এই বর্ষায় যেতে পারেন যে ৫ জায়গায়
বর্ষা চলে এসেছে প্রায়। গতানুগতিক ভ্রমণের জায়গাগুলো বর্ষায় ধারণ করে নতুন এক রূপ। ঢাকার বর্ষার রয়েছে নিজস্ব আমেজ। কিন্তু প্রায়ই তা ম্লান হয়ে যায় জলাবদ্ধতা আর যানজটের কারণে। তবে যদি ভাবেন শহর থেকে একটু বাইরে বের হবেন, তবে মিলতে পারে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যের দেখা।
কোথাও ঘুরতে গেলে ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে আমরা সবাই পছন্দ করি৷ আমাদের যদি ফিরে দেখার মতো ছবি না থাকে, বিশেষ করে যদি সেসব ছবি ইন্সটাগ্রাম ফলোয়ারদের সঙ্গে শেয়ার না করি, তবে পুরো ভ্রমণই যেন অপূর্ণ লাগে!
চলুন জেনে নিই এমন কিছু জায়গার কথা, এই বর্ষায় আপনার ইন্সটাগ্রাম ফিডকে আকর্ষণীয় করতে যেখানে তুলতে পারবেন চমৎকার সব ছবি।
বিছনাকান্দি
মেঘালয়ের সেভেন সিস্টার্স থেকে আসা পানির ধারা প্রকৃতিতে অপরূপ দৃশ্য তৈরি করে বিছনাকান্দিতে৷ ২ পাশে পাথুরে পথ এক অপার্থিব আবহ এনে দেয়। সিলেটের অন্যান্য ভ্রমণ-গন্তব্যের মতো বিছনাকান্দিও বর্ষাকালে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে৷ মোহনীয় ঝর্ণার সঙ্গে চমৎকার পানির প্রবাহ শুধু সারাজীবন মনে রাখার মতো অভিজ্ঞতাই দেবে না, ইন্সটাগ্রামের জন্য অসাধারণ কিছু ছবিও দেবে।
নাফাখুম ঝর্ণা
বান্দরবানে পাহাড়ের গহীনে অবস্থিত নাফাখুম ঝর্ণা। বর্ষাকাল এই ঝর্ণায় যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময়। এই সময়েই ঝর্ণাটি তার পরিপূর্ণ রূপে দেখা দেয়। বৃষ্টির কারণে ঝর্ণার পানির প্রবাহ এতটাই বেড়ে যায়, সেই দৃশ্য একবার দেখলে আর ভুলবার নয়। আপনি এই ঝর্ণার এবং ঝর্ণার সঙ্গে নিজের অপূর্ব কিছু ছবি তুলতে পারবেন, তবে সতর্কতার বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন।
কাপ্তাই লেক
নীল পানিতে নৌকায় চড়া মানুষ, পরিষ্কার নীল আকাশ আর বিশুদ্ধ প্রকৃতি - এমন ছবি দেখে আমরা সবাই কম-বেশি ভেবেছি এ যেন ইন্সটাগ্রামের জন্যই তোলা। এমন ছবি তোলার জন্য সবচেয়ে উপযোগী জায়গা হল কাপ্তাই লেক, যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় কৃত্রিম লেক। বর্ষাকালে কর্ণফুলী বাঁধ খুলে দেওয়া হয়, লেকের পানি বেড়ে যায় অনেক। এখানে কায়াকিং, মাছ ধরা, নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো- এমন নানা ব্যবস্থা রয়েছে পর্যটকদের জন্য। লেকের পাড়ে রয়েছে রিসোর্টও, যেখান থেকে লেকের অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। কাপ্তাই লেকে এমন চমৎকার দৃশ্য আর অ্যাক্টিভিটির পাশাপাশি আপনি পাবেন দারুণ সব ছবি।
টাঙ্গুয়ার হাওর
বর্ষাকালের রোমাঞ্চকর অনুভূতি নেওয়ার জন্য সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর একটি অসাধারণ জায়গা। চারদিকে থৈ থৈ পানিতে এ সময় এক শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্যের দেখা মেলে হাওরে। নৌকার ছাদে রাত কাটানো, জোছনায় চাঁদের রূপালি আলোর মোহনীয় রূপ নিশ্চিতভাবেই আপনাকে কিছু নান্দনিক ছবি দেবে, যদি আপনার ক্যামেরা এমন স্বল্প আলোতে ছবি তোলার উপযোগী হয়।
শ্রীমঙ্গল
দিগন্তজোড়া সবুজ চা-বাগানের জন্য পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল। এটি বাংলাদেশের চায়ের রাজধানী হিসেবে পরিচিত। যেহেতু শ্রীমঙ্গলের প্রধান আকর্ষণ চা বাগান, তাই বর্ষাকালে এখানে এলেই সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করা যাবে। তাছাড়া, এখানকার লেক ও বনগুলোও বর্ষাকালে সবচেয়ে সুন্দর রূপ ধারণ করে। শ্রীমঙ্গল একটি উপভোগ্য ও প্রশান্তিদায়ক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দেওয়ার পাশাপাশি কিছু চমৎকার ছবিও দেবে, যার জন্য তেমন কোনো এডিটিংও প্রয়োজন হবে না৷
বর্ষাকালে ভ্রমণ করা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কিছুটা কঠিন এবং দুঃসাধ্য হতে পারে আবহাওয়ার জন্য। তবে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ও সতর্কতার সঙ্গে ভ্রমণ করলে আপনি নিজেকে আবিষ্কার করবেন সবুজ প্রকৃতি আর বিস্তীর্ণ জলাশয়ের মধ্যে, যা আপনার ইন্সটাগ্রাম ফিডে প্রকৃতির ছোঁয়া এনে দেবে।
অনুবাদ করেছেন আনজিলা জেরিন আনজুম
Comments