‘আগামী বছর দেড় ট্রিলিয়ন অর্থনীতির মাইলফলক স্পর্শ করবে বাংলাদেশ’

শেখ হাসিনা
বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

আগামী বছর বাংলাদেশ দেড় ট্রিলিয়ন অর্থনীতির মাইলফলক স্পর্শ করবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ মঙ্গলবার সকালে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বলরুমে বাংলাদেশ ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এই কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য একে একে আমরা অর্জন করছি; দারিদ্র্য হ্রাস, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মাতৃ মৃত্যু-শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, স্বাক্ষরতার হার ও গড় আয়ু বৃদ্ধি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, লিঙ্গ সমতা অর্জনে বাংলাদেশ অসামান্য অর্জন করেছে। এত অল্প সময়ে, মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে আমরা এই অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।'

'আগামী বছর আমরা দেড় ট্রিলিয়ন অর্থনীতির মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছি বলে আমি আশা করি। বর্তমানে জিডিপির আকারে বাংলাদেশ ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। ধারাবাহিকভাবে এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সাল জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি অর্জনের সময়, আমরা তার মধ্যে ২৮তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব বলে আশা রাখি। ২০৩৬ সালে ২৪তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে এটাও আমাদের আশা,' বলেন শেখ হাসিনা।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ব একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। আমরা এই ভূ-রাজনৈতিক সংকটের শিকার হলেও এর জন্য বাংলাদেশ—আমরা কিন্তু মোটেই দায়ী নই। বরং আমাদের কষ্টার্জিত অর্জনগুলো নস্যাৎ করছে এবং আমাদের একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।'

'আমরা সত্যি এই সংকটের তাৎক্ষণিক সমাধানও দেখতে পাচ্ছি না। এটা শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে না। সারা বিশ্বব্যাপী এই সমস্যাটা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো আরও কষ্ট পাচ্ছে। বেশির ভাগ দেশে খাদ্য ঘাটতি, জ্বালানি ও আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। যার ফলে মুদ্রার অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অবক্ষয় এবং মূদ্রাস্ফীতি আরও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটা সংকট সৃষ্টি হচ্ছে,' বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, 'সবচেয়ে গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হলো, এগুলো বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের দরিদ্রতম অংশকে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত করছে। এই সংকটময় সন্ধিক্ষণে আমরা হঠাৎ করে লক্ষ্য করছি যে, অনেক উন্নয়ন অংশীদার সুদের হার বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা বেশির ভাগ প্রকল্পের জন্য উন্নয়ন অর্থায়নকে অর্থনৈতিকভাবে অকার্যকর করে তুলছে।'

একাধিক অর্থনৈতিক ধাক্কার প্রভাব মোকাবিলায় সমন্বয় গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'বৈশ্বিক অর্থনীতির তার স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে না আসা পর্যন্ত সহজ শর্তে অর্থায়ন অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও উন্নত দেশগুলোকে এই বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে। তাদের নজর আমরা চাই। আমরা কারো কাছে কোনো করুণা চাই না, দয়া ভিক্ষা চাই না। আমরা ন্যায্য অধিকার চাই। বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের অংশীদার হিসেবে আমরা আমাদের ন্যায্য হিস্যাই দাবি করছি,' বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, 'একইভাবে আমাদের বৈশ্বিক ব্যবসায়ী অংশীদাররা অপ্রয়োজনীয় বাণিজ্য বিধি-নিষেধ আরোপ করছে, যা সার্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।'

আগামী দিনে এডিবির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।

Comments

The Daily Star  | English

10 die of dengue

886 hospitalised in the last 24 hours

1h ago