আইইএলটিএস: ভোকাবুলারির ভয়কে জয়

আইইএলটিএস: ভোকাবুলারির ভয়কে জয়
ছবি: সংগৃহীত

ভোকাবুলারি বা শব্দের ওপর দখল থাকা যেকোনো ভাষা রপ্ত করা কিংবা ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তবে গুরুত্ব যেন শরীরে ভীতির ঘাম না নিয়ে আসে তা মনে রাখা জরুরি। অথবা এটা না ভাবা, অনেক অনেক শব্দ না শিখলে বুঝি ওই ভাষা শেখা হবে না। 

অন্য আরেকটি বিষয় হচ্ছে, ভোকাবুলারির দক্ষতা অর্জন দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। কেউ বলতে পারবে না, আমার ভোকাবুলারি শেখা শেষ। কারণ যেকোনো ভাষার শব্দ ভাণ্ডার একদিকে যেমন বিশাল, অন্যদিকে প্রত্যেকটি ভাষাতেই ব্যবহারের উপযোগী নিত্যনতুন শব্দের আগমন ঘটে বা বিদ্যমান শব্দের নতুন ব্যবহারের দেখা মেলে। 

এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন জনের ডিকশনারি মুখস্থ করার গল্পের কথা বলা যেতে পারে। যেসব গল্পের গায়ে ডাল-পালা লাগিয়ে আমাদের দেশে অনেক অভিভাবককে দেখা যায় বাচ্চাদের ডিকশনারি মুখস্থ করতে চাপ দিতে বা অনুপ্রাণিত করতে। ডিকশনারি মুখস্থ করা কোনো খারাপ দক্ষতা না, বরং বেশ কৌতূহল-উদ্দীপক নৈপুণ্য। 

প্রশ্নের বিষয়, এই দক্ষতার ব্যবহার যদি ডিকশনারি-মুখস্থ গল্প সৃষ্টি করতে হয় আর কেউ কোনো শব্দের অর্থ জিজ্ঞেস করলে তা বলে দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, তবে সেই ব্যবহার কোন কাজে আসছে কি?  

ডিকশনারি মুখস্থ বা অসংখ্য শব্দ শেখা মানেই সেই ভাষার ওপর দখল চলে আসলো, এমনটা না। কারও আস্ত ডিকশনারি মুখস্থ থাকলেও ভাষার ওপর তার দখল ভীষণ দুর্বল হতে পারে, যদি না শব্দের ব্যবহারে সে পারঙ্গম হয়। 

অনেকের কাছে মনে হতে পারে, শব্দ মুখস্থ হলে তা আবার ব্যবহারে আসবে না কেন? নিজদের শেখা বহু শব্দের কয়টা লেখা বা বলায় নিজেরা ব্যবহার করি কিংবা পড়তে গিয়ে শেখা সেসব শব্দ দেখলে ঠিকঠাক অর্থ করতে পারি, সেদিকে নজর দিলেই উত্তর পাওয়া যাবে। 

এ ক্ষেত্রে নিজেদের জানা বা শেখা ভোকাবুলারি বা শব্দ সমাহারকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়- অ্যাকটিভ বা ব্যবহৃত আর প্যাসিভ বা অব্যবহৃত শব্দ (এই ভাগ কোনো নিয়মের বই মেনে করা হয়নি, বোঝানোর স্বার্থে করা হয়েছে)৷ 

ধরা যাক, কারও ৫ হাজার শব্দ শেখা আছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তার বলা, লেখায় এই ৫ হাজারের মধ্যে কয়টা শব্দ সে ব্যবহার করে কিংবা পড়তে এবং শুনতে গিয়ে সে কয়টা শব্দের সঙ্গে সম্পৃক্ততা অর্জন করতে পারে? যে কয়টা পারে সেগুলোই হলো তার ভোকাবুলারি বা শব্দ সমাহারের ব্যবহৃত শব্দ আর ৫ হাজারের বাকি সব শব্দ অব্যবহৃত। 

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কারও শেখা শব্দের সংখ্যা অনেক হলেও ব্যবহৃত শব্দের সংখ্যা বেশ কম। যেখানটায় শেখা অসংখ্য অব্যবহৃত শব্দ একটা সময় ব্যবহারের অভাবে বিলীন হয়ে যায়। তখন পুনরায় ভোকাবুলারি শেখার বাতিক পেয়ে বসে। 

ভোকাবুলারির এমন ব্যবহার ও অব্যবহারের বিষয়টার জন্যই বলা হয়েছিল যে, কারও পাতার পর পাতা ডিকশনারি মুখস্থ থাকলেও সে যদি তার ব্যবহৃত শব্দের সংখ্যা না বাড়ায়, তবে তার ওই মুখস্থের বিষয়টা গল্প আর কেউ কোন অর্থ জিজ্ঞাসা করলে তার উত্তর বলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। 

আবার দেখা যায়, অর্থ বলার বিষয়টা রপ্ত করতে সে হয়তো মুখস্থ করার নির্দিষ্ট কিছু কৌশল প্রয়োগ করে আসছে, সেই কৌশলের বাইরে বা কোন শব্দের একটিই মাত্র অর্থ শেখা হলে, সেই শব্দের বহুমাত্রিক অর্থ জানতে চাইলে, জিজ্ঞাসা করা মাত্রই অর্থ বলে দেওয়ার দক্ষতাও কাজে আসছে না। 

এ ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হচ্ছে, অনেক ভোকাবুলারি জানা নেই বলে নিজেদের ইংরেজির এমন আশাহীন অবস্থা- এই অযাচিত ভয় না পেয়ে বা কাউকে সেই ভয়ে ভীত না করে বরং সর্বপ্রথম জানা থাকা শব্দ সমূহকে ব্যবহারে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা চালানো, তারপর নতুন শব্দ শেখায় মনোনিবেশ করা বা চেষ্টা ও মনোনিবেশে সহায়তা করা। 

আখিউজ্জামান মেনন: আইইএলটিএস প্রশিক্ষক

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

3h ago