বাবার সঙ্গে দূরত্ব কমাতে
ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে স্কুলে যাওয়ার দিনটির কথা মনে পড়ে? বাবা নামের বটবৃক্ষের সঙ্গে ছোটবেলায় সুন্দর সময় কাটলেও একটা সময় গিয়ে একটু দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়। মায়ের সঙ্গে যতটা বন্ধুত্ব গড়ে উঠে, বাবার সঙ্গে অনেকেরই ততটা হয়ে উঠে না।
বাবারা ছুটে চলেন প্রতিনিয়ত। সেই কর্মব্যস্ততা থেকেই হোক, আর যে কারণেই হোক বাবার জন্য আগের মত টান অনুভব করলেও সহজে প্রকাশ করতে পারে না অনেকে। বড় হয়ে যাওয়ার পর এই যে দূরত্ব তৈরি হয়, তা ভাঙার উদ্যোগ কিন্তু চাইলেই নিতে পারেন।
আজ বাবা দিবসে জেনে নিন কীভাবে দূরত্ব আর সংকোচ কাটিয়ে হয়ে উঠবেন বাবার বন্ধু।
প্রথম উদ্যোগটা আপনিই নিন
বাবা সবসময় আগলে রাখলেও হয়তো মুখ ফুটে কখনো ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারেন না। একটু রাশভারি, একটু গম্ভীরই থেকে যান। খুব আপন হয়েও কোথায় যেন সহজ হতে পারেন না। বড় হওয়ার পর তার এ অস্বস্তি আর সংকোচ কাটাতে বড় ভূমিকাটা কিন্তু আপনিই রাখতে পারেন চাইলে। সম্পর্ক সহজ করতে তার সঙ্গে কথা বলুন। তাকে বুঝতে দিন, আপনি দূরত্ব আর সংকোচ কাটাতে চাচ্ছেন। আপনি যে তাকে ভালোবাসেন সেটি যদি সরাসরি বলতে না পারেন, তবে আচরণে বুঝিয়ে দিন।
সময় কাটান একসঙ্গে
প্রতিদিন বাবার সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। দূরে থাকলে ফোনে হলেও গল্প করুন কিছুক্ষণ।সংকোচ ভুলে প্রতিদিনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাবার সাথে আলাপ করতে পারেন।অফিস, রাজনীতি, বন্ধু বা পরিবারের বিষয়ে কথা বলুন তার সঙ্গে। এতে দুজনের বোঝাপড়া বাড়বে। মাঝেমাঝে সময় করে শুধু আপনি আর বাবা ঘুরে আসতে পারেন আশেপাশে কোথাও থেকে। দূরে যেতে না পারলে বিকেলে বাসার পাশেই হাঁটতে হাঁটতে গল্প করতে পারেন দুজন।
বাবার পরামর্শ চান
নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই সুন্দরভাবে নেওয়ার বয়সে হয়তো পৌঁছে গেছেন। এরপরও জীবনের ছোট-বড় বিভিন্ন সমস্যা সংকটে বাবার পরামর্শ নিতে পারেন। শুধু সমস্যা নয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বাবার সঙ্গে আলোচনা করে নিলে যেমন বাবা খুশি হবেন, তেমনি তার অভিজ্ঞ সুপরামর্শ পাওয়া যাবে। বাবা বুঝবেন, পরিণত বয়সে এসেও তার পরামর্শ এবং তিনি আপনার কাছে আগের মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
বাবার প্রিয় কাজে আগ্রহ প্রকাশ করুন
আমরা অনেকেই জানি না বাবার পছন্দের বিষয় কী বা অবসরে তিনি কী করতে ভালোবাসেন। বাবার সঙ্গে বন্ধুত্ব করার জন্য ভালো একটি উপায় হলো তার পছন্দের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করা। তিনি যদি বাগান করতে পছন্দ করেন, তাহলে তার সঙ্গে মাঝেমাঝে বাগানের কাজ করতে পারেন। নতুন গাছ কিনে নিয়ে আসতে পারেন তার পছন্দমতো। গাছের যত্ন নিয়ে কথা বলতে পারেন, এ সংক্রান্ত ভিডিও দেখতে পারেন একসঙ্গে। বই পড়তে ভালোবাসলে মাঝেমাঝে বইগুলো গুছিয়ে রাখা যেতে পারে। তার প্রিয় লেখকের অটোগ্রাফসহ বই উপহার দেওয়া যেতে পারে।
মতের মিল না হলেই দ্বন্দ্ব নয়
এক প্রজন্মের চেয়ে আরেক প্রজন্মের চিন্তাভাবনায় ভিন্নতা থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই বিভিন্ন বিষয়ে বাবার সঙ্গে মতের অমিল হতে পারে। এ বিষয়গুলো নিয়ে যেন দ্বন্দ্ব বা অভিমান তৈরি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তকে আপনার দিকটা বুঝিয়ে বলুন, তার দিকটাও বুঝতে চেষ্টা করুন।
Comments