ইউক্রেনে পশ্চিমা সেনা এলে পারমাণবিক যুদ্ধ হবে: পুতিন
পশ্চিমা সেনারা ইউক্রেনের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিলে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে বলে হুমকি দিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার যেসব অস্ত্র রয়েছে তা পাশ্চাত্যের লক্ষবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে ন্যাটোর সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর ঝুঁকির ব্যাপারে আগেও কথা বলেছেন পুতিন। তবে এবারই প্রথমবারের মতো তিনি পরিষ্কার ভাষায় পশ্চিমা দেশগুলোকে পারমাণবিক যুদ্ধের ব্যাপারে হুঁশিয়ার করলেন।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ১৯৬২ সালে কিউবায় মিসাইল সংকটের পর থেকে মস্কোর সঙ্গে পাশ্চাত্যের সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। কিউবায় পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনকে কেন্দ্র করে তখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন।
বৃহস্পতিবার রাশিয়ার পার্লামেন্ট সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সামনে দেওয়া ভাষণে পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধকে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ সমস্যা বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, এই যুদ্ধে হস্তক্ষেপ কতটা ঝুঁকিপূর্ণ সেটা পশ্চিমা নেতারা উপলব্ধি করতে পারছেন না।
এর আগে গত সোমবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ইউক্রেনে ন্যাটো জোটের সেনা পাঠানোর প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন। তিনি বলেন, ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্য দেশের সেনাদের ইউক্রেনে পাঠানো যেতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রিটেনসহ অন্যান্য ন্যাটো সদস্য দেশ সঙ্গে সঙ্গে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
পুতিন হুঁশিয়ার করে বলেন, 'আমাদেরও এমন অস্ত্র রয়েছে যেগুলো পশ্চিমা দেশগুলোর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। তাদেরকে অবশ্যই এটা উপলব্ধি করতে হবে। তারা পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি তৈরি করছে, যে যুদ্ধ মানব সভ্যতার অন্ত ঘটাতে পারে। তারা এটা বুঝতে পারছে না?'
আগামী ১৫-১৭ মার্চ রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রায় নিশ্চিতভাবেই পুতিন আগামী ছয় বছরের জন্য পুনর্নির্বাচিত হতে চলেছেন। নির্বাচনের আগে পুতিন তার ভাষণে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র আধুনিকীকরণ কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, রাশিয়া যেকোনো সময় কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য তৈরি আছে। নতুন প্রজন্মের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা নিরীক্ষা ও মোতায়েন থাকার কথাও নিশ্চিত করেছেন পুতিন।
অতীতে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ও দ্বিতীয় বিশ্বজুদ্ধে জার্মানির নাৎসি বাহিনীর ব্যর্থ আক্রমণের উদাহরণ টেনে পুতিন বলেন, 'কিন্তু এবার পরিণাম হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।'
Comments