রমজানের আগে আবারো বেড়েছে সবজির দাম, স্বস্তি ছোলাতে

রমজানের আগে আবারো বেড়েছে সবজির দাম
কারওয়ান বাজারে সবজি কিনছেন এক ক্রেতা। ছবিটি গতকাল শনিবার তোলা। ছবি: সুমন আলী/স্টার

রমজানের আগে আবারো বেড়েছে সবজির দাম। ক্রেতা ও বিক্রেতারা বলছেন প্রতি কেজি সবজিতে অন্তত ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। এই দাম আরও কিছুটা বাড়ার আশঙ্কা করছেন সবজি বিক্রেতারা।

অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, ছোলা, চিনি, বেসন, মসুর ডালসহ শুকনো বিভিন্ন পণ্যের দাম রমজান উপলক্ষে বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

গতকাল শনিবার সরেজমিনে কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি সজনে বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুরলতি ১০০ টাকা। প্রতি কেজি করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, পটল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। প্রতি কেজি ক্যাপসিকাম ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আদা প্রতি কেজি ১৬০ টাকায়, রসুন ১৪০ টাকা, পিয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। লাউ প্রতি পিসি বিক্রি হয়েছে আকার ভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মুনিরজ্জামান রুবেলের সঙ্গে। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকার বলছে মুরগির দাম বেশি তাই খাওয়া বন্ধ বরে দেন, দাম কবে যাবে। তারা বলুক কোন জিনিসটার দাম কম। মানুষ খাবে কী।'

এই সময় দোকানদার রুবেলকে সালাদ খাওয়ার জন্য শসা ও গাজর নিতে বলেন। উত্তরে তিনি বলেন, 'ভাত খাওয়ার জিনিস কিনতে পারছি না। আর সালাদ! তরকারির দাম শুনলে এখন ভয় লাগে।'

সবজি বিক্রেতা রনি ডেইলি স্টারকে বলেন, '২ সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি সবজির দাম অন্তত ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। শীতকালীন সবজি শেষ হয়ে যাওয়া এবং অনেক সবজির ক্ষেতে ধান লাগানোর কারণে সবজির উৎপাদন কমে গেছে। সেই কারণে সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম একটু বাড়তি।'

ব্যবসায়ী মো. মামুন বলেন, 'টমেটো, বেগুন, করলাসহ অধিকাংশ সবজি ২ সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে টমেটো কিনলাম ৩০ টাকা আজ কিনলাম ৪০ টাকায়। দাম শুধু বাড়ে, কমে না।'

এই সবজি বিক্রেতা বলেন, 'রমজান উপলক্ষে বেগুন শসা, লেবু, গাজর টমেটো এসব জিনিসের দাম কিছুটা বাড়তে পারে।'

ছোলা। ছবি: সুমন আলী/স্টার

গতকাল প্রতি কেজি সাদা চিনি ১১২ টাকায়, লাল চিনি ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, ছোলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা, খেসারি ডাল ৮০ টাকা, অ্যাংকরের বেসন ৭৫ টাকা এবং বুটের বেসন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়।

প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, ময়দা ৬৫ টাকা। প্যাকেটজাত আটা প্রতি ২ কেজি বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা।

আমিন জেনারেল স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. বাবলু মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রমজান উপলক্ষে ছোলা, চিনি, বেসন এসবের দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বাজারে যথেষ্ট পরিমাণ পণ্য আছে।'

খেজুর। ছবি: সুমন আলী/স্টার

প্রতি কেজি ইরানি মরিয়ম খেজুর বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, সৌদি মরিয়ম ৮৫০ টাকা, মেডজুল খেজুর ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায়। তবে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যেও বিভিন্ন খেজুর পাওয়া যাচ্ছে।

গতকাল বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ৩৫০ টাকা এবং লাল মুরগি ৩০০ টাকায়। দেশি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকায়। প্রতি ডজন মুরগির ডিম (লাল) বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা এবং হাঁসের ডিম ১৮০ টাকায়।

সহিদা বেগম ও রিনা পারভীন শেয়ারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে আসেন। তারা বলেন, 'দুজন মিলে দেড় কেজি ওজনের একটি মুরগি কিনলাম। বাসায় গিয়ে অর্ধেক করে ভাগ করে নেব। মুরগির যে দাম তাতে আর পুরো একটা মুরগি কেনার সামর্থ্য নেই।'

মুরগি বিক্রেতা রনি মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকার যদি বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেয় তাহলে মুরগির দাম কমতে পারে। তাছাড়া কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।'

কারওয়ান বাজারে মাছের বাজার। ছবি: সুমন আলী/স্টার

কারওয়ান বাজারে আকারভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হয়েছে ৩০০-৫০০ টাকায়, শোল মাছ ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৪৫০ টাকায়, টেংরা মাছ ৭৫০-৮০০ টাকায়, রূপচাঁদা মাছ ৮০০-১০০০ টাকায়, চিংড়ি মাছ ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকায়, পাঙাশ ও তেলাপিয়া মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। এ ছাড়া, ইলিশ মাছ ১ হাজার ৩৫০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

মাছ বিক্রেতা মো. রোকন বলেন, 'মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় মাছের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। তাই মাছের বাজারও একটু বাড়তি। প্রতি কেজি মাছের দাম কেজিতে ন্যূনতম ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।'

গতকাল কারওয়ান বাজারে প্রতি বেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৫০ টাকায়, ছাগলের মাংস ৯০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Drug sales growth slows amid high inflation

Sales growth of drugs slowed down in fiscal year 2023-24 ending last June, which could be an effect of high inflationary pressure prevailing in the country over the last two years.

16h ago