মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় ২৩ নাগরিকের উদ্বেগ

মতিউর রহমান ও শামসুজ্জামান শামস
মতিউর রহমান ও শামসুজ্জামান শামস

প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও পত্রিকাটির প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে গভীর রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে একই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ২৩ নাগরিক।

আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এই ঘটনাকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং মুক্ত ও স্বাধীন সাংবাদিকতা দমনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের আরও একটি নজির হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী ড. হামিদা হোসেন, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, নারীপক্ষের সদস্য শিরিন হক, সেন্ট্রাল উইমেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক পারভীন হাসান, আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ শাহদীন মালিক, আইনজীবী জেড আই খান পান্না, আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আইনজীবী সারা হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, ড. শাহনাজ হুদা, ড. আসিফ নজরুল, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, মানবাধিকার কর্মী মো. নূর খান লিটন, আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম, লেখক রেহনুমা আহমেদ, সঙ্গীতশিল্পী ও লেখক অরূপ রাহী, এবং সাংবাদিক ড. সায়দিয়া গুলরুখ।

বিবৃতিতে তারা বলেন, 'আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, সম্প্রতি প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত একটি সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে শামসকে মাঝরাতে তার বাসভবন থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে তাকে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজ ও সমাজের বিভিন্ন মহলের প্রতিবাদকে আমলে না নিয়ে বুধবার মধ্যরাতে একই সংবাদকে কেন্দ্র করে পত্রিকাটির সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেই আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়।'

এই ঘটনায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, 'আমরা মনে করি এসব ঘটনা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং মুক্ত ও স্বাধীন সাংবাদিকতা দমনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের আরও একটি উদ্বেগজনক নজির সৃষ্টি করেছে। কোন সংবাদ এবং সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের ক্ষেত্রে প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ গ্রহণ না করে যেভাবে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে, তা দেশের সাংবাদিকতার স্বাধীন ধারাকে রুদ্ধ করার অসৎ উদ্দেশ্য থেকেই করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান। নিপীড়নমূলক ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনটি বাতিল না করে দেশে সংবাদ মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বারবার হস্তক্ষেপ করার ন্যক্কারজনক ঘটনাগুলোকে ভীতি সৃষ্টির অপপ্রয়াস বলে আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।'

Comments