‘আমার বাবাডারে আইনা দেও কেউ’

সাংবাদিক নাদিমের মায়ের আহাজারি। ছবি: শহিদুল ইসলাম/স্টার

'নাদিম আমার সোনা মানিক। আমার পোলাডা কথা কয় না ক্যা! আমার বাবাডারে আইনা দেও কেউ। আমার পোলাডারে ওই বাবু চেয়ারম্যান মাইরা ফালাইছে....'

সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমের মায়ের আহাজারি যেন থামছেই না।

আজ সকাল ৯টায় জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা শহরের গরুহাটি কাচারিপাড়া গ্রামে নিহত সাংবাদিক গোলাম রব্বানির বাড়িতে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা গেল। সরেজমিনে দেখা যায়, উঠানে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমের মরদেহকে ঘিরে স্বজনদের আহাজারি চলছে। তাদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে আশপাশের এলাকাসহ আকাশ বাতাস। পাশেই বসে দোষীদের বিচার দাবি করে কাঁদছিলেন নাদিমের মা-বাবা, স্ত্রী ও তার ৩ সন্তান।

৬৫ বছর বয়সী আলেয়া বেগম বিলাপ করতে করতে উপস্থিত সবার কাছে সন্তান হত্যার বিচার চাইছেন। কিছুতেই তাঁর কান্না থামছিল না। সেখানে সান্ত্বনা দিতে আসা প্রতিবেশীরাও কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।

এ হত্যাকাণ্ডে বকশীগঞ্জের সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম ওরফে বাবুকে দায়ী করছে সাংবাদিক নাদিমের পরিবার।

নিহত সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম অভিযোগ করে বলেন, 'সংবাদ প্রকাশের জেরে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবু সম্প্রতি নাদিমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এ মামলা গতকাল বুধবার খারিজ হওয়ার পর চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু ক্ষিপ্ত হন এবং লোকজন দিয়ে নাদিমের ওপর হামলা করেন।'

সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিম 'বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম'–এর জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। একই সঙ্গে 'একাত্তর টিভির' বকশীগঞ্জ উপজেলা সংবাদ সংগ্রাহক হিসেবে কাজ করতেন।

গত বুধবার বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় হামলার শিকার হন সাংবাদিক নাদিম। গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

অভিযোগ উঠেছে, সংবাদ প্রকাশের জেরে বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলমের লোকজন তার ওপর হামলা চালিয়েছে।

এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, 'সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে হামলাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। ৬ জনকে আটক করা হয়েছে, বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Prisoners celebrate Eid in unity and harmony at Dhaka Central Jail

Eid prayers for inmates were held at 8:15am inside the prison premises

40m ago