নির্বাচনে ১০ শতাংশ ভোট পান কিনা পরখ করে দেখুন: বিএনপিকে তথ্যমন্ত্রী

হাছান মাহমুদ
হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদ হাছান মাহমুদ আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে পালিয়ে না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, দয়া করে নির্বাচনের খেলা থেকে পালিয়ে যাবেন না। নির্বাচনে আসুন, অংশগ্রহণ করে আপনাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। আপনারা দশ শতাংশ ভোট পান কিনা সেটি পরখ করে দেখুন।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন আমরা ওয়াকওভার চাই না, নির্বাচনী খেলায় আপনারা আসুন, আমরা খেলে বিজয় লাভ করতে চাই, আওয়ামী লীগ খেলে গোল দিতে চায়। কিন্তু বিএনপি খেলা থেকে পালিয়ে যেতে চায়।

শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ ও সাবেক বোয়ালখালী উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল আলমের মৃত্যুতে আয়োজিত শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রী কলেজ মাঠে এই শোক সভার আয়োজন করে।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির এখন দুই ভীতি, একটা হচ্ছে নির্বাচন ভীতি, আরেকটা হচ্ছে মানুষ। সেজন্য বিএনপি মহাসচিবসহ তাদের নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বিশেষ করে মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর বিএনপির মাথা আরও বেশি খারাপ হয়েছে। কারণ এখন বিএনপি আর নির্বাচন প্রতিহত এবং বর্জন করার কথা বলতে পারবে না, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। 

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নাকি আওয়ামী লীগ ১০ শতাংশ ভোটও পাবে না। ১৯৭৯ সালের নির্বাচন সময়ে জিয়াউর রহমান আমাদের ওপর স্টিম রোলার চালিয়েছিল। চট্টগ্রাম শহরে বিএনপির ক্যাডারদের দা কিরিচ আর লোহার রডসহ নামিয়ে দিয়ে মহড়া দেয়া হয়েছিল। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ঠিকমতো ভোট দিতে দেয়া হয়নি। সেই নির্বাচনেও আমরা ৩৩/৩৪ শতাংশ ভোট পেয়েছি। আসলে আগামী নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশগ্রহণ করেন তাহলে তারাই ১০ শতাংশের বেশি ভোট পাবে না। 

বিএনপিকে কেন মানুষ ভোট দেবে প্রশ্ন রেখে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সাড়ে তিন হাজার মানুষ পুড়িয়েছে। তার মধ্যে পাঁচশ জন মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেছে। চার হাজারের মতো গাড়ি পুড়িয়েছে এবং মানুষের সম্পত্তি জ্বালিয়ে দিয়েছে। পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করেছে। বিএনপির এজন্য মানুষের কাছে যেতে ভয়।

বিএনপি এখন ঘাপটি মেরে বসে আছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, তারা আবার বের হয়ে জনগণের ওপর হামলা পরিচালনা করবে। তারা জানে নির্বাচনে জিতবে না, এখন চেষ্টা করবে দেশে গন্ডগোল লাগানোর। গন্ডগোল লাগিয়ে দেশে একটা বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু জনগণ তাদেরকে সেই সুযোগ আর দেবে না।

হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাদের সাথে অন্যদের পার্থক্য আছে। সেই পার্থক্য প্রয়াত মোসলেম উদ্দিন আহমদ ও নুরুল আলমের জীবন সম্পর্কে আলোচনা করি তাহলে আমরা দেখতে পাই। এখন অনেকেই রেডিমেইড নেতা হতে চাই, টাকা দিয়ে রাজনীতি কিনতে চান। আওয়ামী লীগের রাজনীতি কখনো টাকার কাছে বিক্রি হয় না, হবে না এবং বিক্রি হতে দেব না। রেডিমেইড নেতা হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ নয়, সেজন্য হচ্ছে বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টি। সেখানেই হচ্ছে আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টির পার্থক্য।

তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন, অনেক প্রার্থী আসবে নানা ধরনের কথা বলবে, তাদেরকে জিজ্ঞেস করবেন, আমরা যে রাস্তাগুলো করেছি সেগুলোতে গর্ত হলে সেগুলো তারা ভরাট করতে পারবে কিনা? যাদের গর্ত ভরাট করার যোগ্যতা নেই তারা নানা সমালোচনা করে। আমাদের করা রাস্তা দিয়ে ফোরহুইল গাড়ি চালিয়ে গিয়ে বলেন কোনো উন্নয়ন হয়নি। যারা এরকম বলবে তাদেরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে বলতে হবে আগের মতো কাঁদা মাড়িয়ে হেঁটে যাও। বোয়ালখালী উপজেলার উন্নয়নের জন্য আমি সবসময় চেষ্টা করি সহায়তা করার। বোয়ালখালীবাসীর অনেক প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। ভাঙন রোডে কর্ণফুলী নদীর তীরে ব্লক বসানো হয়েছে। রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, মোসলেম উদ্দিন আহমদের অনেক স্বপ্ন ছিল। অন্যতম হচ্ছে কালুরঘাট সেতু। কালুরঘাট সেতু ইতিমধ্যে নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। একনেকের প্রাথমিক স্তর অনুমোদন হয়েছে, চূড়ান্ত অনুমোদনও ইনশাল্লাহ হবে। সড়ক এবং রেল দুটি মিলেই একটি সেতু হবে। কালুরঘাট সেতুর বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। 

নেতাকর্মীদের বিনয়ী হবার অনুরোধ জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়, বিনয়ের কোনো বিকল্প নাই। সমস্ত ভালো কাজ করেও যুবলীগ ছাত্রলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ বা অন্য কোনো অঙ্গ সংগঠনের কয়েকজনের আচরণের কারণে আমাদের সমস্ত সাফল্য ম্লান হতে পারে না। কেউ দলের নাম ভাঙিয়ে দল এবং সরকারের বদনাম করলে দল তাদের দায়িত্ব নেবে না, দলে তাদের কোন জায়গা হবে না।

Comments

The Daily Star  | English

Economic expectations: Did govt fall short?

When an interim government was sworn into office following the ouster of the Awami League regime just 100 days ago, there was an air of expectation that the Prof Muhammad Yunus-led administration would take steps to salvage a scam-ridden financial sector and rescue an ailing economy.

6h ago