‘বিক্রি কমায়’ ১ দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কমেছে কেজিতে ২০০ টাকা

কাঁচা মরিচ
কাঁচা মরিচ। ছবি: স্টার

কাঁচা মরিচের দাম ১ দিনের ব্যবধানে প্রতিকেজিতে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। কারওয়ান বাজারে আজ রোববার প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে 'মানুষ কম কিনছেন' এবং আজ থেকে আমদানি করা মরিচ বাজারে ঢুকতে পারে। এসব কারণে মরিচের দাম কমেছে।

কারওয়ান বাজারে গতকাল পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৪৪০ থেকে ৪৫০ টাকায়। আজ সেই মরিচ বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায়। খোলা বাজারে আজ প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়, যা গতকাল ছিল ৬০০ টাকা।

কাঁচা মরিচের পাইকারি বিক্রেতা বকুল দেবনাথ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বিক্রি অনেক কমে গেছে। দাম যখন ৮০ টাকা কেজি ছিল, তখন প্রতিদিন মরিচ বিক্রি করতাম প্রায় ১০ হাজার কেজি। আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত দেড় হাজার কেজিও বিক্রি করতে পারিনি। কাঁচা মরিচ রাখা যায় না। তাই এখন দাম কমিয়ে বিক্রি করছি।'

তিনি বলেন, '২-৩ দিন পর মরিচের দাম এত বেশি থাকবে না। তবে ২০০ টাকার নিচে মনে হয় না মরিচ পাওয়া যাবে। কারণ, এ বছর তাপপ্রবাহের কারণে মরিচের গাছ মরে যাওয়ায় উৎপাদন কম হয়েছে।'

মরিচের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে 'পাইকারদেরও দোষ আছে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'যেখানে থেকে আমরা মরিচ কিনি, সেখানে যখন সরবরাহ কম দেখি তখন প্রায় মরিচ কেনার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। কেউ ৩০০ টাকা কেজি বললে আরেকজন ৪০০ টাকায় কিনে নেন। এটাও দাম বৃদ্ধির একটি কারণ।'

আরেক পাইকারি বিক্রেতা মো. শামসুল হকও দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে পাইকারদের মরিচ কেনার প্রতিযোগিতাকে দায়ী করছেন।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেশের বাজারে বর্তমানে রংপুর, রাজশাহী ও পার্বতীপুরের কাঁচা মরিচ পাওয়া যাচ্ছে। পাইকারদের প্রতিযোগিতা দেখে কৃষকও কম দামে বিক্রি করতে চায় না। ফলে দাম বেড়ে গেছে। তবে গতকালের বাজারের চেয়ে আজকের বাজারে প্রতি ৫ কেজিতে ৩০০-৪০০ টাকা কমেছে। মূলত কম বিক্রি হওয়ার কারণেই দাম কমেছে।'

মরিচ বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ৩০ বছর ধরে শুধু কাঁচা মরিচের ব্যবসা করি। এত বছরেও কোনোদিন এত দামে মরিচ বেচাকেনা করিনি। এই মরিচের দাম ৫০-৬০ টাকা কেজি হলেও কৃষকের লাভ থাকবে।'

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রাসেল আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর ২৮ হাজার ৪১০ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আজ পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ৩৮ দশমিক ৪৪ মেট্রিক টন। আমদানি বেড়ে গেলে মরিচের দাম কমে যাবে।'

'খরা ও অতিবৃষ্টির কারণে মরিচের গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এ বছর উৎপাদন ব্যবহৃত হয়েছে। তাই সরবরাহ কমে যাওয়ায় মরিচের দাম বেড়ে গেছে,' যোগ করেন তিনি।

গতকাল শনিবার বাগেরহাটের বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ছিল ৮০০ টাকা। ঝিনাইদহের শৈলকূপা ও জামালপুরেও ছিল একই দাম। এর বাইরে মরিচ উৎপাদনের এলাকা হিসেবে পরিচিত পাবনার বিভিন্ন বাজারে ৭০০ টাকা, ফরিদপুরে ৭০০-৭৫০ টাকা, চট্টগ্রামে ৬০০-৭০০ টাকা, বগুড়ায় ৪৮০ টাকা, রাজশাহীতে ৫০০-৫৫০ টাকা, রাজবাড়ীতে ৬০০-৬৫০ টাকা, বরিশালে ৬০০ টাকা ও মৌলভীবাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

আজ দ্য ডেইলি স্টারের নিজস্ব সংবাদদাতারা জানান, বাগেরহাটে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি দরে। পাবনায় জাতভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, বগুড়ায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়, ফরিদপুরে ৬০০ টাকায়, রাজবাড়ীতে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০০ টাকায়। ঝিনাইদহের ৫ উপজেলায় কাঁচা বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়। তবে শৈলকূপায় বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়।

কাচা মরিচের দাম শুধু বাংলাদেশে নয়, বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গেও।  গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে প্রতিকেজি কাচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪০০ রুপিতে, বাংলাদেশে মুদ্রায় যা ৩৩০ থেকে ৫৩০ টাকা।

Comments

The Daily Star  | English
ACC finds Nagad corruption evidence

ACC raids Nagad HQ over hiring irregularities

"During the drive, the ACC team found initial evidence of irregularities in the recruitment process"

2h ago