenue budget, while Tk 229 crore was allocated as development budget

18m ago