‘মানুষ কষ্টে থাকলে গতবারের চেয়ে ১ লাখ বেশি পশু কোরবানি হলো কীভাবে’

ছবি: সংগৃহীত

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা যে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির বিরোধী, সেটির প্রমাণ হচ্ছে অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে যোগদানের বিরোধিতা করে তিনি এটিকে সুবিধাবাদী পদক্ষেপ বলেছেন। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।'

আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুর লেনস্থ বাসভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'গতকাল একটি জনপ্রিয় টেলিভিশনে মির্জা ফখরুল সাহেবের একটি সাক্ষাৎকার আমি শুনছিলাম। তিনি সেখানে বলেছেন, তারা ভিন্ন মাত্রার আন্দোলন শুরু করেছেন এবং গত ১ বছর ধরে তারা কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নন। এটি তার মুখের কথা এবং রেকর্ডেড। তার মানে হচ্ছে, আগে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন— এটি তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন তার বক্তব্যের মাধ্যমেই।'

হাছান মাহমুদ বলেন, 'ব্রিকস হচ্ছে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর একটি জোট। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, সাউথ আফ্রিকা আছে এই জোটে। উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো পৃথিবীর উদীয়মান অর্থনীতির শক্তি। সেই শক্তিকে সবাই সমীহ করে। বাংলাদেশ যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে তা নয়। বাংলাদেশ যেহেতু উদীয়মান অর্থনীতির দেশ, এজন্য তারা বাংলাদেশকে ব্রিকসে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য মর্যাদার ও সম্মানের।'

তিনি আরও বলেন, '১ বছর ধরে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত নয় বলে মির্জা ফখরুল যে কথা বলেছেন সেটিও সঠিক নয়। আপনারা দেখেছেন গত কয়েক মাসের মধ্যে তারা বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে, গাড়ি-ঘোড়া ভাঙচুর করেছে, ঢাকায় দোতলা বাসে আগুন দিয়েছে, চট্টগ্রামের জামালখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণে আমাদের মুক্তি আন্দোলনে যুক্তদের ছবি ভাঙচুর করেছে। মির্জা ফখরুল সাহেব যতই বলুক না কেন, তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যেই আছেন।'

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে, সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হয় না। বিএনপি যখন সরকারে ছিল তারা ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন সরকারের অধীনেই করেছিল। বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা যতই দাবি দিক না কেন, সংবিধানের এক চুলও ব্যত্যয় হবে না।'

'ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জাপানসহ পৃথিবীর অন্যান্য সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, ঠিক সেভাবেই আমাদের দেশে নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী', যোগ করেন তিনি।

এবার আনন্দঘন পরিবেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে, ঈদযাত্রাও নির্ঝঞ্জাট ছিল উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, 'গতবারের চেয়ে এবার প্রায় ১ লাখ বেশি গবাদিপশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে। এ বছর মোট ১ কোটি ৪১ হাজার ৮১২টি গবাদি পশু কোরবানি হয়েছে। গবাদিপশুর সংখ্যা গত বছর ছিল ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি। আর এ বছর কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার। সবমিলিয়ে এ বছর অত্যন্ত ভালো ঈদ উদযাপিত হয়েছে, বিশেষ করে শেষের দিকে গবাদিপশুর দামও কম ছিল।'

তিনি বলেন, 'আজকে দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটির বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে মানুষের কোরবানি করার সামর্থ্য বেড়েছে। সেই কারণে গত বছরের তুলনায় বেশি কোরবানি হয়েছে। মির্জা ফখরুল সাহেবরা গত ৩ দিন ধরে গলা ফাটিয়ে ফেলছেন, দেশের মানুষ এবার কষ্টে আছে। দেশের মানুষ যদি কষ্টে থাকে তাহলে গতবারের চেয়ে ১ লাখ বেশি গবাদি পশু কোরবানি হলো কীভাবে?'

তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশে একটি পক্ষ আছে রাত ১২টার পরে টেলিভিশনের পর্দা গরম করে। অবশ্য তাদের মধ্যে সবাই নয়, বিএনপি এবং তার মিত্ররা দেশে কোনো উন্নয়ন দেখতে পায় না।'

এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'যেসব দেশ ভূ-রাজনীতিতে যুক্ত তারা কী করছে সেটা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়, সেটি আমাদের জিজ্ঞাসাও নয়। নির্বাচন আমাদের দেশে হবে, আমাদের ভোটাররা নির্বাচনের সময় কাকে ভোট দেবে সেটি তারাই ঠিক করবে। সুতরাং তারা কী করছে সেটা নিয়ে আমাদের চিন্তা নেই, মাথা-ব্যথা নেই।'

এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh 2025-26 budget

Budget to shrink amid fiscal strain

Bangladesh’s interim government is preparing to unveil a rare contractionary budget on June 2, driven by a sharp rise in interest payment that is crowding out fiscal space and forcing spending cuts.

13h ago