সরবরাহ সংকটের ‘অজুহাতে’ পেঁয়াজের বাজার অস্থির

পাবনার সুজানগর ইউনিয়নের একটি হাট থেকে গত মাসে তোলা। ছবি: স্টার

দেশে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের বাজার অস্থির। পাইকারি বাজারে ২ দিনের ব্যবধানে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

এজন্য চাহিদার তুলনায় সরবরাহ সংকটের অজুহাত দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। অস্থিরতা কাটাতে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
 
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ স্বাভাবিক হলে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল হবে।
 
দেশের বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী অঞ্চল পাবনার পুস্পপারা হাটের পাইকারি ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার পুস্পপারা হাটে প্রতি মণ পেঁয়াজ ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। রোববার আতাইকুলা হাটে এক মণ পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে ৩ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা দরে। ২ দিনের ব্যবধানে শনিবার থেকে পাবনার পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম হঠাৎ করেই ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।'
 
এর কারণ জানতে চাইলে শ্যামপুর বাজারের সরবরাহকারী পাবনার আড়তদার রবিউল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঢাকাসহ বড় বড় বাজারের বড় পাইকারি আড়তগুলো ইতোমধ্যে খালি হয়ে গেছে। ফলে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে।'

'তবে স্থানীয় বাজারগুলোতে হঠাৎ করেই পেঁয়াজ আনা কমিয়ে দিয়েছেন চাষিরা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ সংকটে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে', বলেন তিনি। 
 
পেঁয়াজ উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাষিদের ঘরে এখনো বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ মজুদ আছে। দাম বাড়তে থাকায় চাষিরা এখনই মজুদ ফাঁকা করছেন না।
 
পাবনার সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি মো. কামরুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ২ বছর পেঁয়াজ চাষ করে আশানুরূপ লাভ হয়নি। এবার বিরূপ আবহাওয়ায় পেঁয়াজের ফলন কম হয়েছে। পেঁয়াজ কাটার খরচ তুলতেই অনেকে হিমশিম খেয়েছেন। সে কারণে অধিকাংশ চাষি পেঁয়াজ মজুদ করেছেন। এখন ভালো দাম পাওয়ায় তারা লাভের আশাবাদী।'
 
তিনি বলেন, 'এ বছর প্রায় ২ হাজার মণ পেঁয়াজ উৎপাদন করেছেন তিনি। এখনো অর্ধেক পেঁয়াজ তার ঘরেই মজুদ আছে।'
 
বাজারের অবস্থা বুঝে চাষিরা পেঁয়াজ বিক্রি করবে বলেও জানান তিনি।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানিকৃত পেঁয়াজ দেশে এলে বাজার স্থিতিশীল হবে।

পেঁয়াজ চাষিরা জানান, বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার জন্য তারা কোনোভাবেই দায়ী নন। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়।

পাবনার অন্যতম শীর্ষ পেঁয়াজ চাষি কামরুজ্জামান বলেন, 'চাষিরা পেঁয়াজের উৎপাদন নিয়ে চিন্তিত থাকলেও পেঁয়াজের বাজার নির্ধারণের ক্ষমতা তাদের নেই। ব্যবসায়ীরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। এখানে চাষিদের কোনো ভূমিকা নেই।'
 
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেশের উৎপাদিত পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় অংশই পাবনায় উৎপাদিত হয়। কৃষকদের ঘরে এখনো উৎপাদিত পেঁয়াজের একটি বড় অংশ মজুদ আছে। ফলে সরবরাহ সংকটের কোনো কারণ নেই।' 

Comments

The Daily Star  | English
Chief Adviser Yunus calls for peace

Yunus condemns attack at Amar Ekushey Boi Mela, orders swift action

In a statement, the chief adviser denounced the violence, emphasising that it goes against the open-minded spirit of the book fair, which honours the language martyrs of February 21, 1952, according to the CA's press wing

3h ago