‘রুটি-কলা খাইয়াই ৫০ ট্যাকা শ্যাষ, ঘরে কী নিমু’

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাছে রিকশায় বসে ষাটোর্ধ্ব রিকশাচালক মো. খায়রুল ইসলাম পাউরুটি খাচ্ছিলেন। ছবিটি ১৪ মার্চ, মঙ্গলবার তোলা। ছবি: পলাশ খান/স্টার

'মুরব্বিরা কইতো "নুন আনতে পান্তা ফুরায়" বর্তমানে হইলো সেই অবস্থা। বাজারে ৫০০ ট্যাকা নিয়া গেলে তরকারি কিনি এরপরে আর তেল-মরিচ কিনার ট্যাকা নাই। তেল আধা লিটার কিনলেই ১০০ ট্যাকা যায় গা। গরিব মানুষ খাইবো কী?'

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাছে রিকশায় বসে ষাটোর্ধ্ব রিকশাচালক মো. খায়রুল ইসলাম পাউরুটি খাচ্ছিলেন আর এই কথাগুলো বলছিলেন। ঢাকা শহরে এক বছর ধরে রিকশা চালাচ্ছেন তিনি। আগে কৃষিকাজ করতেন। স্ত্রী, দুই সন্তান নিয়ে তার ৪ সদস্যের পরিবার। এখন মোহাম্মদপুরে এক কক্ষের ভাড়াবাসায় থাকেন তিনি।

জানতে চাইলে দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'দৈনিক আয় হয় ৪০০-৬০০ ট্যাকা। রিকশায় জমা দিতে হয় দেড়শ ট্যাকা। খাওয়ায় লাগে দেড়শ ট্যাকা। এই ৩০০ ট্যাকা বাদ দিয়া কামাই করতে হইবো। রুটি-কলা খাইয়াই ৫০ ট্যাকা শ্যাষ। ঘরে কী নিমু! ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করতেছে, অগোরে খাওয়ন লাগতো না? কী খাওয়ামু, কেমনে খাওয়ামু?'

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাছে রিকশায় বসে ষাটোর্ধ্ব রিকশাচালক মো. খায়রুল ইসলাম পাউরুটি খাচ্ছিলেন। ছবিটি ১৪ মার্চ, মঙ্গলবার তোলা। ছবি: পলাশ খান/স্টার

পাশেই রিকশায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন আরেক রিকশাচালক মো. মুকতার হোসেন। তিনি বলেন, 'আগে পুঁই শাকের আঁটি ছিল ১০-১৫ টাকা এখন ৪০-৫০ টাকা। কী খাবেন? আমাদের মতো মানুষের খাওয়ার কী আছে? ওই ডাল-আলু ভর্তা। এই আরকি!'

মুকতার হোসেনের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে। রিকশা চালিয়ে প্রতিদিন ৬০০ টাকার মতো আয় করেন তিনি। খাবার খরচ ও মালিকের কাছে রিকশার জমার টাকা দিয়ে বাসায় নিয়ে ফিরতে পারেন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সংসারের টানাপোড়েন নিয়ে তিনি বলেন, 'আগে ১০০ টাকা নিয়ে বাজারে গেলে মোটামুটি একটা বাজার করে আনা গেছে। এখন ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে গেলে আপনি কী আনতে পারবেন? কিছুই তো আসে না।'

'আল্লাহ ছাড়া দেখার কেউ নাই বাবা। সরকারে আমাদেরকে দিবে না। এখন রেশন কার্ড নিতে গেলে আগে যাচাই করে বিএনপি করে না আওয়ামী লীগ করে। যদি আওয়ামী লীগ করে তো কার্ড দেয়। আমাদের মতো নীরিহ মানুষের জন্য আর কী আছে! বুড়া মানুষ দেখে অনেকে রিকশায়ও উঠে না। বলে—না চাচা আপনার গাড়িতে যাবো না। এই হইলো অবস্থা,' বলেন তিনি।

'দেশের পরিস্থিতি খারাপ। এখন উচিত কথা বলতে গেলে মানুষের গায়ে লাগে। রিকশা চালাই, অতটুক ভাত খাই। এই গরিব মানুষের দুঃখ কষ্ট নিয়ে চলতে হয় আরকি বাবা!'

Comments

The Daily Star  | English

Remittance-rich Sylhet ranks poorest in new index

Long seen as the “London of Bangladesh” for its foreign earnings and opulent villas, Sylhet has been dealt a sobering blow. The country’s first Multidimensional Poverty Index (MPI) has revealed that the division is, in fact, the poorest in Bangladesh when measured by access to education, healthc

5h ago