টঙ্গীর সবুরা মার্কেটে ‘আগুন দেওয়ার’ অভিযোগ ব্যবসায়ীদের
রাজধানীর বঙ্গবাজার এবং নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই গাজীপুরের টঙ্গী বাজারের সবুরা মার্কেটে 'পরিকল্পিতভাবে' আগুন দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
গত ১২ এপ্রিল রাত ৯টা ৫৪ মিনিটে টঙ্গী বাজারের সবুরা মার্কেটের নিচতলার পাইকারি মার্কেটে আগুন লাগে। তবে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে যাওয়ার আগেই দোকানদাররা তা নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হন।
সে সময়ের সবুরা মার্কেটের নিচতলার সিসিটিভি ফুটেজে আগুন লাগার আগে অজ্ঞাত এক যুবককে মার্কেটের রাসেল স্টোরের সামনে ব্যাগ হাতে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।
টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম রোববার দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় মার্কেটের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে আছেন। তারা প্রশাসনসহ সরকারের কাছে নিরাপত্তা কামনা করছেন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মার্কেটের পাইকারি বাজারের ভেতর ব্যাগ হাতে ঘোরাফেরা করছেন সন্দেহভাজন অজ্ঞাত যুবক। কিছুক্ষণ পরই রাসেল স্টোরের সামনে প্লাস্টিকের পণ্যের নিচে হঠাৎ আগুন দেখা যায়।
তখন রাসেল স্টোরের দোকানদার দোকানের সামনের মালামাল সরিয়ে একটি বোতল পান, যেটির ভেতর পেট্রল ছিল। তাৎক্ষণিক আগুন নেভান তিনি। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় এক বোতল অকটেন, ভাঙা ব্যাটারি ও টিস্যু পেপার।
পাশের দোকানের কর্মচারী রাসেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বোতলের ভেতরে পেট্রল ছিল এবং প্লাস্টিকে মোড়ানো বাটন মোবাইল ছিল। ওই মোবাইলের ব্যাটারির সঙ্গে একটি তার টানানো ছিল। দোকানদার যদি না দেখতেন, তাহলে মার্কেটে আগুন লেগে সব পুড়ে যেত।'
মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, 'আমাদের দোকানদারদের চোখে পড়ার কারণে এ যাত্রায় আমরা বেঁচে গেছি। তা না হলে বঙ্গবাজারের এবং নিউমার্কেটের চেয়ে এ মার্কেটে আরও ভয়াবহ আগুন লাগত।'
৩ তলা সবুরা মার্কেটে প্রায় দেড় শতাধিক দোকান আছে। এর মধ্যে কসমেটিকস, প্লাস্টিক ও স্টেশনারি দোকান বেশি। মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে দুষ্কৃতিকারীরা পরিকল্পিতভাবে পাইকারি মার্কেটে আগুন ধরানোর চেষ্টা চালিয়েছিল।
সবুরা মার্কেটের সভাপতি মতিউর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা খুবই আতঙ্কে আছি। আমরা চাই সরকার এবং যারা দায়িত্বে আছেন, তারা যেন এটা কঠোর হস্তে দমন করেন। যদি এক মিনিট বা দেড় মিনিট দেরি হতো, তাহলে এখানে আগুন বড় আকার ধারণ করত। পাশের দোকানের ছেলেরা না দেখলে এ আগুন ধরে গেলে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো না।'
জানতে চাইলে ওসি আশরাফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি আমাদের নজরে যখন আসার পরই আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। শুধু ওই দোকান নয়, আশেপাশের বিভিন্ন ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন অজ্ঞাত ওই যুবককে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।'
'গোয়েন্দা বাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি উদঘাটন এবং যুবককে গ্রেপ্তারে কাজ করছি,' বলেন তিনি।
Comments