দেশের উদ্দেশে লন্ডন ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে তার ১৫ দিনের বিদেশ সফর শেষ করে আজ সন্ধ্যায় দেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি নিয়মিত ফ্লাইট স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম বাসসকে এ কথা জানান।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান।
ফ্লাইটটি মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
এর আগে ৪ মে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্য (ইউকে) ও অন্যান্য কমনওয়েলথ অঞ্চলের রাজা ও রানি হিসেবে তৃতীয় চার্লস ও তার স্ত্রী ক্যামিলার অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তার ৩ দেশ সফরের তৃতীয় ধাপে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে লন্ডনে যান।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা ৬ মে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানির অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
লন্ডনে শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি এবং তার স্ত্রী সুসানা স্পার্কসও লন্ডনের ক্লারিজ হোটেলে তার বাসভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
প্রধানমন্ত্রী একই দিনে ক্লারিজ হোটেলের ফয়ের প্রাইভেট ডাইনিং রুমে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার কর্তৃক আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেন।
তিনি সেখানে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক এবং রানি জেটসুন পেমার সঙ্গে বৈঠক করেন।
এ ছাড়া শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে মিশর ও রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট, সিয়েরা লিওন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, গাম্বিয়া, নামিবিয়া ও উগান্ডার প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়র এবং কমনওয়েলথ মহাসচিব ব্যারনেস প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ডও ৭ মে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার আবাসস্থলে সাক্ষাৎ করেন।
একই দিনে লন্ডন ম্যারিয়ট হোটেলে যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা দেন এবং তিনি বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকারও দেন।
এর আগে, তিনি তার জাপানি সমকক্ষ ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে জাপানের টোকিওতে তার ৪ দিনের সরকারি সফর শেষ করে ২৯ এপ্রিল তার ৩ দেশ সফরের দ্বিতীয় ধাপে ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছেন।
যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠান এবং কিছু পার্শ্ব ইভেন্টে যোগ দেন, যার মধ্যে রয়েছে—একটি নাগরিক সংবর্ধনার পাশাপাশি মার্কিন ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক, বিশ্বব্যাংকের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গ এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার সঙ্গে একাধিক বৈঠক।
এর আগে, ৩ দেশ সফরের প্রথম ধাপে ২৫ এপ্রিল স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ চার্টার্ড ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি১৪০৩) টোকিওর হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে জাপান বিমানবন্দরে একটি লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার প্রদান করে।
জাপান সফরে তিনি কৃষি, মেট্রো রেল, শিল্প আপগ্রেড, জাহাজ রিসাইক্লিং, শুল্ক বিষয়াদি, মেধা সম্পদ, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, আইসিটি ও সাইবার নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়ে ৮টি চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
২৬ এপ্রিল শেখ হাসিনা জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তারপর একই দিনে তিনি চুক্তি স্বাক্ষরের পর তার জাপানি সমকক্ষ ফুমিও কিশিদার সঙ্গে দ্বিপক্ষী বৈঠক করেন।
প্রধানমন্ত্রী ২৭ এপ্রিল ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ৪ জাপানি নাগরিককে 'ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার' হস্তান্তরের পাশাপাশি একটি বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন এবং একটি কমিউনিটি সংবর্ধনায়ও যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশির পাশাপাশি জাইকা, জেট্রো, জেইবিআইসি, জেবিপিএফএল ও জেবিসিসিইএলের নেতাদের সঙ্গে একাধিক অতিরিক্ত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেন।
তিনি জাপানের প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের স্ত্রী আকি আবে এবং জাপানি স্থপতি তাদাও আন্দোর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।
Comments