টিউলিপের ক্ষমা চাওয়া উচিত: ড. ইউনূস

ড. ইউনুস ও টিউলিপ সিদ্দিক। কোলাজ ছবি: সংগৃহীত
ড. ইউনুস ও টিউলিপ সিদ্দিক। কোলাজ ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পত্তির বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। 

গতকাল শনিবার সানডে টাইমসকে (দ্য টাইমস নামে পরিচিত) দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস  এই মন্তব্য করেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি আরও মন্তব্য করেন, টিউলিপের ক্ষমা চাওয়া উচিত। 

সম্প্রতি কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে টিউলিপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মিত্রদের কাছ থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগ এসেছে।

টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি)। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন তিনি। তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।

টিউলিপের পদত্যাগ চায় কনজারভেটিভ পার্টি

কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি বেইডনক। ফাইল ছবি: রয়টার্স
কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি বেইডনক। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ড. ইউনূসের এই অভিযোগের সূত্রে যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি বেইডনক ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা বলেন, 'কিয়ের স্টারমারের উচিত শিগগির টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করা।'

তিনি অভিযোগ করেন, 'প্রধানমন্ত্রী (স্টারমার) তার বন্ধুকে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন, কিন্তু সেই মন্ত্রী নিজেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত।'

কেমি তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, টিউলিপ এখন সরকারের মনোযোগকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার বিষয়ে পরিণত হয়েছেন।

'সরকারের উচিত তাদেরই তৈরি করা অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর সমাধানে মনোযোগ দেওয়া', যোগ করেন তিনি।

টিউলিপকে বরখাস্ত করার যুক্তি হিসেবে কেমি উল্লেখ করেন, 'তার সঙ্গে শেখ হাসিনার শাসনামলের যোগসূত্র নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের (অন্তর্বর্তী) সরকার।'

নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের আহ্বান টিউলিপের

যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত (ফেসবুক থেকে)
যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত (ফেসবুক থেকে)

ইতোমধ্যে টিউলিপ নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অব মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) লউরি ম্যাগনাসকে একটি চিঠি লিখেছেন তিনি। চিঠিতে মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন টিউলিপ সিদ্দিক।

তিনি লউরি ম্যাগনাসকে লিখেছেন, 'গত কয়েক সপ্তাহে আমি গণমাধ্যমে খবরের বিষয়বস্তু হয়েছি। আমার আর্থিক বিষয় ও বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে আমার পরিবারের যোগসূত্র নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, যার বেশিরভাগই ভুল।'

তিনি আরও লেখেন, 'আমি স্পষ্টভাবে বলছি, কোনো ভুল করিনি। তবে সন্দেহ এড়ানোর জন্য আমি চাই, আপনি স্বাধীনভাবে এগুলো তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করুন।'

ডাউনিং স্ট্রিটের দৃষ্টিভঙ্গি

যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার। বুথ-ফেরত জরিপ বলছে, তিনিই হতে যাচ্ছেন দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার। বুথ-ফেরত জরিপ বলছে, তিনিই হতে যাচ্ছেন দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। ছবি: রয়টার্স

এর আগে ডাউনিং স্ট্রিট নিশ্চিত করেছে, স্যার লউরি এখন একটি 'যাচাইকরণ' (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং) প্রক্রিয়া অনুসরণ করবেন। এ থেকে নির্ধারিত হবে টিউলিপের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত বা অন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে কী না।

শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের এক প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের ঘনিষ্ঠ সূত্রদের বরাত দিয়ে জানানো হয়, টিউলিপ সিদ্দিককে পদত্যাগে বাধ্য করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তার বিকল্প কে হবেন, সে বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের ঘনিষ্ঠরা—এমনটাই দাবি করেছে সংবাদ মাধ্যমটি।

ইতোমধ্যে সিটি মিনিস্টার টিউলিপের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে কয়েকজন প্রার্থীর সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছেন বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Teacher candidates: Water cannons, batons used to disperse protesters

Despite police action, many protesters gathered near the High Court around 4:35pm

9m ago