আমার কোনো এজেন্ট বাড়িতে থাকতে পারছে না: জায়েদা খাতুন

জায়েদা খাতুন
জায়েদা খাতুন। ছবি: স্টার

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। প্রচার-প্রচারণার শেষ দিনে মঙ্গলবার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। তিনি তার ইশতেহারে গাজীপুরকে স্মার্ট ও পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর বাইরে জাহাঙ্গীর আলমের পরিকল্পনা ও মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী তার অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পাদন করার কথাও বলেছেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরের ছয়দানা এলাকায় নিজ বাসভবনে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন জায়েদা খাতুন। সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।

দ্য ডেইলি স্টার: ছেলে জাহাঙ্গীরের প্রার্থিতা বাতিল হওয়া ও এর পর নানা সময় প্রচার প্রচারণায় বাধা তৈরি করার অভিযোগ করেছেন আপনি। শেষ পর্যন্ত নগরবাসীর কেমন সাড়া পেয়েছেন?

জায়েদা খাতুন: প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর আমরা প্রচারণার জন্য ১২ দিন সময় পেয়েছি। এর মধ্যে কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, বাসন, কাউলতিয়া, জয়দেবপুর, পুবাইল, গাছা, টঙ্গি—সব এলাকায় ভোটারদের সহযোগিতা পেয়েছি। কিন্তু আজমত উল্লার নিজস্ব গুণ্ডা বাহিনী বিভিন্ন সময় আমাকে ও আমার সন্তানকে মারার জন্য আমাদের গাড়িতে হামলা করেছে। এর পরও টঙ্গীবাসী আমাকে আপ্যায়ন করেছে। অনেকে হয়ত আমাকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানাতে পারছেন না, তারা নিরবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।

ডেইলি স্টার: নির্বাচনে আপনার সামনে এখন মূল চ্যালেঞ্জ কোথায়?

জায়েদা খাতুন: প্রথমত, আমরা একজন প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার আশা করেছিলাম। এখন দেখা যাচ্ছে প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা গাজীপুর সিটির প্রত্যেক কাউন্সিলরকে ডেকে নিয়ে বলেছে আমার ঘড়ি মার্কায় যেন ভোট না দেয়। এটা তো প্রশাসনের কাজ হতে পারে না। তাদের কাজ ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা।

দ্বিতীয়ত, আমাদের প্রচার-প্রচারণার দায়িত্বে থাকা লোকজন এবং আমাদের প্রত্যেক এজেন্টের বাড়িতে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন গিয়ে হয় তাদের ধরে নিয়ে গেছে অথবা তারা যেন বাড়িতে থাকতে না পারে সেই ব্যবস্থা করেছে। যাদের ধরে নেওয়া হয়েছে তাদেরকে গাজীপুরেই রাখা হয়নি। আশপাশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় তাদের নামে মামলা দিয়ে আটক রাখা হয়েছে। যারাই প্রকাশ্যে আমার নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করছে তাদেরকেই প্রশাসনের লোকজন হুমকি দিচ্ছে।

ডেইলি স্টার: এই অবস্থায় সবগুলো কেন্দ্রে আপনি এজেন্ট দিতে পারবেন বলে মনে করছেন?

জায়েদা খাতুন: আমাদের সব জায়গায় দুই জন করে এজেন্ট প্রস্তুত রাখা আছে। কিন্তু প্রশাসন বা মাস্তানদের অস্ত্রের মুখে কেউ তো ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে গিয়ে জীবন দেবে না। ভোট দিতে পারা একজনের অধিকার। কিন্তু এখানে যদি গায়ে হাত তোলা হয় বা প্রশাসন সহযোগিতা না করে তখন এজেন্টের পক্ষে ভেতরে থাকা খুব কঠিন।

ডেইলি স্টার: এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার আশঙ্কা করছেন?

জায়েদা খাতুন: এই আশঙ্কা সব কেন্দ্রেই আছে। সব জায়গায় তারা বলে দিচ্ছে ঘড়ি মার্কার কোনো এজেন্ট যেন ঢুকতে না পারে। তাদের মাস্তান বাহিনী এটা প্রকাশ্যে বলছে। প্রশাসন তাদের সহযোগিতা করছে।

ডেইলি স্টার: আপনি বলতে চাইছেন প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দল—দুই দিক থেকেই আপনাকে চাপে রাখা হচ্ছে।

জায়েদা খাতুন: তারা প্রতিদিনই চাপ দিচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমাদের সাধারণ সমর্থক এবং যারা দায়িত্ব নিয়ে আমাদের পক্ষে কাজ করছেন, তাদেরকে খুবই হেনস্তা করা হচ্ছে। তারা কোনোভাবেই বাসায় থাকতে পারছেন না। তাদের যখন তখন তুলে নেওয়া হচ্ছে।

ডেইলি স্টার: ভোটারদের প্রতি আপনার কী আহ্বান।

জায়েদা খাতুন: আমরা প্রতিবাদ হিসেবে ভোট করছি। আমার সন্তানের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে, আমার নগরের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে। এই শহরের ক্ষতি করার জন্য তারা নতুন পরিকল্পনা সাজিয়েছে। সেই ক্ষতিটা যেন করতে না পারে সেজন্য আমি একজন নারী হিসেবে এখানে দাঁড়িয়েছি; একজন মা হিসেবে দাঁড়িয়েছি। এজন্য প্রত্যেক ভোটারের কাছে আমার অনুরোধ, যতই বাধা আসুক সবাই যেন সকাল সকাল তাদের ভোট দেন এবং ভোট গণনা না হওয়া পর্যন্ত যেন সতর্ক থাকেন। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ইভিএম টেম্পারিং বা অন্য কেউ যেন ইভিএমের বোতাম চেপে দিতে না পারে সেই নিরাপত্তা আমি নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে চাই। যিনি সরকার প্রধান তিনি আমাদের নেতা ও আমাদের অভিভাবক। উনার কাছে আমাদের অনুরোধ ভোট যেন সুষ্ঠু হয়। জনগণ কাকে ভোট দেয় সেটা তিনি দেখুক। আমরা উনারই লোক।

 

Comments

The Daily Star  | English

Cyber protection ordinance: Draft fails to shake off ghosts of the past

The newly approved draft Cyber Protection Ordinance retains many of the clauses of its predecessors that drew flak from across the world for stifling freedom of expression.

6h ago